দেশ বিদেশ

সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কমছে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২৩ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার, ৯:১৭ পূর্বাহ্ন

 রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। তবে দাম কমছে না। বেশিরভাগ সবজির দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকার ওপরে। নতুন সবজির দাম আরো বেশি। এদিকে দাম বাড়ার প্রতিযোগিতায় নাকাল সাধারণ মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

ক্রেতারা বলছেন, বেশিরভাগ সবজির দাম নাগালের বাইরে। গত দেড় মাস ধরে শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলাসহ শীতের আগাম সবজি বাজারে বিক্রি হলেও দাম কমছে না। এর মধ্যে শুধু শিমের দাম কিছুটা কমেছে। তবে এখনও এ সবজির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও পাইকারিতে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে কম দামে বিক্রি করতে পারছেন না তারা। তবে আগামী সপ্তাহে সব সবজির দাম কমবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, দাম বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে শাক সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। অথচ এই সময়ে শাকসবজির দাম কমে আসা স্বাভাবিক। ময়দা প্রতিকেজিতে দাম বেড়েছে ৭ থেকে ৮ টাকা। আটার দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। ডিমের দাম বেড়েছে ডজন প্রতি প্রায় ২০ টাকা। আর এদিকে গত দুই সপ্তাহ থেকেই একটু বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল ও তেল।

বাজারে চীন ও মিসরের পিয়াজের দাম কিছুটা কম হলেও ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে দেশি পিয়াজ। চীন থেকে আমদানিকৃত পিয়াজ বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর মিসরের পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি পিয়াজ একেবারে ফুরিয়ে আসায় দাম একটু বেশি। এদিকে গত দুই দিনে ঢাকার পাইকারি বাজারে পিয়াজের কেজি ১৬০ টাকায় নেমে আসলেও আবারও ২০ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকায় উঠেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, পরিবহন শ্রমিকদের রাস্তা অবরোধের কারণেই দাম বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে বেশির ভাগ সবজি ৫০ টাকার ওপরে। আর ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হয়েছে টমেটো, শসা ও নতুন আলু। বাজারে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০থেকে ১৩০ টাকায়। শসা বিক্রি হচ্ছে একই দামে। আর নতুন আলু ও উস্তে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়।

এদিকে বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন, চিচিঙ্গা, করলা, ধুন্দল, পটল ও মুলা। আর বাজারে গাজর ও বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বাধাকপি ৪০ টাকা ও প্রতিহালি কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। সবজি কিনতে আসা আব্দুল আউয়াল বলেন, যেই সবজির দাম জিজ্ঞেস করি সেটাই বলে ৬০ টাকা ৮০ টাকা। সবকিছুই ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তবুও বাঁচতে হলে তো খেতে হবে।

এদিকে শাক সবজির দাম বাড়ার পেছনে পরিবহন ধর্মঘটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। সবজি বিক্রেতা আবুল কাশেম বলেন, পাইকারি বাজারে শাকসবজির সংকট থাকায় আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

গত সপ্তাহের থেকে সব সবজিতেই প্রায় ৫ থেকে দশ টাকা বেড়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে বাজারে প্রতি কেজি খোলা ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। কিছুদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকা। হঠাৎ করে যেন বেড়েছে ময়দার দাম। প্রতি কেজি আটাতেও দাম বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা। এদিকে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ার পেছনে কানাডা থেকে গম আমদানি কম হওয়াকে দায়ী করেন। কানাডায় গমের দাম বেড়ে গেছে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।

কিছুদিন থেকে বাজারে বেড়েছে চাউলের দাম। টিসিবির হিসেবে বাজারে চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত আর নাজির মিনিকেট সাধারণ মান ৪৮ থেকে ৫৩ টাকায়। উত্তম মানের চাল ৫৩ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। আর মোটা চাল অর্থাৎ স্বর্ণা, চায়না, ইরি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে। অথচ মাসের প্রথম সপ্তাহেও এই মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ২৮ থেকে ৪০ টাকা দরে। এমনকি সরু বা চিকন চাল ছিলো ৪৫ তেকে ৫৬ টাকার মধ্যে। চালের দাম বাড়ার পেছনে কোন যৌক্তিক কারণ দেখছেন না ব্যবসায়ীরা।

এদিকে এ মাসের শুরুতে বেড়েছে সয়াবিন তেলের দামও। প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা। তিন থেকে চার টাকা বেড়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলে। খুচরা বাজারে এখন খোলা সয়াবিন ৮০-৮৪ টাকা ও পাম অয়েল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে। আর বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১০২ থেকে ১১০ টাকায়। এখানেও ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ায় দাম বেড়েছে বলে জানান।
গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। যেখানে গত সপ্তাহে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। সেখানে তা বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। আর প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status