শেষের পাতা

রংপুর-৩ সদর শূন্য আসন নিয়ে আলোচনার ঝড়

জাভেদ ইকবাল, রংপুর থেকে

২১ জুলাই ২০১৯, রবিবার, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন

সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর রংপুর-৩ সদর আসন শূন্য। পার্টির 
নেতাকর্মীদের মাঝে শোক বিরাজ করলেও কে বসবেন এই শূন্য আসনে তা নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। এরশাদের আসন জাতীয় পার্টিরই থাকবে, নাকি চলে যাবে আওয়ামী লীগের দখলে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা তাদের মতামত তুলে ধরে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে রংপুর-৩ সদর আসনে প্রথম নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগের সিদ্দিক হোসেন। এরপর ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের কাজী আব্দুল কাদের, ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির শফিকুল গণি স্বপন, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির মোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, ১৯৯১, ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, ২০০১ সালে গোলাম মোহাম্মদ কাদের, ২০০৮ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, ২০০৯ সালের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদ, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।

এরশাদের মৃত্যুর পর গত ১৬ই জুলাই রংপুরে সমাধিস্থ করা হয় এরশাদকে। ওইদিন তার আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। সংসদ সচিবালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) আ ই ম গোলাম কিবরিয়া আসনটি শূন্য হওয়ার গেজেট প্রকাশ করেন। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে রংপুর-৩ আসনে নির্বাচন সম্পন্ন করবে ইলেকশন কমিশন (ইসি)।

গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে- ‘বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৩০শে আষাঢ় ১৪২৬/১৪ই জুলাই ২০১৯ তারিখে মৃত্যুবরণ করায় একাদশ জাতীয় সংসদের ২১ রংপুর-৩ আসনটি ওই তারিখ থেকে শূন্য হয়েছে।’
এ ঘোষণার পর থেকে রংপুর-৩ সদর আসনে কে হবেন সংসদ সদস্য তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। রংপুরে গ্রাম-গঞ্জ, পাড়া-মহল্লা, হোটেল-রেস্তরাঁ, চায়ের দোকান সর্বত্রই চলছে এ নিয়ে আলোচনা। জাতীয় পার্টির শীর্ষনেতা নেতা জনপ্রতিনিধিত্ব করা এ আসনটি জাতীয় পার্টি নাকি আওয়ামী লীগের ঘরে যাবে তা নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ। কেউবা বলছেন প্রিয় নেতার আসনটি ধরে রাখতে হবে জাতীয় পার্টিকে, কেউবা বলছে সদর আসনের উন্নয়নে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা। সদর আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামানকে এ আসনে প্রচারণা শুরু করেছেন। গত ১৭ই জুলাই নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকার জয় চৌধুরী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা চৌধুরী খালেকুজ্জামানকে রংপুরে নৌকার মাঝি হিসেবে দেখতে চাই।’ এদিকে ফেসবুকে অনেকে এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজুকে মনোনয়ন দিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের হয়ে এ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও বিসিবি পরিচালক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলামের নামও শোনা যাচ্ছে।

এদিকে এরশাদের মৃত্যুর পর রংপুর-৩ আসনে উপনির্বাচনে অংশ নিতে এরশাদের পরিবারের তিন ব্যক্তির নাম বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। এরশাদের ভাই হুসেইন মুহম্মদ মোর্শেদ, এরশাদের ছেলে রাহগীর আলমাদি সা’দ এরশাদ ও এরশাদের ভাতিজা রংপুর-১ গঙ্গাচড়া আসনের সাবেক এমপি হুসেইন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ। তবে গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন আসিফ। সেই সময় তাকে জাতীয় পার্টি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

এরশাদ পরিবারের বাহিরে নাম শোনা যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৫ মিঠাপুকুর আসনে জাতীয় পার্টি থেকে অংশ নেয়া ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীরের নাম। গত নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী এইচ এন আশিকুর রহমানের কাছে বড় ব্যবধানে পরাজিত হন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status