বাংলারজমিন
নড়াইলে জোরপূর্বক বসতবাড়ি দখলের চেষ্টা, খালি স্ট্যাম্প ও চেকে স্বাক্ষর, মামলা
নড়াইল প্রতিনিধি
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার, ৮:৫৫ অপরাহ্ন
নড়াইলে হিন্দুপল্লীতে ১ লাখ টাকা চাঁদা আদায় এবং ৩৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর ও ফাঁকা চেক ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত রামপ্রসাদ সিংহ সোমবার নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন- নড়াইল পৌরসভার ভওয়াখালি এলাকার মোস্তফা কামাল মোস্ত (৪৮), সদরের শাহাবাদ ইউনিয়নের জুড়ালিয়া গ্রামের আবদুল হালিম (৩৫), চানপুর গ্রামের ইমরুল (৪০), বিষ্ণুপুর গ্রামের বুলবুল (২৮) ও টিটুল (৩২)। আসামিদের মধ্যে মোস্তফা কামাল মোস্ত নড়াইল পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র। মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামি মোস্তফা কামাল মোস্ত চানপুর গ্রামে রামপ্রসাদের বাড়ির নিকট একটি পশুপালনের খামার করেছেন। কিন্তু কোনো পশু সেখানে নেই। মাঝেমধ্যে মোস্ত ওই খামারে যান এবং তার সঙ্গীদের নিয়ে রামপ্রসাদের জায়গাজমি ও বাড়িঘর জবরদখলের উদ্দেশ্যে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। বন্দুক ও লোহার রড দেখিয়ে ভয় দেখান। সম্প্রতি জোরপূর্বক বাড়িঘরসহ জায়গাজমি ঘিরে নেয়ার চেষ্টা করলে রামপ্রসাদ বাধা দেন। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এ ঘটনার জের ধরে আসামি ইমরুল ও টিটুল গত ৭ই সেপ্টেম্বর সকালে রামপ্রসাদকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় মোস্তর খামারে। এরপর খামারে আটকে রামপ্রসাদকে বেদম মারপিট করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং বাড়িঘরসহ সব জমি লিখে দেয়ার জন্য হুমকি দেয়। রামপ্রসাদকে দিয়ে বাড়িতে তার স্ত্রী হাসি সিংহ’র নিকট মোবাইল করায়ে ব্যাংকের চেক বই নিয়ে নেয়। এরপর আসামি হালিম ও বুলবুল জোরপূর্বক রামপ্রসাদকে অগ্রণী ব্যাংক, রূপগঞ্জ বাজার শাখায় নিয়ে চেকে স্বাক্ষর নেয়। স্বাক্ষর করা চেক জমা দিয়ে ১ লাখ টাকা উত্তোলনের পর রামপ্রসাদকে নড়াইল জেলা জজ আদালত এলাকায় স্ট্যাম্প বিক্রেতা মাসুদুর রহমানের দোকানে নিয়ে যায়। সেখান থেকে রামপ্রসাদের নামে ৩৫০ টাকার স্ট্যাম্প ক্রয় করে। আসামিরা আবারও রামপ্রসাদকে মোস্তর খামারে নিয়ে ওই স্ট্যাম্প গুলিতে স্বাক্ষর নেয়। আসামি হালিম চেক বই হতে আরেকটি ফাঁকা চেকের পাতা জোরপূর্বক ছিঁড়ে নেয়। এসব ঘটনা কাউকে জানালে তাকে ও তার পরিবারের সকলকে খুন করার হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয় আসামিরা। এ ঘটনার পর থেকে রামপ্রসাদ ও তার পরিবারের লোকজন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। নড়াইল সদর থানার ওসি শওকত কবির জানান, মামলা হওয়ার আগেই আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।