বাংলারজমিন
গলায় প্ল্যাকার্ড, হাতে পাসপোর্ট নিয়ে রাজপথে রেমিট্যান্স যোদ্ধা শান্তা
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
৫ মে ২০২৪, রবিবারগলায় প্ল্যাকার্ড এবং হাতে পাসপোর্ট নিয়ে বিচারের দাবিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রবাসী নারী শান্তা আক্তার। ন্যায়বিচারের দাবিতে মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে গত কয়েকদিন ধরে অবস্থান নেন সমপ্রতি বাহরাইন থেকে ছুটিতে আসা প্রবাসী নারী। এই রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে অর্থের লোভে কমবয়সী এক যুবক বিয়ে করে ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে ওই নারী দাবি করেন। স্বামীর কাছে প্রতারিত হওয়ায় শান্তা আক্তার বাহরাইনের বাংলাদেশ দূতাবাসে আইনি সহযোগিতা চেয়ে আবেদনও করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১১ই জানুয়ারি দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মাহফুজুর রহমান বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবরে আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠি দেন। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার গেড়াদিয়া গ্রামের বাহারউদ্দিনের মেয়ে শান্তা আক্তার দরিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে বাবা-মা ও চার বোনের সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে ২০০৪ সালে গৃহকর্মী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহরাইনে যান। পরে ২০১৭ সালে তার বিয়ে হয় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গুজুরির চরের কাতারপ্রবাসী নবীন হোসেনের সঙ্গে। নবীন বয়সে শান্তার চেয়ে ছোট। বিয়ের এক মাস পরেই বাহরাইন চলে যান শান্তা। সেখানে থাকা অবস্থায় জানতে পারেন, নানা জটিলতায় কাতার থেকে দেশে ফিরেছেন স্বামী নবীন।
বেকার স্বামীর পুরো অর্থনৈতিক দায়ভার শান্তার কাঁধে চলে আসে। শান্তা জানান, ব্যবসার জন্য তার স্বামীকে কয়েক দফায় ১৬ লাখ টাকা পাঠান তিনি। কিন্তু ২০২১ সালে জানতে পারেন তার আপন ভাগিনি (১৫)কে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছেন তার প্রতারক স্বামী। পরে দেশে ফিরে দেনমোহরের ১০ লাখ টাকা দাবি জানিয়ে ২০২১ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি পারিবারিক আদালতে মামলা করেন শান্তা। তিনি আরও জানান, ২০২৩ সালের ২৭শে এপ্রিল আদালত নবীনকে চার কিস্তিতে ৬ মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিলে প্রথম কিস্তিতে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিলেও আর কোনো টাকা দেননি তিনি। এ বিষয়ে শান্তা পারিবারিক আদালতে পুনরায় অভিযোগ করেন। আদালত নবীনকে তলব করলেও তিনি হাজির হননি। ফলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এদিকে ১৬ লাখ টাকা ফেরত চেয়ে চলতি বছরের ১০ই মার্চ সিংগাইর থানায় আরেকটি মামলা করেন শান্তার মা রাবেয়া খাতুন। এতে নবীন ও তার মা-বাবাসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। থানার এসআই বেলাল হোসেন তদন্ত সম্পন্ন করে গত ২৪শে মার্চ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামিদের অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেন। অন্য আসামিরা আদালত থেকে জামিন নিলেও নবীন জামিন নেননি। আগামী ২১শে মে মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ রয়েছে বলে জানালেন শান্তা। এসব বিষয়ে জানতে শান্তার স্বামী নবীনের মোবাইল ফোনে কয়েক দফায় কল দিয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।