বাংলারজমিন
তালতলীতে ৪ আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলা
বরগুনা প্রতিনিধি
৯ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবারবরগুনা জেলার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, হাওলাদার নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়েছে। বুধবার বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মো. মশিউর রহমান খান মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্তপূর্বক ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় জেলাব্যাপী সর্বত্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে মামলার বাদীর কন্যার মোবাইল ফোনে প্রেম হয়। একপর্যায় বাচ্চু মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। কিন্তু চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে না করে টালবাহানা করতে থাকে। ধর্ষিতা বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে চেয়ারম্যান তাকে বিয়ে করবে বলে স্ট্যাম্পে লিখিত দেয় এবং বিভিন্ন স্থানে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষিতার অজান্তে গোপনে মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারণ করে।
ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মামলার ২নং আসামি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে। চেয়ারম্যান রাজ্জাক তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে এবং সেও একইভাবে মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারণ করে রাখে। আরও জানা যায়, পরে পঁচাকোড়ালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রাজ্জাক তার মেয়েকে ব্ল্যাকমেইল করে এবং জোমাদ্দারের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাধ্য করে।
এমন খবর পেয়ে তিন চেয়ারম্যান ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিলে তার বিরুদ্ধে উল্টো পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দেয়। সে মামলায় ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে ওই মামলায় ভুক্তভোগী জেলহাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার বাবা বুধবার বরগুনা নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার, কামরুজ্জামান বাচ্চু, আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. মশিউর রহমান খান মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে আমার প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্রমূলক এ মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে আমি ও অন্য দুই চেয়ারম্যানের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি আইনগতভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করবো। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আনিচুর রহমান মিলন বলেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।