প্রথম পাতা

আবরার ইস্যুতে বিবৃতি দেয়ায় জাতিসংঘ দূতকে তলব

কূটনৈতিক রিপোর্টার

১৪ অক্টোবর ২০১৯, সোমবার, ৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ঘটনার ‘বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত’ এবং ‘অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’ চেয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা  জাতিসংঘসহ বিদেশি দূতদের ওপর বিরক্ত সরকার। বৃটিশ হাই কমিশনারের পর জাতিসংঘ দূতকে গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেকে নেয়া হয় এবং তাকে কড়া ভাষায় সরকারের অসন্তোষের বিষয়টি জানানো হয়। ঢাকার তরফে বলা হয়- জাতিসংঘের এমন বিবৃতির কেবলই অনভিপ্রেত। মত প্রকাশের জন্য আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়েছে বলে জাতিসংঘের বিবৃতিতে যে মন্তব্য করা হয়েছে তা মোটেও সঠিক নয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডাকে সাড়া দিতে ঢাকাস্থ জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো রোববার বেলা ১১টার দিকে সেগুনবাগিচায় হাজির হন। এর পর তাকে মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগের মহাপরিচালকের দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। মহাপরিচালক নাহিদা সোবহান প্রায় ৪০ মিনিট ওই কূটনীতিকের সঙ্গে কথা বলেন। বের হয়ে কোন বাক্য বিনিময় ছাড়াই মন্ত্রণালয় ছেড়ে যান। পরে সেগুনবাগিচার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেন, মূলত দু’টি বিষয় তাকে বলা হয়েছে। প্রথমতঃ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে জাতিসংঘের মন্তব্য সঠিক নয়। কারণ হিসাবে যেটি তুলে ধরা হয় তা হল- চুক্তি নিয়ে অনেকেই কথা বলছেন, সরকার কাউকেই মত প্রকাশে বাধা দেয়নি। তাছাড়া এ বিষয় নিয়ে সরকার ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারসহ বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় এমন বিবৃতি অনাকাঙ্ক্ষিত। দ্বিতীয়তঃ উন্নত বিশ্বে কোনো ছাত্র হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘকে কথা বলতে দেখা যায় না। বাংলাদেশের সামান্য ঘটনায়ও বিবৃতি আসে। এটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল বলেই মনে করে ঢাকা। গত ৯ ই অক্টোবর জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, অবাধ মত প্রকাশের অভিযোগে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক তরুণ শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘ নিন্দা জানাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার না করায় বাংলাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে সহিংসতায় অনেকেই প্রাণ দিয়েছেন। জাতিসংঘের বাংলাদেশ দপ্তর লক্ষ করছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ধরার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। ফলে স্বাধীন তদন্তকারীরা একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচারের পথে যাবেন, যা ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সহায়ক হবে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা মানবাধিকারের অঙ্গ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়-  মত প্রকাশের জন্য কাউকে হয়রানি, নির্যাতন ও হত্যা করা উচিত নয়। ওই ঘটনায় জাতিসংঘ ছাড়াও বৃটেন, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, ফান্স, সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ পৃথক বিবৃতি দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসনকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে সর্বপ্রথম সরকারের অসন্তোষ ব্যক্ত করা হয়। বাকীদের তলবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে কি-না? তা এখনও খোলাসা হয়নি। ৬ই অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। আগের দিনে তিনি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। বুয়েট শিক্ষার্থীর নির্মম ওই হত্যাকোণ্ডের ঘটনায় বুয়েটসহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বব্যাপী তৈরি হয় প্রতিক্রিয়া। ঘটনার পর পরই মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status