বিশ্বজমিন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন
বিশ্বজুড়ে শিশুদের মধ্যে শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, বাংলাদেশে সবচেয়ে কম
মানবজমিন ডেস্ক
২২ নভেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৩:০৩ পূর্বাহ্ন
বিশ্বজুড়ে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু-কিশোররা পর্যাপ্ত শারীরিক ব্যায়াম করছে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুদের স্বাস্থ্য, বাধাগ্রস্থ হচ্ছে তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ ও সামাজিক দক্ষতা অর্জন। পড়াশোনায় ভালো করার জন্য প্রচণ্ড চাপে থাকায় শিশুদের মধ্যে এমন নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেছে। বিশ্বজুড়ে ধনী-দরিদ্র সকল দেশেই এমনটা দেখা গেছে। এর মধ্যে বিশ্বে এমন নিষ্ক্রিয়তার হার সবচেয়ে কম বাংলাদেশে। তা সত্ত্বেও দেশের অন্তত ৬৬ শতাংশ শিশু-কিশোর, অর্থাৎ প্রতি তিন জনে দুই জন পর্যাপ্ত শারীরিক ব্যায়াম করছে না। সম্প্রতি মেডিক্যাল সাময়িকী ল্যান্সেট চাইল্ড অ্যান্ড এডোলেসেন্ট হেল্থ-এ প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-র এক প্রতিবেদনে এমনটা বলা হয়েছে। ২০০১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১৪৬ দেশের শিশু-কিশোরদের শারীরিক সক্রিয়তা পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে শিশু, কিশোর-কিশোরীরা প্রতিদিন পর্যাপ্ত ব্যায়াম করছে না। এটি একটি সর্বজনীন সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে। ১৪৬ দেশে এই গবেষণা চালানো হয়েছে। শিশুদের শারীরিক চর্চা নিয়ে এটাই প্রথম বিস্তৃত কোনো গবেষণা।
প্রতিবেদন অনুসারে, তুলনামূলকভাবে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের শারীরিক চর্চার হার বেশি। শারীরিক চর্চার ক্ষেত্রে ডব্লিউএইচও এমন সকল ধরনের কাজকর্ম বিবেচনায় নিয়েছে যার মাধ্যমে হৃদস্পন্দন দ্রুত হয় ও শ্বাস নেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। যেমন, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, সাঁতরানো, ফুটবল খেলা, লাফানো ইত্যাদি। প্রতিদিন গড়ে এক ঘণ্টা এধরনের শারীরিক চর্চা আবশ্যক হিসেবে ধরে গবেষণা চালিয়েছে ডব্লিউএইচও।
শিশুদের জন্য নির্ধারিত সময় বেশি কিনা এমন প্রসঙ্গ টেনে ডব্লিউএইচও’র ড. ফিয়োনা বুল বলেন, আমি মনে করি না এটা কোনো হাস্যকর টার্গেট। সুস্বাস্থ্য গঠন ও বিকাশের জন্য এ পরিমাণ চর্চার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে যথাযথ প্রমাণ রয়েছে। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, পর্যাপ্ত শারীরিক চর্চা না করলে শিশুদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি স্বাস্থ্যেরই। কিশোরকালে শারীরিকভাবে স্বক্রিয় থাকলে তা পরবর্তী জীবনে সুস্বাস্থ্য গঠনে সহায়তা করে। স্বক্রিয় বলতে, সুস্থ হৃৎপি-, সুস্থ ফুসফুস, শক্ত হাড় ও পেশি, উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য ও কম ওজন থাকাকে বোঝায়।
ডব্লিউএইচও’র ড. রেজিনা গুথোল্ড বলেন, কিশোরকালে সক্রিয় থাকলে তা পরবর্তী জীবনে হৃদরোগ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস সহ বহু রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। এছাড়া গবেষকরা বলছেন, মস্তিষ্কের বিকাশের ক্ষেত্রেও তা ভূমিকা রাখে। গুথোল্ড বলেন, অল্প বয়সে শারীরিকভাবে স্বক্রিয় থাকা শিশুদের শেখার ক্ষমতা, সামাজিক দক্ষতা অর্জন অন্যান্যদের তুলনায় উন্নত হয়।
পড়াশোনার চাপেই নিষ্ক্রিয়তা
বিশ্বজুড়ে শিশুদের মধ্যে শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার চাপ। ডব্লিউএইচও’র প্রতিবেদনটির এক লেখক লিয়ানে রাইলি বলেন, ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের পরীক্ষার জন্য প্রচুর পড়াশোনার চাপ দেয়া হয়। কঠোর পরিশ্রম করতে বলা হয়। কখনো কখনো লম্বা সময় ধরে তাদের স্কুলে বসিয়ে রেখে ‘হোমওয়ার্ক’ করানো হয়। তারা শারীরিকভাবে সক্রিয় হওয়ার সুযোগই পাচ্ছে না। এছাড়া, নিরাপদ, সহজলভ্য খেলা ও অবসর যাপনের জন্য স্থাপনার অভাবও শিশুদের শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার জন্য দায়ী। পাশাপাশি ফোন, ট্যাবলেট ও কম্পিউটারে ডিজিটাল খেলার উত্থান বাইরে খেলা কমিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।
পিছিয়ে মেয়েরা
