বিশ্বজমিন

এপস্টেইন কেলেঙ্কারিতে দায়িত্ব ছাড়লেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু

মানবজমিন ডেস্ক

২১ নভেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৬:২৬ পূর্বাহ্ন

বৃটিশ রাজ পরিবারের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের দ্বিতীয় সন্তান ও ডিউক অব ইয়র্ক প্রিন্স অ্যান্ড্রু (৫৯)। মৃত মার্কিন বিলিয়নার ও যৌন নিপীড়নকারী জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ও এক অল্পবয়স্কা কিশোরীর সঙ্গে যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের মধ্যে এমনটা জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, এপস্টেইনের সঙ্গে তার সস্পর্ক নিয়ে সৃষ্ট কেলেঙ্কারি রাজ পরিবারের কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। তাই রাণীর অনুমতি নিয়ে নিজের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। এছাড়া, এপস্টেইনের সঙ্গে তার সস্পর্ক নিয়ে মার্কিন তদন্তকারীদের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এ খবর দিয়েছে দ্য টাইমস।

খবরে বলা হয়, প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে এপস্টেইনের সরবরাহ করা ১৭ বছর বয়সী এক অপ্রাপ্তবয়স্কার সঙ্গে যৌন সস্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ ওঠেছে। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রসঙ্গত, যৌন পাচারের অভিযোগে আটক থাকে এপস্টেইন চলতি বছরের আগস্টে কারাগারের ভেতর আত্মহত্যা করেন। তার মৃত্যুতে অনেক রহস্য অনুদঘাটিত রয়ে যায়। তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সস্পর্ক থাকায় সমালোচনার মুখে পড়েন অ্যান্ড্রুও। এপস্টেইনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন নারী যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনেন। ভার্জিনিয়া জিউফ্রে এমন একজন নারী। তিনি দাবি করেন, অ্যান্ড্রুর সঙ্গে তিন বার যৌন সস্পর্ক স্থাপন করেছেন তিনি। তবে অ্যান্ড্রু সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সমালোচনার মুখে এপস্টেইনের সঙ্গে সস্পর্ক নিয়ে বিবিসিতে একটি সাক্ষাৎকার দেন ডিউক অব ইয়র্ক। তবে তাতে সমালোচনা কমার বদলে বৃদ্ধি পায়। তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও দাতব্য সংস্থাগুলো নিজেদের তার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে। জনমনেও দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। এমতাবস্থায় রাজ পরিবারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।  

স্থানীয় সময় বুধবার ডিউক বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে এপস্টেইনের সঙ্গে আমার অবিবেচনাপ্রসূত সস্পর্ক নিয়ে অনুশোচনা প্রকাশ করছি। তার আত্মহত্যা অনেকগুলো উত্তরহীন প্রশ্ন রেখে গেছে। বিশেষ করে, তার নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের জন্য। আমি তেমন প্রত্যেকের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছি। আমি কেবল এটুকুই আশা করবো যে, সময়ের সঙ্গে তারা তাদের জীবন পুনর্গঠন করতে সক্ষম হবে।

তিনি আরো বলেন, এপস্টেইন নিয়ে তদন্তে প্রয়োজন হলে যেকোনো যথাযথ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সাহায্য করবেন তিনি। এখানে, যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অ্যান্ড্রুর কেলেঙ্কারি বৃটিশ রাজনীতিতেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধান দলগুলো তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় বৃটিশ যুবরাজের কেলেঙ্কারির পক্ষে ও বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

এদিকে, বৃটিশ রাজপ্রাসাদ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাণী ও বড় ভাই প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে আলোচনা শেষে নিজ থেকেই রাজ পরিবারে দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন অ্যান্ড্র। রাজ পরিবারের বাকি সবাই তার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে।  উল্লেখ্য, অ্যান্ড্রু দুই শতাধিক দাতব্য সংস্থার সঙ্গে জড়িত। দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির মানে হচ্ছে, ওই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সাময়িকভাবে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেবেন তিনি। এছাড়া, ভবিষ্যতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রাজ পরিবারের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন। তবে রাজ পরিবারের সদস্য থাকবেন তিনি।

বুধবারের বিবৃতিতে বৃটিশ যুবরাজ বলেন, এটা আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে যে, বিগত কয়েকদিন ধরে এপস্টেইন ও আমার মধ্যকার সস্পর্ক নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি রাজ পরিবারের কর্মকাণ্ডে ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। বিঘ্নিত হচ্ছে আমার সমর্থিত নানা প্রতিষ্ঠান ও দাতব্য সংস্থার কাজকর্মও। তাই আমি রাণীর কাছে আগামী দিনগুলোতে রাজ পরিবারের দায়িত্ব পালন থেকে অব্যাহতির অনুমতি চেয়েছি। তিনি অনুমতি দিয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status