ঢাকা, ১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

দুই বছর ধরে টয়লেটে বন্দি সুজিতকে উদ্ধার

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
৩০ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার
mzamin

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের  কাশিপাড়া এলাকার নরেন্দ্র দাসের ছেলে সুজিত দাস (২৯)। পেশায় জেলে। গত দুই বছর নিখোঁজ ছিলেন তিনি। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে থানা থেকে ২ শত গজ দূরে তাদের বাড়ির নোংরা টয়লেটে দরজার তালা ভেঙে উদ্ধার করেছেন নাসিরনগর থানার পুলিশ। পরিবারের দাবি মানসিক ভারসাম্যহীন সুজিত যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে। তাই আমাদের ও অন্যদের নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে টয়লেটে আটকে রেখেছি। পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, জেলে পরিবারে জন্ম নেয়া সুজিত নিয়মিত নদীতে মাছ ধরতো। সেই মাছ বিক্রি করেই সংসার চালাতো। এক সময় হঠাৎ সুজিত নিখোঁজ হয়ে যায়। এলাকায় দীর্ঘদিন সুজিতের দেখা মিলে না।

বিজ্ঞাপন
বিষয়টি ঘিরে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা চলতে থাকে। অনেকে ধারণা করেন সুজিত কী বেঁচে আছেন? নাকি মারা গেছেন। আবার কেউ কেউ বলতে থাকেন হয়তবা কোন কারণে সুজিত ভারতে চলে গেছেন। গতকাল সোমবার বিকেলের দিকে নাসিরনগর থানায় খবর আসে থানা থেকে মাত্র ২ শত গজ দূরে সুজিতদের বাড়ির একটি নোংরা অন্ধকার টয়লেটের ভেতরে গত দুই বছর ধরে তালা দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে সুজিতকে। টয়লেটের নিচের অংশে ছোট একটি ফাঁকা দিয়ে সুজিতকে মাঝে মধ্যে কিছু খাবার দেয়া হয়। সুজিতও দিনে রাতে ল্যাট্রিনের ফ্লোরে শুইয়ে থেকে ওই ফাঁকা দিয়ে বাহিরের দিকে চেয়ে থাকেন। মাঝে মধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি করেন। আর এভাবেই ওই ল্যাট্রিনের ভেতরে কেটে গেছে সুজিতের দুইটি বছর। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে সুজিতদের বাড়িতে গিয়ে বন্দি দৃশ্য দেখে আশ্চর্য হন। হতবাক ও বিস্মিত হত নাসিরনগরের লোকজন। এবং সকলেই এমন অমানবিক কান্ডের পেছনে কি কারণ আছে? তদন্ত সাপেক্ষে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান। পুলিশ ওই টয়লেটের তালা ভেঙে ভেতর করে সুজিতকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, গত পাঁচ বছর আগে সুজিত একটি হত্যাকান্ড ঘটিয়েছিল। তখন থেকেই সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। পাগলের প্রলাপ ভাঙচুর ও মানুষকে মারধর করতে থাকে। আবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলছেন, সম্পত্তির জন্যই সুজিতকে এভাবে বন্দি করে রেখেছেন। সুজিতের মা পরিবার ও মা আরতি রাণী বলেন,  মাথায় সমস্যা থাকায় যাকে দেখে তাকেই মারধর করতে থাকে। সে মানসিক ভারসাম্যহীন। একটি হত্যা মামলার আসামিও। নিজেদের ও অন্য লোকজনের নিরাপত্তার জন্য ল্যাট্রিনে আটকে রাখতে বাধ্য হয়েছি। এ বিষয়ে আপন ভাই অনিল দাস বলেন, সুজিত যদি কাউকে হত্যা করে ফেলে এর দায়দায়িত্ব কে নিবেন? নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সোহাগ রানা বলেন, ল্যাট্রিন থেকে একটি মানুষের শব্দ কানে ভেসে আসছে। এমন সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ওই বাড়িতে যায়। জানতে পারি ল্যাট্রিনে সুজিত এক বছরেরও অধিক সময় ধরে বন্দি আছে। যুবককে উদ্ধার করে আপাতত চিকিৎসা করানো হচ্ছে। পরবর্তীতে পরিবার ও চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status