ঢাকা, ১৬ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

দাবদাহে রাজবাড়ীতে পানির জন্য হাহাকার

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
৩০ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার
mzamin

সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ীতেও চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় জনজীবনে নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। তীব্র দাবদাহে পুড়ছে জেলার মানুষ অন্যদিকে নতুন করে প্রায় সব উপজেলাতে দেখা দিয়েছে তীব্র পানি সংকট। এতে যেমন বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন, তেমনি ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন।
জানা গেছে, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে খরায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। যার ফলে নলকূপে (টিউবওয়েল) পানি উঠছে না। পানির অভাবে গৃহস্থালী কাজকর্ম যেমন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি জমিতে সেচ দিতে পারছে না কৃষক। সেচের অভাবে নষ্ট হচ্ছে ফসলাদি। বালিয়াকান্দির বেশকিছু স্থানে নলকূপগুলোতে বেশ কয়েকদিন ধরে পানি উঠছে না। ফলে সীমাহীন কষ্টে আছেন অনেক পরিবার। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রচণ্ড গরম।

বিজ্ঞাপন
সবকিছু মিলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে মানুষের জীবনযাত্রা। পানি না ওঠার কারণ হিসেবে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ভৌগোলিক কারণে বৃহত্তর ফরিদপুরের মধ্যে বালিয়াকান্দি উপজেলাটি ভিন্ন। বর্ষা মৌসুমে পানির স্তর ১৫ থেকে ২২ ফুট নিচে চলে যায়। আর শুষ্ক মৌসুমে বিশেষ করে এপ্রিল, মে ও জুন মাসে সেটা নেমে দাঁড়ায় ৩২ ফুট নিচে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বসানো নলকূপগুলোর পাম্পিং ক্ষমতা ২০ থেকে ২৪ ফুট। যার কারণে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে পানি থাকে না। শুধুমাত্র সরকারিভাবে বসানো তারা ও সাবমারসিবল পাম্প দেয়া নলকূপে পানি থাকে। বালিয়াকান্দির সদর ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত কয়েকদিন হলো বালিয়াকান্দি উপজেলার বিভিন্নস্থানে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে টিউবওয়েল পানি উঠছে না। বাড়ির গৃহস্থালির কাজ করার জন্য অন্য জায়গা থেকে পানি আনতে হচ্ছে। পানি না ওঠায় মাঠে ফসল চাষ করা যাচ্ছে না। জমিতে সেচ দিয়ে পাটের চারা রোপণ করতে হবে। কিন্তু পানি না ওঠায় তিনি পাটের বীজ রোপণ করতে পারছেন না। পানির এ সমস্যা শুধু বালিয়াকান্দিতেই নয়। রাজবাড়ী সদর, পাংশা, কালুখালীতেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই উপজেলার গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ নলকূপে পানি উঠছে না। 
কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের দামকুদিয়া গ্রামেও একই চিত্র। গান্ধিমারা বাজারের ব্যবসায়ী আহাম্মদ আলী বলেন, বাজারের সবগুলো নলকূপ নষ্ট। কোনোটিতেই পানি ওঠে না। আমার দোকানে মোটর বসানো আছে। তারপরও সকালে আর রাতে খুব অল্প পরিমাণে পানি ওঠে। পাংশা উপজেলার সরিষা, বাবুপাড়া, কলিমহর, মৌরাট, পাট্টা ইউনিয়নেও চলছে পানির সংকট। পাশাপাশি এসব এলাকার চাষিরা পানির অভাবে পাটের জমিতে সেচ দিতে পারছে না। পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের মিয়া পাড়ার বাসিন্দা শাবিনা আক্তার বলেন, কিছুদিন হলো টিউবওয়েলে পানি নেই। একই টিউবওয়েলের লাইনের সঙ্গে মোটর সংযু্‌ক্ত করা থাকলেও সেখান থেকেও পানি উঠছে না।
রাজবাড়ী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু জাকারিয়া বলেন, গ্রীষ্মকালে খরায় পানির স্তর নিচে নেমে যায়। ফলে টিউবওয়েল থেকে পানি ওঠে না। আমাদের এ অঞ্চলে বেশিরভাগ পানির লেয়ার ২৫ ফুটের নিচে নেমে গেছে। ফলে এখন টিউবওয়েল ও চাপকল দিয়ে পানি উঠছে না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের বৃষ্টির অপেক্ষা করতে হবে। তবে যারা সাবমারসিবল পাম্প অথবা তারা টিউবওয়েল বসিয়েছে তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
 

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status