প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেছে ফিলিপাইনের ছেলেদের (৯৩ শতাংশ) ও দক্ষিণ কোরিয়ার মেয়েদের (৯৭ শতাংশ) মধ্যে। যুক্তরাজ্যে শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছেলে ও মেয়ের হার যথাক্রমে ৭৫ শতাংশ ও ৮৫ শতাংশ। কেবলমাত্র চার দেশে- টঙ্গা, সামোয়া, আফগানিস্তান ও জাম্বিয়ায় মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে আছে। বৈশ্বিক হিসেবে গড়ে ৮৫ শতাংশ মেয়ে খুবই অল্প পরিমাণে শারীরিকভাবে সক্রিয়। ছেলেদের ক্ষেত্রেই হার ৭৮ শতাংশ।
রাইলি বলেন, সাংস্কৃতিক বিধিনিষেধ ও নিরাপদ স্থাপনার অভাব সহ নানা কারণে মেয়েরা পিছিয়ে রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে শিশু, কিশোর-কিশোরীরা প্রতিদিন পর্যাপ্ত ব্যায়াম করছে না। এটি একটি সর্বজনীন সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে। ১৪৬ দেশে এই গবেষণা চালানো হয়েছে। শিশুদের শারীরিক চর্চা নিয়ে এটাই প্রথম বিস্তৃত কোনো গবেষণা।
প্রতিবেদন অনুসারে, তুলনামূলকভাবে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের শারীরিক চর্চার হার বেশি। শারীরিক চর্চার ক্ষেত্রে ডব্লিউএইচও এমন সকল ধরনের কাজকর্ম বিবেচনায় নিয়েছে যার মাধ্যমে হৃদস্পন্দন দ্রুত হয় ও শ্বাস নেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। যেমন, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, সাঁতরানো, ফুটবল খেলা, লাফানো ইত্যাদি। প্রতিদিন গড়ে এক ঘণ্টা এধরনের শারীরিক চর্চা আবশ্যক হিসেবে ধরে গবেষণা চালিয়েছে ডব্লিউএইচও।
শিশুদের জন্য নির্ধারিত সময় বেশি কিনা এমন প্রসঙ্গ টেনে ডব্লিউএইচও’র ড. ফিয়োনা বুল বলেন, আমি মনে করি না এটা কোনো হাস্যকর টার্গেট। সুস্বাস্থ্য গঠন ও বিকাশের জন্য এ পরিমাণ চর্চার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে যথাযথ প্রমাণ রয়েছে। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, পর্যাপ্ত শারীরিক চর্চা না করলে শিশুদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি স্বাস্থ্যেরই। কিশোরকালে শারীরিকভাবে স্বক্রিয় থাকলে তা পরবর্তী জীবনে সুস্বাস্থ্য গঠনে সহায়তা করে। স্বক্রিয় বলতে, সুস্থ হৃৎপি-, সুস্থ ফুসফুস, শক্ত হাড় ও পেশি, উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য ও কম ওজন থাকাকে বোঝায়।
ডব্লিউএইচও’র ড. রেজিনা গুথোল্ড বলেন, কিশোরকালে সক্রিয় থাকলে তা পরবর্তী জীবনে হৃদরোগ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস সহ বহু রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। এছাড়া গবেষকরা বলছেন, মস্তিষ্কের বিকাশের ক্ষেত্রেও তা ভূমিকা রাখে। গুথোল্ড বলেন, অল্প বয়সে শারীরিকভাবে স্বক্রিয় থাকা শিশুদের শেখার ক্ষমতা, সামাজিক দক্ষতা অর্জন অন্যান্যদের তুলনায় উন্নত হয়।
পড়াশোনার চাপেই নিষ্ক্রিয়তা
বিশ্বজুড়ে শিশুদের মধ্যে শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার চাপ। ডব্লিউএইচও’র প্রতিবেদনটির এক লেখক লিয়ানে রাইলি বলেন, ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের পরীক্ষার জন্য প্রচুর পড়াশোনার চাপ দেয়া হয়। কঠোর পরিশ্রম করতে বলা হয়। কখনো কখনো লম্বা সময় ধরে তাদের স্কুলে বসিয়ে রেখে ‘হোমওয়ার্ক’ করানো হয়। তারা শারীরিকভাবে সক্রিয় হওয়ার সুযোগই পাচ্ছে না। এছাড়া, নিরাপদ, সহজলভ্য খেলা ও অবসর যাপনের জন্য স্থাপনার অভাবও শিশুদের শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার জন্য দায়ী। পাশাপাশি ফোন, ট্যাবলেট ও কম্পিউটারে ডিজিটাল খেলার উত্থান বাইরে খেলা কমিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।
পিছিয়ে মেয়েরা
প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেছে ফিলিপাইনের ছেলেদের (৯৩ শতাংশ) ও দক্ষিণ কোরিয়ার মেয়েদের (৯৭ শতাংশ) মধ্যে। যুক্তরাজ্যে শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছেলে ও মেয়ের হার যথাক্রমে ৭৫ শতাংশ ও ৮৫ শতাংশ। কেবলমাত্র চার দেশে- টঙ্গা, সামোয়া, আফগানিস্তান ও জাম্বিয়ায় মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে আছে। বৈশ্বিক হিসেবে গড়ে ৮৫ শতাংশ মেয়ে খুবই অল্প পরিমাণে শারীরিকভাবে সক্রিয়। ছেলেদের ক্ষেত্রেই হার ৭৮ শতাংশ।
রাইলি বলেন, সাংস্কৃতিক বিধিনিষেধ ও নিরাপদ স্থাপনার অভাব সহ নানা কারণে মেয়েরা পিছিয়ে রয়েছে।