ভারত
মুসলিম তরুণী মুসকান মুখাগ্নি করলেন পাতানো ভাই ধ্রুব’র
বিশেষ সংবাদদাতা, কলকাতা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, সোমবার, ১:২২ পূর্বাহ্ন
সিনেমাতেই বোধহয় এমন হয়। কিন্তু জীবনের চিত্রনাট্যকারও কখনো লিখে ফেলেন এই রকম চিত্রনাট্য। যেমন হয়েছে আসামের তেলের শহর শিবসাগরের মুসকান বেগম এবং ধ্রুব মজুমদারের বেলায়। মুসলিম তরুণী মুসকান ভাই পাতিয়েছিলেন পিতৃমাতৃহীন ধ্রুব মজুমদারের সঙ্গে। মুসকানের নিজের ভাই না থাকায় ধ্রুবই তার জীবনের ধ্রুবতারা হয় ভাই হিসেবে। ধ্রুব’র দিদি না থাকায় মুসকানই তার জীবনের মুসকান হয়। মুসলিম রমণী ও হিন্দু যুবকের অনাবিল দিদি - ভাইয়ের সম্পর্ক দেখে বিস্মিত হতো সকলে। এরপর মুসকান বিয়ের পর চলে আসে শ্বশুরবাড়িতে। ধ্রুবও বিয়ে করে। তার একটি মেয়েও হয়। কিন্তু ধ্রুব’র অত্যাধিক নেশা করার প্রবণতায় তার স্ত্রী মেয়েকে নিয়ে তাকে ছেড়ে চলে যায়। ধ্রুব’র বোহেমিয়ান জীবন শুরু হয়। মদে ডুব দেয় সে। অবস্থা বেগতিক দেখে মুসকান তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। একবার নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টাও করে ধ্রুব। কিন্তু মুসকান পরম যত্নে আগলে রাখতেন ভাইকে। এর মধ্যে একদিন কাজে মুসকানকে জোড়হাট যেতে হয়েছিল। ফিরে এসে দেখেন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ধ্রুব। শুরু হয় থানা পুলিশের টানাটানি। অদম্য চেষ্টায় মুসকান সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে ধ্রুব’র মৃতদেহ উদ্ধার করে। শ্মশানে সৎকারের সময় মুসলিম দিদি হিন্দু ভাইয়ের মুখাগ্নি করেন। এতেই চটেছেন ন্যায়বাগিশরা। একজন মুসলিম রমণী হয়ে মুসকান কিভাবে হিন্দু সৎকারে সম্পৃক্ত হলেন! মুসকান জানাচ্ছেন , দিদি ভাইয়ের সম্পর্কে ধর্ম প্রতিবন্ধক হতে পারে না। রক্তের বন্ধনের বাইরেও থাকে মানসিক বন্ধন। যা কেউ অস্বীকার করতে পারে না। মুসকানের ধ্রবতারা চলে গেছে, হয়তো বিশ্বাসের ধ্রুবতারা জ্বলছে।