শেষের পাতা

মধ্যপ্রাচ্যে আরো ১০০০ সেনা মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র

মানবজমিন ডেস্ক

১৯ জুন ২০১৯, বুধবার, ১০:০৬ পূর্বাহ্ন

ইরানের শত্রুতামূলক আচরণের জবাবে মধ্যপ্রাচ্যে আরো প্রায় ১০০০ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারপ্রাপ্ত মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহান বলেছেন, ইরানের পক্ষ থেকে যে হুমকি রয়েছে তার জবাবে এটা হলো আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

সোমবার এ বিষয়ে একটি  বিবৃতি দিয়েছেন শানাহান। এতে তিনি বলেছেন, আকাশ, নৌ ও স্থলপথে হুমকি মোকাবিলার জবাবে মধ্যপ্রাচ্যে আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত প্রায় ১০০০ সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছি। সম্প্রতি ইরান থেকে যে হামলা হয়েছে তার পক্ষে নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে। বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যে আমরা ইরানি বাহিনী ও তাদের প্রক্সি গ্রুপগুলোর শত্রুতামূলক আচরণ জানতে পেরেছি। এর ফলে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা ও স্বার্থ হুমকিতে রয়েছে। বিবৃতিতে শানাহান আরো বলেন, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের জন্য। একই সঙ্গে তা আমাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্যও করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার দুটি তেলবাহী ট্যাংকারে হামলার পর নতুন করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো আঞ্চলিক মিত্রগুলোর পাশাপাশি ট্যাংকারে হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তারা এর জন্য ইরানকে দায়ী করেছে। তবে তেহরান এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পায় সোমবার ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ বৃদ্ধির ঘোষণার পর। ঘোষণায় ইরান জানিয়েছে, ইউরোপীয় দেশগুলো যদি শিগগিরই ইরানের ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিতে পারে, তবে ২৭ জুন থেকে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘন করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ শুরু করবে তারা।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাদের সেনাবাহিনী নতুন ছবি প্রকাশ করেছে। তাতে যা দেখানো হচ্ছে, তাতে বলা হচ্ছে হরমুজ প্রণালীতে দুটি ট্যাংকারের একটিতে হামলার নেপথ্যে রয়েছে ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ড। এই ছবি প্রকাশ করে পেন্টাগন একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ভিডিও প্রমাণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে বলা যায় এই হামলার জন্য দায়ী ইরান।

যুক্তরাষ্ট্র অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে উত্তেজনা আরো বাড়ালেও ইরান মঙ্গলবার ভিন্ন ইঙ্গিত দিয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, তার দেশ কোনো যুদ্ধ চায় না। তারা তাদের আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর রক্ষা করে চলেছে। রুহানি বলেন, ইরান তাদের পক্ষের চুক্তি রক্ষা করে চলেছে। আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর প্রতি অনুগত রয়েছে। বর্তমানে আমাদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে আছে যে শক্তি (যুক্তরাষ্ট্র), তারাই সকল চুক্তি ও শর্ত ভেঙেছে ।

এদিকে, চলমান পরিস্থিতিতে শান্ত সকল পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্যান্য আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো। যুক্তরাষ্ট্রকে উত্তেজনা প্রশমিত করার ও ইরানকে পারমাণবিক চুক্তি রক্ষা করে চলার আহ্বান জানিয়েছে চীন। ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তির অপর এক অংশীদার রাশিয়াও আহ্বান জানিয়ছে সংযমের। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পদক্ষেপকে সত্যিকার অর্থে উস্কানিমূলক বলে বর্ণনা করেছে মস্কো। তবে তেলের ট্যাংকারে হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে সমপূর্ণভাবে ইরানকে দায়ী করছে সৌদি আরব। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, তারা প্রায় নিশ্চিত যে, ইরানই এই হামলা চালিয়েছে। তবে জাতিসংঘ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কর্মকর্তারা এ ঘটনার একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। । যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রকাশিত ছবির দিকে ইঙ্গিত একজন ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেছেন, আমাদের এখন অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। এখন পর্যন্ত আমরা কেবল তথ্য সংগ্রহ করে চলেছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status