দেশ বিদেশ
বিশ্বনাথে মেয়র-কাউন্সিলর গ্রুপের সংঘর্ষ, উত্তেজনা, আহত ১০
বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি
২৯ এপ্রিল ২০২৪, সোমবারসিলেটের বিশ্বনাথে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। মেয়র মুহিবুর রহমান ও কাউন্সিলররা কয়েক দিন মুখোমুখি অবস্থান নেয়ার পর গতকাল প্রকাশ্যে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি ইটপাটকেল নিক্ষেপ ছাড়াও মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে পথচারী নারীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও দোকানপাট। ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় বিশ্বনাথ-রামপাশা-লামাকাজী সড়কে প্রায় আধা ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে বিশ্বনাথ শহরে সর্তক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় মেয়রের পক্ষের আহত ইংরেজ আলী, সমুজ আলী, আনোয়ার আলী’সহ বেশ কয়েক জনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে মেয়র-কাউন্সিলরদের দ্বন্ধে বিশ্বনাথ চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
অন্যদিকে একই সময়ে প্রায় একশ গজের মধ্যে পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রাসনা বেগমের উপর ‘হামলার প্রতিবাদে এবং পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের গ্রেপ্তার ও অপসারণের’ দাবীতে প্রতিবাদ সভা আহবান করে পৌর আওয়ামী লীগ। কিন্তু সভাগুলো শুরুর পূর্বেই উভয় পক্ষের পক্ষে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এ সময় মেয়রের বাসা লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন পৌর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ইট পাটকেল নিক্ষেপের সময় কয়েকটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনা সংগঠিত হয়। বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের আহবায়ক আব্দুল জলিল জালাল বলেন, পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রাসনা বেগমের উপর হামলার প্রতিবাদে এবং পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের গ্রেপ্তার ও অপসারণের দাবিতে অনুষ্ঠিত পৌর আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভায় মেয়র মুহিবুর রহমানের বাসা থেকে তার (মুহিব) পক্ষের সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়, সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তা প্রতিহত করেছি। বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছেন। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে সর্তক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে পৌরসভার ‘দক্ষিণ মিরেরচর কমিউনিটি ক্লিনিক’ এলাকায় হামলার শিকার হন পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর রাসনা বেগম। ওই রাতেই এদিকে পৌরসভার নারী কাউন্সিলর রাসনা বেগমের উপর হামলার প্রতিবাদে পৌর এলাকায় সর্বস্তরের নাগরিকের ব্যানারে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এর পরদিন বুধবার ‘মারধর, শ্লীলতাহানি ও মেয়রের নির্দেশে গাড়ি দিয়ে প্রাণে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান’কে প্রধান ও পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফজর আলী, ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বারাম উদ্দিন’সহ ৮ জনের নাম উল্লেখ এবং আরোও ৫ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন মহিলা কাউন্সিলর রাসনা বেগম। এরপূর্বে গত ১৬ই এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবরে ‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯ এর ৩৮ ধারা মোতাবেক’ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ‘ভারসাম্যহীনভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার, কাউন্সিলর ও জনগণের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ প্রদর্শন ও গালিগালাজ, স্বজনপ্রীতি, ময়লা-আবর্জনার পরিস্কার করা’সহ ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ’র অভিযোগ এনে ‘অনাস্থা’ প্রস্তাব দেন পৌরসভার দুই প্যানেল মেয়রসহ ৭ কাউন্সিলর।