বাংলারজমিন

লক্ষ্মীপুর-ভোলা ফেরী চলাচল ব্যাহত, অপেক্ষায় ৫ শতাধিক যানবাহন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

১৫ এপ্রিল ২০২১, বৃহস্পতিবার, ১২:৩৬ অপরাহ্ন

লকডাউন ও অফিস বন্ধে লক্ষ্মীপুরে মজুচৌধুরীরহাট ফেরীঘাটে পণ্যবাহী যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। ফলে ঘাটের দু-পাড়ে আটকা পড়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক পণ্যবাহী যানবাহন। এতে করে নষ্ট হচ্ছে কাচাঁমাল। পাশাপাশি নদীতে নাব্যতা সংকটে ফেরী চলাচল ব্যাহত হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে নৌকায় করে নদী পারাপার হচ্ছেন যাত্রীরা।

চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বিআইডাব্লিওটিসি ও নৌ পুলিশ কর্মকর্তা বলছেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের কথা জানিয়েছেন তারা। তারা জানান, লকডাউন বাস্তবায়নে নৌপথে নৌকায় করে মানুষ পারাপার করতে দেয়া হবেনা।


বিআইডাব্লিওটিসি ও ফেরীঘাট সূত্রে জানা যায়, দেশের দক্ষিনাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ লক্ষ্মীপুরে মজুচৌধুরীরহাট-ভোলা এ নৌ-রুট দিয়ে যাতায়াত করে। লকডাউন ঘোষণার পর গত এক সপ্তাহ ধরে মজুচৌধুরীরহাট ও ভোলা ফেরীঘাটে আটকা পড়েছে পাঁচ শতাধিক বেশি পণ্যবাহী ট্রাকসহ ছোটবড় যানবাহন। এতে করে ট্রাকে পচঁন ধরেছে আলু, পেয়াজ ও রসুনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন রকমের কাঁচামাল।
প্রশাসনের তদারকি না থাকায় করোনা সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদী পথে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। বর্তমানে কলমিলতা, কাবেরী ও কিষানী নামে তিনটি ফেরী চলাচল করছে এ নৌ-রুটে।

ট্রাকচালক সফিক উল্যাহ, মহসিন ও রহিমসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, একদিকে লকডাউন, অন্যদিকে রমজান শুরু, পাশাপাশি নদীতে নাব্যতা সংকটের কারনে ঠিকমত ফেরী চলাচল করছেনা। গত এক সপ্তাহ ধরে পন্যবাহী ট্রাক নিয়ে ঘাটে বসে আছি। দুর্ভোগের কোন শেষ নেই। ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে আটকা পড়ার পর থাকা, খাওয়াসহ নানা সমস্যায় পড়ছেন চালকরা। এছাড়া ফেরী কর্তৃপক্ষ ভিআইপি নাম দিয়ে টাকার বিনিময়ে অন্য যানবাহন আগে ফেরীতে তুলছে বলে অভিযোগ করেন চালকরা। বেশিরভাগ ট্রাকে নিত্যাপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রয়েছে। অনেক ট্রাকে কাঁচামাল পচঁন ধরেছে। কবে ফেরী চলাচল স্বাভাবিক হবে, সে নিয়ে দু:চিন্তায় পড়েছেন চালক ও ব্যবসায়ীরা।

এ নৌ-রুটের বিভিন্ন স্থানে নতুন ডুবোচর জেগে উঠায় প্রতিদিন ৪/৮ ঘণ্টা ফেরী ডুবোচরে আটকে থাকতে হয়। জোয়ার আসলেই কিছুটা পানি বাড়ায় ফেরী চলাচল শুরু হলেও ফেরী কম থাকায় দিনের পর দিন ঘাটে না খেয়ে পড়ে থাকতে হয়। দ্রুত ঘাটে ফেরী সংকট সমাধান না করলে দুর্ভোগ আরো বাড়বে বলে জানান এ নৌ-রুটে চলাচলকারী চালকরা।

দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে নৌ পুলিশ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, লকডাউনের কারনে গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ে যেন যানজট দূর করা যায়।

বিআইডাব্লিওটিসির মজুচৌধুরীরহাট ফেরীঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. কাউছার জানান, লকডাউন, রমজানের কারনে গাড়ির চাপ বাড়ছে কয়েকগুন। পাশাপাশি নদীতে নব্যতা সংকটের কারনে ঠিকমত ফেরী চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে দু-পাড়ে কয়েকশ পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশাবাদ করেন তারা।

জেলা পুলিশ সুপার ড.এএইচ এম কামরুজ্জামান বলেছেন, লকডাউন বাস্তবায়নে নৌপথে নৌকায় করে মানুষ পারাপার করতে দেয়া হবেনা। যদি কেউ নৌকায় করে যেতে চায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া যানজট যেন দ্রুত সময়ে সমাধান হয়, সে বিষয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status