দেশ বিদেশ
বৈঠকে যাননি মেনন, বক্তব্যের কারণ জানতে চাইবে ১৪ দল
স্টাফ রিপোর্টার
২৩ অক্টোবর ২০১৯, বুধবার, ৯:০৩ পূর্বাহ্ন
সমালোচনার মুখে থাকা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে ছাড়াই অনুষ্ঠিত হলো ১৪ দলের গোলটেবিল বৈঠক। গতকাল রাজধানীতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ-ভারত সমঝোতা স্মারক’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠক হয়। রাশেদ খান মেননকে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের গোলটেবিল বৈঠকে আসতে নিরুৎসাহিত করা হয় বলে একাধিক নেতা জানিয়েছেন। নির্বাচন নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় উপস্থিত নেতকর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে পারেন এমন আশঙ্কা থেকেই তাকে বৈঠকে অংশ না নেয়ার বার্তা দেয়া হয়। তবে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন। জোটের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরীকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার প্রমুখ। আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মুহাম্মদ ফারুক খান, কামরুল ইসলাম বৈঠকে বক্তব্য রাখেন। রাশেদ খান মেননের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তার পার্টির সেক্রেটারি এসেছেন। তিনি কেন আসেননি, তা আমি বলতে পারব না। নির্বাচন নিয়ে মেননের বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ১৪ দল কোনো ব্যক্তির নয়, এটা জোট। তার বক্তব্যের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ১৪ দলের এই গোলটেবিল আলোচনায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে নানা অপপ্রচারের অভিযোগ তোলেন আওয়ামী লীগ নেতারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম মাহবুব গোলটেবিলে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের স্বর্ণ অধ্যায় চলছে এখন। একটি মহল এখনও এ বন্ধুত্বকে বাঁকা চোখে দেখছে। যারা এ বন্ধুত্বকে বাঁকা চোখে দেখছেন, তারা কোনো কিছুই সোজা চোখে দেখেন না। বাংলাদেশে এখন গুজব আর অপপ্রচার চলছে। এসব গুজব ও অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে তথ্য দিয়ে। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, একটি মহল স্বাধীনতার পর জাতির স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে, দেশের স্বার্থ বিলিয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে বলে জিকির তুলে আসছে। কিন্তু তারা বারবার ক্ষমতায় এসেছে, কোনো চুক্তিই বাতিল করেনি। তারা পাকিস্তানের চশমা দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে দেখছে। দেশ লাভবান হয়েছে, অর্থনৈতিক সুবিধা বেড়েছে। পাকিস্তানের চশমা দিয়ে দেখলে এসব চোখে পড়বে না। কামরুল ইসলাম বলেন, একাত্তর সালে যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম, তাদের বিরুদ্ধে এখনও যুদ্ধ করতে হচ্ছে। আগে অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করতে হয়েছে, এখন তাদের গুজব-অপপপ্রচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থ দেখার পাশাপাশি ভারতের মতো প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ পেতেই পারেন। বিএনপি বলছে, বঙ্গোপসাগারে রাডার স্থাপনের মাধ্যমে চীনের উপর নজরদারি করবে ভারত। কিন্তু এ রাডারের মালিকানা বাংলাদেশের, যা দিয়ে আমরা সমুদ্রসীমার উপরে কঠোর নজরদারি রাখতে পারব। আলোচনায় অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিরোধী মহলের কাছে ভারত বিরোধিতা তুরুপের তাস। তারাই ক্ষমতায় থাকলে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করে। সুতরাং তাদের এসব বক্তব্যকে গুরুত্ব দেয়ার কোনো কারণ নেই।