ঢাকা, ২০ মে ২০২৪, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

খেলা

রিয়ালের জয়ের নায়ক কে এই হোসেলু

স্পোর্টস ডেস্ক
১০ মে ২০২৪, শুক্রবার
mzamin

৮৭ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে পিছিয়ে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ৮১ মিনিটে বদলি নামানো হয়েছিল হোসেলু এবং ব্রাহিম দিয়াজকে। এরপরেই যেন রিয়াল নিজেদের জাত চেনালো। হোসেলু করলেন দুই গোল। সেটাও তিন মিনিটের ব্যবধানে! বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় তাদের পৌঁছে দিলো ওয়েম্বলির ফাইনালে। আগামী ১লা জুন উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে আরেক জার্মান দল বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মোকাবিলা করবে রিয়াল মাদ্রিদ। মাদ্রিদে রিয়ালের জয়ের নায়ক ৩৪ বছর বয়সী হোসেলুর গল্পটা রোমাঞ্চে ভরা! গত দুই মৌসুমে যে দুই ক্লাবে তিনি খেলেছেন, দুটি ক্লাবই অবনমিত হয়ে গেছে লা লিগা থেকে। এবার রিয়াল মাদ্রিদে তিনি এসেছেন স্রেফ এক মৌসুমের জন্য ধারে। সেই তিনিই চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমি-ফাইনালে খাদের কিনারায় থাকা দলকে নাটকীয়ভাবে পৌঁছে দিলেন কাক্সিক্ষত ঠিকানায়। দ্বিতীয় বিভাগে নেমে যাওয়া দল থেকে এসে এই ৩৪ বছর বয়সে রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবের স্মরণীয় জয়ের নায়ক, এসব তো রূপালি পর্দার গল্প কিংবা রূপকথা।

বিজ্ঞাপন
যদিও রিয়ালের সঙ্গে তার সম্পর্ক অনেক পুরোনো। ক্যারিয়ারের নানা বাঁকে এরকম সম্পর্ক হয়েছে অনেক ক্লাবের সঙ্গেই। কিন্তু লম্বা সময় থিতু হতে পারেননি কোথাও। ১২ বছর বয়সে সেল্তা ভিগোর একাডেমিতে পা রাখেন তিনি। এই ক্লাবের হয়েই শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু তার ১৮ বছর বয়সে। ২০০৯ সালে তিনি চলে আসেন রিয়াল মাদ্রিদে। শুরুতে ঠাঁই পান রিয়ালের ‘বি’ দলে। ২০১০-১১ মৌসুমে রিয়ালের ‘বি’ দলে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ স্কোরার। ২০১১ সালে রিয়ারের মূল দলের হয়ে অভিষেকের স্বাদও পেয়ে যান। কারিম বেনজেমার বদলি হিসেবে একটি ম্যাচে শেষ ১০ মিনিটে মাঠে নামেন এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ক্রস থেকে গোলের দেখাও পেয়ে যান। রিয়ালের ‘বি’ দলের হয়ে পরের মৌসুমেও ২৬ গোল করেন তিনি। কিন্ত তারকায় ঠাসা মূল দলে জায়গা পাচ্ছিলেন না। ২০১২ সালে তিনি পাড়ি জমানে বুন্দেসলিগায়। সেখানে হফেনহাইম, আইনট্রাখট ফ্র্যাঙ্কফুর্ট ও হ্যানোভার হয়ে ২০১৫ সালে ইংলিশ ফুটবলে আসেন স্টোক সিটির হয়ে খেলতে। যথারীতি থিতু হতে পারেননি সেখানেও। ধারে স্পেনে ফেরেন দেপোর্তিভো লা করুনিয়ার হয়ে খেলতে। সেখান থেকে আবার ইংল্যান্ডে নাম লেখান নিউক্যাসল ইউনাইটেডে। এখানেও নিয়মিত হতে পারেননি। ২০১৯ সালে নিজ দেশে ফেরেন আলাভেসের হয়ে খেলতে। এই ক্লাবেই একটু নিয়মিত খেলার সুযোগ করে নেন। পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থকে ২০২২ সালে ক্লাবটি নেমে যায় লা লিগা থেকে। হোসেলু তখন চলে আসেন এস্পানিওলে। দারুণ পারফর্মও করেন এই ক্লাবের হয়ে। কিন্তু দলের অবস্থা ছিল শোচনীয়। গত মৌসুমে এই ক্লাবের অবনমন হয় লা লিগা থেকে। তবে এটিই তার জন্য শাপেবর হয়ে আসে। গোল স্কোরিং সামর্থ্য দিয়ে তিনি নজর কাড়তে পেরেছিলেন। তার দিকে চোখ পড়ে রিয়ালের। বেনজেমা চলে যাওয়ার পর তারকা কোনো ফরোয়ার্ড দলে আনেনি ইউরোপের সফলতম ক্লাবটি। ঠেকার কাজ চালানোর একজন স্ট্রাইকার তারা খুঁজছিল। সেটিই হোসেলুর জন্য খুলে দেয় রিয়ালে ফেরার দুয়ার। তার প্রতিদান দিলেন এমন ম্যাচে। বায়ার্নের বিপক্ষে ম্যাচে বলে শট নিয়েছেন দুবার। রিয়ালের ভাগ্য ফিরতে লেগেছে ওই দুই শটই! দিয়েছেন মোটে ৪ পাস, তাতেও সফল হয়েছে মোটে দুইটি। কিন্তু এসব পরিসংখ্যান যেন তুচ্ছ! হোসেলু অবশ্য নিজেকে নায়ক-টায়ক বলতে নারাজ। বরং দলের চিরায়ত চরিত্র নিজের মধ্যে ধারণ করে তিনি বলেন, ‘নায়ক বা এসব কিছু একদমই বুঝি না, তবে আমি খুবই খুশি আমাকে দেখে ধারণা করে নিতে পারেন। অবিশ্বাস্য ছিল এটি, অসাধারণ কিছু।’ বাস্তব কখনও কখনও এমনই, কল্পনার চেয়েও চমকপ্রদ। জীবন মাঝেমাধ্যেই যেমন ভাবনার চেয়ে সুন্দর।
 

খেলা থেকে আরও পড়ুন

   

খেলা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status