ঢাকা, ১৭ মে ২০২৪, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

‘টিকটকার’ তরুণী ও তার বোনকে নিয়ে লাপাত্তা ছাত্রলীগ সভাপতি

ফেনী প্রতিনিধি

(২ সপ্তাহ আগে) ৩০ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৫ পূর্বাহ্ন

mzamin

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়ের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে হাজির হন ঢাকার ‘টিকটকার’ তরুণী শিমরান সাদিয়া। সঙ্গে ছিলেন তার চাচাতো বোন। এরপর পরই বিজয় তাদের নিয়ে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। এদিকে সংগঠনবহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে ইকবাল হাসান বিজয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ। অপরদিকে শিমরান সাদিয়াকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করায় স্থানীয় চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনকে অভিযুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে তরুণী। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিগত দু'দিন সোনাগাজী ফের আলোচনায় এসেছে।

অভিযুক্ত ইকবাল হাসান বিজয় সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামা বাজার এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে। বিজয় ফেনীর পুবালি সংসদ ও রাজধানীর একটি নাট্যসংগঠনের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করেন। ভুক্তভোগী শিমরান সাদিয়া টিকটকার ও মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন।

জানা যায়, গত রোববার দুপুরে শিমরান সাদিয়া তার এক চাচাতো বোনকে নিয়ে ঢাকা থেকে ফেনীর সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এসে ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়ের সঙ্গে তার ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সহযোগিতা চান। এ সময় তরুণী নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা বলেও দাবি করেন।

বিজ্ঞাপন
পরে তরুণীর কথা অনুসারে চারজন গ্রাম পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সাদিয়াকে ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের বাড়িতে পাঠান ইউপি চেয়ারম্যান।

এদিকে ঘটনা জানাজানি হওয়ায় স্থানীয় মানুষজন ও সাংবাদিকরা বিজয়ের বাড়িতে যায়। এসময় বিজয় ঢাকা থেকে আসা মেহমানদের সঙ্গে কথা শেষ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজ ঘরে যায়। একপর্যায়ে বিজয় বাড়ির পেছন দিক দিয়ে সাদিয়া ও তার চাচাতো বোনকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
গ্রাম পুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমরা বিজয়ের বাড়িতে পৌঁছালে দরজার সামনে সে আমাদের অপেক্ষা করতে বলে। এসময় তরুণী ও সঙ্গে থাকা মেয়েকে ঘরে নিয়ে যায়। অনেকক্ষণ ধরে আমরা অপেক্ষা করলে জানতে পারি বিজয় মেয়ে দুটিকে নিয়ে বাড়ির পিছন দিয়ে অন্যত্র চলে যায়।
এ ব্যাপারে চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, দুপুরের দিকে এক তরুণী সঙ্গে আরও একজন মেয়েকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে এসে ছাত্রলীগ সভাপতি বিজয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বলেন। তখন তারা বিজয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চান। আমি গ্রাম পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে তাদের বাড়ি পাঠিয়েছি। গ্রাম পুলিশ সদস্যরা বাইরে অবস্থানকালে বিজয় তাদের নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যান।
তিনি আরো বলেন, রোববার মধ্যরাতে ওই তরুণীর সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছে। তখন বিজয় তাদের ফেনী শহরের মহিপাল এলাকায় জিম্মি করে রেখেছে বলেও তরুণী আমাকে জানিয়েছেন।

তবে প্রেমের বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা বিজয় বলেন, আমি ছাত্রলীগ নেতা, নাট্যকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সমাজকর্মী। আমার সঙ্গে অনেকের পরিচয় রয়েছে। এর আগেও আমার বাড়িতে অনেকে বেড়াতে এসেছেন। সাদিয়াকে নিয়ে বানোয়াট ঘটনা ঘটায় আমি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এসবের প্রতিকার চাইতে আমি এবং সাদিয়া মামলা করবো।

তবে ‘বিজয়ের চাপে পড়ে’ সাদিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করে বলে জানা যায়। সেসব বার্তায় সাদিয়া বলেন, আমি শুটিংয়ের কাজে সোনাগাজীতে গেলাম। পরিচিত হওয়ার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছি। বিজয় আমার পূর্ব পরিচিত। চেয়ারম্যানের কথা বার্তায় বুঝতে পারলাম, চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিজয়ের দ্বন্দ্ব আছে। চেয়ারম্যান মিলন আমাকে ব্যবহার করে বিজয়কে ঘায়েল করতে চেয়েছে। বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল করে ও উল্টাপাল্টা নিউজ গণমাধ্যমে প্রকাশ করে আমার এবং বিজয়ের বড় ধরনের ক্ষতি করেছে। এখন আমার মরা ছাড়া উপায় নাই।

সাদিয়া বলেন, ভিডিও বার্তা দিতে আমি বাধ্য হয়েছি। চেয়ারম্যানের সহযোগিতা চাইতে গিয়ে বিপদে পড়েছি, চেয়ারম্যান এর শাস্তি পাবে। আমার জন্য নিরপরাধ একটি ছেলে (বিজয়) বিপদে পড়েছে। প্রয়োজনে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলবো।
তরুণীর ভিডিও বার্তার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, মেয়েটি এখন বিজয়ের শেখানো মতে ভিডিও বার্তা পোস্ট করছে। তার সঙ্গে বিজয়ের কোনো দ্বন্দ্ব নেই।

এদিকে সংগঠনবহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে ইকবাল হাসান বিজয়কে কারণ দশার্নোর নোটিশ দিয়েছে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ।
সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন সাইমুন বলেন, তিন কর্মদিবসের মধ্যে বিজয়কে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুর রহমান রাসেল বলেন, অভিযোগের সত্যতা পেলে বিজয়ের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুদ্বীপ রায় পলাশ বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে অবগত হয়েছি। তবে থানায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে।

পাঠকের মতামত

সোনাগাজীর সোনার ছেলে ছাত্রলীগের সোনার কর্মী বিজয়কে জাতীয় সোনার পুরস্কারে ভূষিত করার জোরদার দাবী জানাচ্ছি!

Anamul Hasan
৩০ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১:০১ অপরাহ্ন

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status