বাংলারজমিন
সরজমিন মনসুর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়
‘গরমে হাতপাখা ও বই খাতা দিয়ে গা জুড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা’
রিপন আনসারী, মানিকগঞ্জ থেকে
৩০ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবারবেলা সাড়ে ১২টা। তীব্র দাবদাহের সঙ্গে বিদ্যুতের লোডশেডিং। প্রত্যেক শ্রেণিকক্ষে প্রায় শিক্ষার্থীর কাছে হাতপাখা। আবার অনেকেই বই-পুস্তক দিয়ে বাতাস নিচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখা গেল মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কেল্লাই মনসুর উদ্দিন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। ৪০০ শিক্ষার্থীর কোলাহলে মুখরিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা তীব্র দাবদাহে হাঁপিয়ে উঠেছে। পাশাপাশি শিক্ষকরাও অসহনীয় গরমে ক্লান্ত।
সরজমিন দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা তীব্র গরমে দুর্বিষহ অবস্থায় সময় পার করছে। ৬ ঘণ্টার শিক্ষা কার্যক্রমে প্রায় ৩ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। বিদ্যুতের এই দুরবস্থার সঙ্গে রেকর্ড মাত্রা দাবদাহ শিক্ষার্থীদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। উপস্থিতিও তুলনামূলক কম।
বিজ্ঞাপন
হিমা আক্তার বলেন, গরমে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব এবং ক্লান্তি অনুভব হয়। তার মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ক্লাসে বসে থাকা যায় না। বাসা থেকে হাতপাখা নিয়ে এসেছি। কিন্তু গরমের মাত্রা এতই বেশি তা কোনো কাজে আসে না। খাদিজা বলেন, কাঠফাটা রোদ এবং তীব্র গরমের মধ্যে প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে স্কুলে আসতে হয়। আবার বিকালে রোদ মাথায় নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়। এই অবস্থায় ক্লাস করতে মোটেও ভালো লাগে না। সুমাইয়া ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ চলে গেলে ক্লাসের ভেতর বসে থাকা যায় না। স্কুল বন্ধ হলে আমরা বাড়িতে নিরাপদে থাকতে পারতাম। এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মুক্তারুন্নাহার বলেন, প্রচণ্ড গরমে শিক্ষার্থীদের নাজেহাল অবস্থা। অনেকে মাথা ঘুরে অসুস্থ হয়ে পড়ে যাচ্ছে। এই তীব্র গরমের মধ্যে ১ ঘণ্টার একটি ক্লাস নেয়া হয়। তার মধ্যে চলে বিদ্যুতের লোডশেডিং। গ্রীষ্মকালীন ছুটি এগিয়ে এনে যদি এই সময় দেয়া হতো কিংবা মর্নিং শিফটের ব্যবস্থা চালু করা হতো তাহলে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হতো। শিক্ষক শেখ আসিফ ইকবাল বলেন, ক্লাস চলাকালীন কিছুক্ষণ পরপরই শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে আসছে মাথাব্যথা, পেট ব্যথাসহ গরমজনিত কারণ নিয়ে। যখন বিদ্যুৎ না থাকে তখন আমরা এবং ছাত্রছাত্রীরা বিমর্ষ হয়ে পড়ি। তাছাড়া প্রচণ্ড রোদ ও গরম উপেক্ষা করে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে আরও দুর্ভোগে পড়ে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কবীর উদ্দিন বলেন, তীব্র দাবদাহের কারণে বিদ্যালয়ে উপস্থিতিও কিছুটা কমে গেছে। দু’দিনে কয়েকজন ছাত্রছাত্রী গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আজকেও তিন জন অসুস্থ হলে তাদের ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা আমার কাছে আবেদন করেছে মর্নিং শিফটের জন্য।