বাংলারজমিন

শিশু হত্যার দায়ে বানরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার থেকে

২২ নভেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ৭:৫৯ পূর্বাহ্ন

জনতার আদালতে রায় হলো বানরটির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার। তাই হলো। বানরটির গুরুতর অপরাধ- দলছুট হওয়ার পর লোকালয়ে এসে তাণ্ডব চালিয়ে ফসল নষ্টসহ হতাহতের একাধিক ঘটনা। তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ পর্যালোচনা করে প্রমাণিত হওয়ায় জনতার আদালতে রায় হয় ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ও পিটিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার। ওই বানরের অযাচিত অত্যাচারে অতিষ্ঠ ক্ষুব্ধ ক্ষতিগ্রস্তরা জনতার আদালতের এমন ফাঁসির রায়ে সন্তুষ্ট হন। রায় ঘোষণার পর পরই ওই সন্ত্রাসী বানরটিকে প্রকাশ্যে জিনজির দিয়ে ঝুলিয়ে ও পিটিয়ে রায় কার্যকর করেন ক্ষুব্ধ দুর্ভোগগ্রস্তরা। চাঞ্চল্যকর এ বিষয়টি এখন জেলাজুড়ে মুখরোচক গল্প। জানা যায়, বড়লেখায় লোকালয়ে তাণ্ডব চালিয়ে এক শিশুকে হত্যা ও ৩০ জনকে আহত করার অভিযোগে এক বন্য দলছুট বানরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। গত মঙ্গলবার সকালে শিশু হত্যাকারী ওই বন্য বানরকে ধরতে ঘুমের ওষুধ মিশানো ভাত খাইয়ে তাকে ওইদিন বিকালেই আটক করা হয়। বানরকে ধরার পর উত্তেজিত জনতা সালিশ বসিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেন। অভিযোগ উঠেছে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা এনামুল হক ইতিপূর্বে এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগী লোকজনকে বানরটি মেরে ফেলার নির্দেশ দেন। যদিও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী যেকোনো বন্যপ্রাণী হত্যা দণ্ডনীয় অপরাধ। জানা যায়, পাথারিয়া পাহাড়ের দলছুট একটি বন্য বানর ১লা নভেম্বর উপজেলার কাঠালতলী এলাকায় লোকালয়ে প্রবেশ করে। বানরটি কাঠালতলী, রুকনপুর, বড়খলা, দক্ষিণ মুছেগুল, উত্তরভাগসহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে দাপিয়ে নানা তাণ্ডব চালায়। সুযোগ বুঝে সে নিরীহ পথচারীসহ শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাতে থাকে। এরই সঙ্গে ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি করতে থাকে। ওই বন্য বানরের হামলায় বড়খলা গ্রামের এক শিশু কন্যার মৃত্যু ঘটে। মসজিদে যাওয়ার পথে ওই শিশুর ওপর হামলে পড়ে বানর। এছাড়াও ওই বানরের আক্রমণে আহত হন শিশু, মহিলাসহ অন্তত ৩০ ব্যক্তি। এরা স্থানীয় হাসপাতালসহ সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান এলাকাবাসী। বানরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ লোকজন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের শরণাপন্ন হলে তিনি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা এনামুল হককে খবর দেন। ১১ই নভেম্বর রেঞ্জ কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বনাঞ্চলে প্রত্যাবর্তনের কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বানরটিকে মেরে ফেলার জন্য ভুক্তভোগী লোকজনকে নির্দেশ দিয়ে যান। আর তখন থেকেই হতভাগা ওই বানরটিকে মেরে ফেলার জন্য ৬-৭ গ্রামের বাসিন্দা ধাওয়া শুরু করে। অবশেষে ১৯শে নভেম্বর ভাতের সঙ্গে অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খাইয়ে নেশাগ্রস্ত করে তাকে আটক করা হয়। উত্তেজিত জনতা বিকাল ৩টার দিকে একটি ধানক্ষেতের চতুর্দিক ঘেরাও দিয়ে লাঠিসোটার আঘাতে অর্ধমৃত করে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরে কাঠালতলী বাজার সংলগ্ন স্থানে শত শত উৎসবমুখর ব্যক্তি সালিশ বসিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিন বানরের মৃতদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় একটি টিলায় কবরস্থ করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status