অনলাইন

কী ঘটেছিলো কাল আবরারের গ্রামের বাড়িতে? (ভিডিও)

মোহাম্মদ ওমর ফারুক, কুষ্টিয়া থেকে

১০ অক্টোবর ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ২:৩১ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে পুলিশ। গতকালের ওই হামলার বেশ কয়েকটি ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিগুলোতে দেখা যায় আবরার ভাবীকে টেনে হেঁছড়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ, ছবিতে মারপিটের দৃশ্যও দেখা যায়। তবে বিষয়টি পুলিশ অস্বীকার করেছে।

গতকাল কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, ঘটনাস্থলে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে সেখানকার অনেকের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। কাউকে মারধর করা হয়নি।

জানা যায়, বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফায়াজকেও মারধর করেছে পুলিশ। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফায়াজ। বুধবার কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় রায়ডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় রায়ডাঙ্গা গ্রামে যান বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। সেখানে ভিসিকে বাধা দেয় গ্রামবাসী। পরে এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় আবরারের ছোট ভাই ফায়াজ, তার ফুপাতো ভাইয়ের স্ত্রী ও আরও একজন নারী আহত হন।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আবরারের ছোট ভাই ফায়াজ ফেসবুকে লেখেন, ‘আজকে Additional SP (উনি বলেন ওনার নাম মোস্তাফিজুর রহমান) কোথা থেকে সাহস পান আমার গায়ে হাত দেয়ার? আমার ভাবিকে মারছেন? নারীদের গায়ে নিষ্ঠুরভাবে হাত দেন আপনারা? এই চাটুকারদের কি বিচার হবে না? তিনি কালকে ২ মিনিটের মধ্যে জানাজা শেষ করতে বলেছেন কীভাবে? যেই ছাত্রলীগ মারল তারা কেন সর্বত্র? আমার বাবাকে হুমকি দেয়া হয়েছে, আপনার আরেক ছেলে ঢাকা থাকে, আপনি কি চান তার ক্ষতি হোক। আজ বলেছেন কেউ কিছু করলে এক সপ্তাহ পর গ্রামের সব পুরুষ জেলে থাকবে। বিচার চাই, আমি বিচার চাই...নয়তো আমাকে মেরে  ফেলুন। বাবা-মা কষ্ট একবারে পাবে।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, বুয়েট ভিসি আবরারের কবর জিয়ারত করতে পেরেছেন। তবে আবরারের বাড়িতে ঢুকতে পারেননি। আবরারের ভাই ও বাবার প্রশ্নবানে জর্জরিত হন তিনি। তাদের জিজ্ঞাসা ছিল, ভিসি কেন ওই হত্যাকাণ্ডের পরপর সেখানে উপস্থিত হননি। এখন কেন এসেছেন? এ অবস্থায় আবরারের বাড়িতে ঢোকার সময় ভিসিকে বাধা দেয় গ্রামবাসী। আবরারের বাড়ি ঢোকার মুখে ভিসির গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন নারীরা। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে আবরারের ছোট ভাই আবরার ফায়াজসহ পাঁচজন আহত হন। যদিও পরে তিনি ফেসবুক স্ট্যাটসটি ডিলেট করে দেন।

কি কারণে তিনি স্ট্যাটাসটি ডিলেট করে দিয়েছে তার কারণ জানা যায়নি। জানা যায়, বুয়েটের ভিসি আবরারের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গ্রামবাসীর তোপের মুখে রায়ডাঙ্গা গ্রামে থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত আবরারের বাড়িতে না ঢুকে সামনের রাস্তা থেকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রহরায় তিনি দ্রুত চলে যান। ভিসিকে সরিয়ে দেয়ার পরপরই পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পুলিশ আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজকে মারধর করে এবং আবরারের মামাতো ভাবি তমাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ করে আবরারের পরিবার। তিনি কুমারখালী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আবরারের ছোট ভাই ফাইয়াজ বলেন, পুলিশ আমার গায়ে হাত দিয়েছে। বুকে গুতো মেরেছে। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান নিজে আমাকে মেরেছে। আমার এক ভাইকে পিটিয়ে মেরেছে, এবার পুলিশ কী আমাকে মারবে?

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status