ঢাকা, ২২ মে ২০২৪, বুধবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

অনলাইন

বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাওয়ায় ছাত্রীর আত্মহত্যা

অনলাইন ডেস্ক

(২ সপ্তাহ আগে) ১ মে ২০২৪, বুধবার, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:৩০ পূর্বাহ্ন

mzamin

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় কোথাও ভর্তি হতে পারেননি। এ কষ্ট সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের পদ্মানদীর সোনাকান্দর এলাকা থেকে পিউ কর্মকার নামে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মৃত্যুর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সুসাইড নোট লিখে যান পিউ। এরপরই পদ্মা নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি। পিউ রাজবাড়ী শহরের ২নং রেলগেট এলাকার কৃষ্ণপদ সরকারের মেয়ে। সে চলতি বছর রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছিল। 
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।
সুইসাইড নোটে পিউ কর্মকার লেখেন, গুচ্ছ আমার শেষ ভরসা ছিল, জানি না কবে রেজাল্ট দিবে। পরীক্ষাও মোটামুটি হয়েছিল, একটা আশা ছিল, কিন্তু আমার ভাগ্য সেই আশাটাও পূরণ করতে দিলো না। ৫টা অপশন থাকে তার মধ্যে আমি বায়োলজি আর ইংরেজি এর বৃত্ত ভরাট করে ফেলেছিলাম ভুল করে, আজকে সেটা দেখলাম। কিন্তু আমি উত্তর করেছিলাম বাংলার। আমার সব স্বপ্ন শেষ।

বিজ্ঞাপন
একে একে ঢাবি, রাবি, জাবি থেকে একটু একটুর জন্য ধাক্কা খাই। জানি এটাও আমার ভাগ্যের জন্য, চেষ্টা আমার কম ছিল না। সারাদিন রাত এক করে পড়তাম। বাবা মার অনেক স্বপ্ন ছিল আমাকে নিয়ে কিন্তু আমি কিচ্ছু দিতে পারি নাই। দাদার ইচ্ছা ছিল আমাকে ডাক্তার বানাবে। আমারও স্বপ্ন ছিল ছোট থেকেই যে ডাক্তার হবো। আমার ভাগ্য এতটাই খারাপ ছিল মেডিকেল এডমিশনের প্রিপারেশন নেয়াও শুরু করি। কিন্তু মেডিকেলেও বসতে পারি না। এটা থেকেও বিশাল একটা ধাক্কা খাই।

পিউ আরও লিখেন, অনেক ভেঙে পড়েছিলাম তাও হাল ছাড়ি নাই। এই এডমিশন পিরিয়ডটা যে কতটা কষ্ট দিছে আমাকে। এই সব আর আমি নিতে পারতেছি না। আমি শুধু একটা আশ্রয় খুঁজতেছিলাম শেষ আশ্রয় এটাও শেষ হইল। অনেক মানুষ অনেক আত্মীয়ের অনেক কথা শোনা লাগছে। বাবার একটু ফিন্যানসিয়াল সমস্যা ছিল এ জন্য ঢাকা গিয়ে পড়তে হবে কেন। কিন্তু আমি ধৈর্য ধরে ছিলাম যে পারব। কিন্তু আমি আর পারলাম না। সারাটা দিন ঘরের মধ্যে একা একা বসে থাকি। মানুষের কতো ফ্রেন্ড কত কিছু কিন্তু আমি আমার পাশে কাউকে পাই নাই। সব থেকে প্রয়োজন ছিল যাকে, যাকে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ভাবতাম তাকেও আমি আমার পাশে পাই নাই। হয়তো আমাকে সাপোর্ট করার মতো কেউ থাকলে আজকে এই মৃত্যুটা আমার হইতো না। সেকেন্ড টাইমের প্রিপারেশন নেয়ারও আমার কোনো মানসিক বা শারীরিক শক্তি নাই। আমার জীবনটা এখানেই থেমে গেলো।

মা আমাকে বুঝে নাই উল্লেখ করে সুইসাইড নোটে পিউ আরও লিখেন, মায়ের কাছে গিয়ে মাঝে মধ্যে কাঁদতাম, মাও বুঝে নাই আমাকে। আমি একটা বোঝা সবার কাছে। আমার মৃত্যুর জন্য আমার এই বড় বড় স্বপ্নগুলোই দায়ী। আমি আমার বাবা, মার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি নাই। আমাকে শেষবারের মতো দেখতে চাইলে নদীর জলেই খুঁজো। আমার মৃত্যুটা এভাবেও চাই নাই, ভালো থাইকো সবাই। আমি আমার এই জীবনটা আর নিতে পারছি না। আমারে মাফ করে দিও সবাই। এভাবে দম বন্ধ করে বাঁচতে পারতেছি না আর।
 

পাঠকের মতামত

সন্তান যদি স্বাভাবিকভাবে পড়াশোনা করে এবং চেষ্টা করে অবশ্যই ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারবে,যে বাবা মারা নিজেরাই পড়াশোনা করে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারেনা তারা কিভাবে সন্তানের উপর চাপ দেয় যে ডাক্তার, ব্যারিস্টার, ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে? যাইহোক আত্নহত্যা সমাধান নয়,বাবা মা র সাথে ভালো করে কথা বলে সমাধান করা যেতো এমন বাবা মার বিচার হওয়া উচিৎ আত্নহত্যায় বাধ্য করেছে

শারমিন
২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২:২৫ অপরাহ্ন

বিশ্ববিদ্যালয় না পড়েও এমনকি পড়া-লেখা না করেও অনেক কিছু করা যায়।অভিভাবক গণ কবেযে বুঝমান হবেন।

N.Alom
১ মে ২০২৪, বুধবার, ২:৫১ অপরাহ্ন

অভিভাবকে শেখার অনেক কিছু আছে !

Khan.
১ মে ২০২৪, বুধবার, ১২:২৬ অপরাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status