দেশ বিদেশ

ফের বাড়লো রসুন, ডাল ও মুরগির দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২৫ মে ২০১৯, শনিবার, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

রাজধানীর বাজারগুলোতে আবারো বেড়েছে রসুন, ডাল ও মুরগির দাম। অন্যদিকে পিয়াজসহ বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে। রসুন ও মসুর ডালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫-১০ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫-১০ টাকা এবং লাল লেয়ার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর কাওরান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। বাজারে ব্যবসায়ীরা রসুনের কেজি বিক্রি করছেন ৭০-১৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০-১২০ টাকা। আর মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-১২০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৫-১১০ টাকা। অপরদিকে পিয়াজ ও কাঁচামরিচের দাম কমেছে। পিয়াজ গত সপ্তাহের মতো খুচরা বাজারে ২৫-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর পাইকারিতে পিয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকা। আগের মতোই কাঁচামরিচ ২৫০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা।
এদিকে মুরগি ব্যবসায়ী সফিক বলেন, মুরগির দাম অনেক বেশি। যে লাল লেয়ার মুরগি গত সপ্তাহে ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, তা এখন ২৩০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আর গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৫০ টাকা, তা এখন ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, মোকামে দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। বাড়তি দামে কেনার কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে সামনের সপ্তাহে মুরগির দাম আবার কমে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। আরেক ব্যবসায়ী মতিন বলেন, লেয়ার মুরগির দাম গত সপ্তাহে ছিল ১৯০ টাকা, এখন এক লাফে ২৪০ টাকা হয়েছে। আড়তেই কেজিতে ৫০ টাকার মতো বেশি দামে কিনতে হয়েছে। যে কারণে আমরাও বাড়তি দামে বিক্রি করছি। এদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। গরুর মাংস বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫২৫-৫৫০ টাকা কেজি। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮৫০ টাকা কেজি। কয়েকটি বাজারে ব্যবসায়ীদের মূল্যতালিকা ঝুলিয়ে গরুর মাংস ৫২৫ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে বরাবরের মতো বিভিন্ন বাজারের দোকানিরা গরুর মাংসের কেজি ৫৫০ টাকা বিক্রি করছেন। তাদের কোনো মূল্যতালিকাও নেই।
বাজারে ডিমের দাম কমেছে। ব্যবসায়ীরা প্রতি ডজন ডিম বিক্রি করছেন ৮০-৮৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯০-৯৫ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে কমেছে ১০ টাকা। ডিম ব্যবসায়ী মান্নান বলেন, রোজা শুরুর দিকে ডিমের দাম কিছুটা কমেছিল। এরপর গত সপ্তাহে কিছুটা বাড়ে। তবে চলতি সপ্তাহে ডিমের দাম আবার কমেছে। গত সপ্তাহে এক ডজন ডিম ৯০ টাকা বিক্রি করেছি। এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কম দামে কিনতে পারায় ক্রেতাদেরও কম দামে দিচ্ছি। ঈদের আগে ডিমের দাম আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই। বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে শসা, বেগুন, টমেটো, পটল, ঝিঙা, ধেড়স বরবটি, ধুন্দুল, শিমের। তবে আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা পেঁপে। বাজার ভেদে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা কেজিতে। শসা বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম কমে ৪০-৫০ টাকা হয়েছে। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৪০ টাকা। পটলের দাম কমে ৩০-৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। বরবটি পাওয়া যাচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজির মধ্যে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৭০ টাকা। গত সপ্তাহে ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া করলার দাম কমে ৪০-৫০ টাকায় নেমে এসেছে। ধুন্দুল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৭০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঢেঁড়সের দাম কমে ৩০-৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কাকরোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৮০ টাকা। ঝিঙ্গের কেজি ৪০-৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৭০ টাকা। শিমের কেজি ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা কেজি। আর গাজর আগের সপ্তাহের মতোই ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সবজি ব্যবসায়ী সালাম বলেন, অপ্রত্যাশিতভাবেই সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। সবজির দাম হঠাৎ এত কমে যাবে ধারণাতেও ছিল না। এদিকে কয়েক মাস ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া মাছের দাম এখনো বেশ চড়া রয়েছে। তেলাপিয়া মাছ আগের মতো বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজি। পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকা কেজি। রুই ২৮০-৬০০, পাবদা ৬০০- ৭০০, টেংরা ৫০০-৮০০, শিং ৫০০-৬০০ এবং চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকা কেজি।
এবার মৌসুমে ধানের দাম কমার প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। বোরো ধানের নতুন চাল বাজারে আসায় চালের দাম কেজিতে গড়ে ৫ টাকা কমেছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, মোটা চালের দর ২৪ শতাংশ কমেছে। মাঝারি চালের দাম ১০ শতাংশ কমেছে। সরু চালের দামও প্রায় ১৭ শতাংশ কমেছে। কাওরান বাজারে প্রতি কেজি গুটি ও স্বর্ণা নতুন চাল ৩০ টাকা এবং পুরনো গুটি ও স্বর্ণা ৩২ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এক সপ্তাহ আগেও গুটি ও স্বর্ণা চাল ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া এখন বিআর আটাশ নতুন চাল ৩৫ টাকা এবং পুরনো চাল ৩৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status