ভারত

বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

কলকাতা প্রতিনিধি

১৫ নভেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, ২:২২ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় কলকাতা পুলিশ বৃহষ্পতিবার এক দম্পতি সহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিন জনের মধ্যে এক জন বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি অবৈধভাবে ভারতে বসবাস করছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সূত্রের খবর, স্ত্রীর জন্য স্বর্ণালঙ্কার কেনার জন্য বসির প্রচুর অর্থ সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন। আর এই স্বর্ণালঙ্কার কেনার জন্য তিনি তার পূর্ব পরিচিত সেলিমের সাহায্য চেয়েছিলেন। সেলিমকে এই কথা জানানোর পরই তিনি মোটা টাকা হাতানোর লক্ষ্যে বসির মিঞাকে অপহরণের ছক কষেছিলেন বলে পুলিশের ধারণা। সেলিমকেই এই অপহরণ পরিকল্পনার মাথা বলে পুলিশ মনে করছে।
বাংলাদেশের ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কাপড়ের ব্যাবসায়ী  বসির মিঞাকে গত ৭ নভেম্বর উত্তর ২৪ পরগণার হাবড়া থেকে অপহরণ করা হয়। দুইদিন পর মুক্তিপণ দিয়ে বশির ও তার বন্ধু ইলিয়াস কোনরকমে পালিয়ে কলকাতায় এসে এন্টালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করেই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর পূর্ব পরিচিত মহম্মদ সেলিমকে দক্ষিন ২৪ পরগণার ক্যানিং থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে জেরা করে হাবড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে শেখ সালাউদ্দিন ওরফে ছালাউদ্দিন এবং তার স্ত্রী নাসিমাকে। সালাউদ্দিনের গুমার বাড়িতেই আটকে রাখা হয়েছিল বসিরকে।

তন্তকারীরা জানায়, ওই চক্রে আরও বেশ কয়েকজন রয়েছে। তাদের সন্ধানে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। বসির অভিযোগ করেছেন, তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। পরে বসিরের বাবা মহম্মদ সিকান্দরকে ফোন করে হাওয়ালা পথে ৬ লাখ টাকা আনিয়ে মুক্তিপণ দিয়ে বসির ছাড়া পেয়েছেন। অবশ্য অপহরণকারীরা একজন দালালের মারফত বসিরকে সীমান্তের ওপারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু বসির চিৎকার করে বিএসএফকে সব বলে দেবে বলে ভয় দেখানোয় দালাল তাকে রেখে সরে পড়েছিল। এই ফাঁকেই বসির ও তার বন্ধু ইলিয়াস কলকাতায় চলে এসেছিল।
বসির অভিযোগ করেছে, অপহরনকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তার কাছে থাকা ৭৫০০ মার্কিন ডলার এবং ৪৫ হাজার রুপি সহ দামি সব জিনিস হাতিয়ে নিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সেলিমের কোনও ঠিকানা দিতে পারেননি অভিযোগকারী। কিন্তু মোবাইলের টাওয়ারের সূত্রে ধরে সেলিমকে ফাঁদ পেতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেলিম বাংলাদেশি নাগরিক হলেও গত ৬ বছর আগে তিনি অবৈধভাবে ভারতে এসে বাসন্তী এলাকায় ঘাঁটি তৈরি করেছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে,  বাংলাদেশি নাগরিকদের মোটা টাকার বিনিময়ে  ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্নদ দেশে শ্রমিক হিসাবে পাঠানোর চক্রের সঙ্গে তিনি যুক্ত। সেলিম ভারতে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভুয়ো নথি তৈরি করে দিতেন।পুলিশের মতে,মুক্তিপণ আদায় করার একটি গ্যাংও চালান সেলিম। এর আগেও তিনি একাধিক বাংলাদেশি ব্যাবসায়ীকে একই কায়দায় আটকে রেখে টাকা আদায় করেছেন। কিন্তু আগে প্রতিবারই তিনি মুক্তিপণ আদায়ের পর সীমান্তে দালালদের দিয়ে চোরা পথে অপহৃত ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দিতেন। ফলে কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি। ধৃত তিন জনকে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে  বিচারক ধৃতদের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status