রকমারি

ফলবতী মাল্টা

শাহ্ মোস্তফা কামাল, শায়েস্তাগঞ্জ থেকে

১৩ নভেম্বর ২০১৯, বুধবার, ১১:১১ পূর্বাহ্ন

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় বিষমুক্ত নিরাপদ মাল্টা বাগানের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। রোগ-বালাই কম থাকায় উৎপাদন বেশি হয়। আর এসব কারণেই দিন দিন এলাকায় মাল্টা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বছর উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে এবং উৎপাদিত মাল্টার খুচরা বাজারমূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা। তবে আগামী বছর কয়েকগুণ বেশি মাল্টা উৎপাদনে আশাবাদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

উপজেলার দেওরগাছ ইউনিয়নের ময়নাবাদ গ্রামের চন্দনা ব্লকের কৃষক শাহনুর রশিদ চৌধুরী তিন বছর আগে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ২২০টি বারি মাল্টা-১ জাতের কলমের চারা নিয়ে ৫০ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন। প্রথম বছর তেমন মাল্টা না হলেও দ্বিতীয় বছর ৫০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেন। এ মৌসুমে ২২০টি মাল্টা গাছে প্রচুর পরিমাণে মাল্টা ধরেছে। বর্তমান বাজারে চীন থেকে আমদানি করা মাল্টা ২০০-২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ ওই মাল্টা তেমন রসালো বা সুস্বাদু নয়। কিন্তু চুনারুঘাটে উৎপাদিত মাল্টা যেমন রসালো, তেমনি সুস্বাদুও। তিন থেকে চারটি মাল্টা ওজনে এক কেজি হয়।

কৃষক শাহনুর বলেন, চীন থেকে আমদানি করা মাল্টায় ফরমালিন থাকে। আর আমাদের উৎপাদিত মাল্টা সম্পূর্ণ নিরাপদ। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকেই মাল্টা নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করেছেন। সর্বনিম্ন ১০০-১২০ টাকা কেজি দরে মাল্টা বিক্রি করলেও আমার এ বছর দেড় থেকে ২ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি হবে। আমি আশা করছি, আগামী বছর আমার বাগানে তিনগুণ মাল্টা উৎপাদিত হবে। তিনি আরও জানান, তার বাগানের উৎপাদিত মাল্টা বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষীরা এসে দেখে যান।

ইতোমধ্যে তার দেখাদেখি এলাকার অনেকেই মাল্টা চাষ শুরু করেছেন। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে চুনারুঘাট থেকে মাল্টা দেশের বাজারসহ বহির্বিশে^ রপ্তানি করা যাবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, সরকার বর্তমানে উচ্চমূল্যের ফসল যেমনÑমাল্টা, কমলা, বারোমাসী তরমুজ ইত্যাদি ফল উৎপাদনের দিকে নজর দিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা আমাদের একটি প্রজেক্ট ছিল ‘শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প, সিলেট অঞ্চল’। সে প্রজেক্টের মাধ্যমে ৫০ শতাংশ জমিতে আমরা একটি মাল্টা প্রদর্শনী দেই। ওই মাল্টা বাগানের গাছগুলোতে বিপুল পরিমাণের ফসল আসছে। উপজেলা কৃষি অফিসার জালালউদ্দিন সরকার বলেন, জেলার মধ্যে মাল্টা উৎপাদনে চুনারুঘাট এগিয়ে। এখানে এ বছর ১০ হেক্টর জমিতে ৪০ মণ মাল্টা উৎপাদন হয়েছে।

তিনি আরও জানান, একটি বাগানে ৫০ শতক জমিতে বছরে তিনবার ধান চাষ করলে লাভ হতো ১৪ হাজার টাকা। কিন্তু একই পরিমাণ জমিতে মাল্টা চাষ করলে লাভ পাওয়া যাবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অন্যদিকে ১০ বছরে একই পরিমাণ জমিতে ধান চাষ করলে আয় হবে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। যেখানে একই পরিমাণের জমিতে মাল্টা চাষ করলে ১০ বছরে আয় হবে অর্ধলাখ টাকার বেশি। ধান চাষ থেকে মাল্টা চাষে লাভবান হওয়া যাবে ১০ বছরে ৪০ গুণ বেশি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status