বাংলারজমিন
তীব্র গরমে ধানে চিটা
শাহীন আলম তুহিন, মাগুরা থেকে
৫ মে ২০২৪, রবিবারএপ্রিল জুড়েই চলছে তাপপ্রবাহ। গ্রীষ্মকালীন এ সময়ে মাগুরায় বিভিন্ন মাঠে চলছে কৃষকের ধান কাটা। কিন্তু এ মৌসুমে তাপপ্রবাহ অত্যধিক হারে বেড়ে যাওয়ার ফলে কৃষকের ধানে ধরেছে চিটা। ধান পেকে যাওয়ার মুহূর্তে তাপপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় সদরের মির্জাপুর, নড়িহাটি, মঘি, আঠারোখাদাসহ বিভিন্ন গ্রামে সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ জমির ধানে চিটা হয়ে গেছে। এ এলাকার কৃষকরা জানিয়েছেন ধান কাটার শেষ সময়ে এসে তাপপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় ধানে চিটা হয়েছে। ফলে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক। সারা বছরের জন্য ঘরে তোলা ফসলে চিটা হয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছেন অধিকাংশ কৃষক । সদরের হাজীপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর বড়কুড় গ্রামের কৃষক ওলিয়ার বিশ্বাস জানান, আমি এবার ১ বিঘা জমিতে বাউধানের চাষ করেছি। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে প্রথমে ধানের চারা রোপণের পরপরই জমিতে নিয়মিত পরিচর্যা বাড়ায়। চারাগাছ বড় হলে আগাছা পরিষ্কারের পাশাপশি নিয়মিত সার ও ওষুধ ব্যবহার করি।
এ অবস্থায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। সারা বছর ধান দিয়ে আমার সংসার চলে। ভাবছি এ বছর চাল কিনে খেতে হবে । সদরের নড়িহাটি গ্রামের কৃষক ইকবাল হোসেন বলেন, এবার তীব্র গরমের কারণে আমার ১০ কাঠা জমির ধানে চিটা লেগেছে। এখন ধান কাটার শ্রমিক সংকট। গরমের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় মাঠে আমরা শ্রমিক পাচ্ছি না। একে তো গরমের কারণে ধানে চিটা আবার শ্রমিক সংকটের কারণে আমরা খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েছি। মাগুরা সদরের মঘি গ্রামের কৃষক নাজমুল ও শফিকুল বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে ধান ভালো হয়েছে। তবে ধান কাটার এ মৌসুমের শেষের দিকে গরমের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মাঠের অনেক কৃষকের ধানে চিটা লেগেছে। আমার এবার ৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। যেখানে বিঘা প্রতি ৫ মণ ধান পাওয়ার কথা কিন্তু এবার গরমের কারণে ধানের ক্ষতি হওয়াতে বিঘাপ্রতি পাচ্ছি ২ মণ। আবার গরমের কারণে ধান কাটার শ্রমিক সংকট চলছে। সব মিলিয়ে নানা সংকটে দিন যাচ্ছে আমাদের । মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, এবার তীব্র গরমের কারণে জেলার অনেক কৃষকের ধানে চিটা লেগেছে। যেসব এলাকার কৃষকের ধানে চিটা লেগেছে তাদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি। এবার জেলায় ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। কিছু এলাকায় গরমের তীব্রতা থাকার কারণে ধানের ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে দানের উৎপাদনের মাত্রা বাড়াতে মাঠকর্মীরা কাজ করছেন। কৃষির মান বাড়াতে আমরা সব সময় কৃষকদের কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হচ্ছে। কারণ যেকোনো আবহাওয়া ও পরিবেশে আমরা সব সময় কৃষকের পাশে থাকতে চাই।