এক্সক্লুসিভ

আদালতে সাদাত

‘স্যার, আমি আবরারকে ডেকে আনি’

স্টাফ রিপোর্টার

১৭ অক্টোবর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যার আগে রুম থেকে ডেকে এনেছিলো নাজমুস সাদাত। পরবর্তীতে ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতারা একের পর এক আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে। আবরারকে মারধরে সাদাত অংশ নেয়নি বলে দাবি করেছে। গতকাল রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে আসামি এ এস এম নাজমুস সাদাতের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাবায় বিচারক জানতে চান তার কিছু বলার আছে কি না? এসময় বিচারকের প্রশ্নের উত্তরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলার আসামি এ এস এম নাজমুস সাদাত এসব কথা বলেন। সাদাত বলেন, স্যার, আমি বড় ভাইদের কথায় আবরারকে তার রুম থেকে ডেকে আনি। পরে বড়ভাই অনিক, সকাল, মুজাহিদ, রবিন ও মনির রুমের মধ্যে আবরারকে দফায় দফায় মারে। এক সময় স্ট্যাম্প দিয়ে আবরারকে প্রচন্ড পেটাতে থাকে অনিক। তখন রুমে উপস্থিত অন্যরা ভয় পেয়ে যায়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আবরারকে পেটায় অনিক। তার মারের পরই আবরারের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আবরার পানি খাইতে চাইলে পানি দেয়া হয় নাই। আমরা ভাইদের বলেছিলাম হাসপাতালে নিয়ে যেতে, ভাইরা নিতে দেয় নাই। আবরার বমি করে। আমি আবরারকে মারিনি। আমি রাত সাড়ে ১২টার দিকে রুম থেকে চলে আসি। এরপর কী হয়েছে আমি জানি না। পরে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোর্শেদ আল মামুন ভূইয়া তার পাঁচ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান আসামি সাদাতকে আদালতে হাজির করেন। তিনি সাদাতের ১০ দিন রিমান্ডের আবেদন করেন। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আবরার হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ১৫ নম্বর আসামি সাদাত। এই হত্যাকা-ের সঙ্গে আসামি সাদাত সরাসরি জড়িত। মামলার তদন্ত, সাক্ষ্য প্রমাণে, ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ইতিপূর্বে এ মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিকারীদের মধ্যে কয়েকজন আসামির জবানবন্দিতে সাদাত জড়িত মর্মে নাম প্রকাশ করেছেন। তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অন্যান্য আসামিদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। এ এস এম নাজমুস সাদাতকে দিনাজপুরের বিরামপুর থানার কাঠলা থেকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করে ডিবি। বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাদাত হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিল। গ্রেপ্তারকৃত সাদাত জয়পুরহাটের কালাই থানার কালাই উত্তর পাড়ার হাফিজুর রহমানের পুত্র।
চাঞ্চল্যকর আবরার হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের ১৬ জন এজাহারভূক্ত আসামি। বাকি চারজন এজাহার বহির্ভূত। এজাহারভূক্ত ১৯ জনের মধ্যে তিন জন এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। তারা হলেন, মো. জিসান, মো. মোর্শেদ ও মো. তানিম। এই হত্যা মামলায় সাত জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারা হচ্ছে, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাংগাঠনিক সম্পাদক মেহেদি হাসান রবিন, বুয়েটের ছাত্র ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, অনিক সরকার, মো. মোজাহিদুর, মনিরুজ্জামান মনির ও এ এস এম নাজমুস সাদাত। গত ৬ই অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগের নেতারা ডেকে নেয় আবরার ফাহাদকে। তারা আবরারকে প্রায় ৬ ঘন্টা ধরে পেটায়। পরে আবরারকে হলের নীচতলার সিঁড়ির নীচে রেখে যায়। আবরার নিহতের ঘটনায় তার বাবা চকবাজার থানায় ১৯ জনকে এজাহারনামীয় আসমি করে মামলা করেন।




 
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status