শেষের পাতা

করোনাভাইরাস

এন্টিবডি টেস্ট নিয়ে এখনই ভাবছে না সরকার

স্টাফ রিপোর্টার

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, শনিবার, ৯:১০ পূর্বাহ্ন

করোনা সংক্রমণের সামগ্রিক চিত্র পেতে এখনই এন্টিবডি টেস্টের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে না সরকার । আগে এন্টিজেন টেস্ট দেখে পরে এন্টিবডি টেস্টের দিকে যাবে স্বাস্থ্য বিভাগ। নতুন করোনাভাইরাস পরীক্ষা বাড়ানো ও দ্রুত ফল পেতে গত মাসে এন্টিজেন টেস্টের অনুমোদন দেয় সরকার।
এন্টিজেন টেস্টের কার্যকারিতা দেখে এন্টিবডি টেস্ট অনুমোদন দেয়ার বিষয়ে চিন্তা করা হবে বলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, মাত্র আমরা এন্টিজেন টেস্ট দিলাম। এটা তো এখনো চালুই হয়নি। এটা আগে কার্যকর হোক, শুরু হোক আমরা দেখি কী দাঁড়ায়। তারপর এন্টিবডি টেস্টের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা যাবে। আমরা চাই, মানুষ বেশি বেশি উপকার পাক। মানুষে যেটা দিয়ে বেশি উপকার পায় আমরা সেটাই করবো। মানুষের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তে মুখ বা নাক থেকে নমুনা নিয়ে এন্টিজেন টেস্ট করা হয়। অন্যদিকে শরীরে রোগের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি হয়েছে কিনা, তা দেখতে নমুনা হিসেবে রক্ত নিয়ে এন্টিবডি টেস্ট করা হয়। এন্টিজেন ও এন্টিবডি দুটোই র‌্যাপিড টেস্ট। তবে এন্টিজেনের ফলাফল পাওয়া যায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের মাথায়। এন্টিবডি টেস্টের ফলাফল পেতে কয়েক ঘণ্টা লাগে। দেশে নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের পুরো চিত্র সঠিকভাবে বুঝতে এন্টিবডি টেস্ট চালুর পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম। দেশের বিশিষ্ট এই ভাইরোলজিস্ট বলেন, যাদের এন্টিবডি আছে তাদের পরবর্তীতে করোনাভাইরাস আক্রমণ করবে না- এটা মোটামুটি জানা যেত। একটা জনগোষ্ঠীর মধ্যে কতভাগ লোক এন্টিবডি নেগেটিভ, এই রোগের ঝুঁকিতে আছে তা বোঝা যেত। তারা নিজেরাও বুঝতে পারত ঝুঁঁকিতে আছে। সে হিসেবে সতর্কতা অবলম্বন করতে পারতো। নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই এন্টিবডি টেস্ট চালু করতে পরামর্শ দিচ্ছে কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
সর্বশেষ ১৭ই সেপ্টেম্বর পরামর্শক কমিটির ১৯তম সভা শেষে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখন কোভিড-১৯ শনাক্তে শুধু আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হচ্ছে। যা তুলানমূলকভাবে কম। পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ালে আরো বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই কমিটি মনে করে, পিসিআর, এন্টিজেন ও এন্টিবডি টেস্ট- একসঙ্গে তিনটি পরীক্ষা চালালে তা সংক্রমণ মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এখন সেরোসার্ভিল্যান্স নিয়ে কাজ করার সময় এসে গেছে, এজন্যও এন্টিবডি টেস্ট চালু করা প্রয়োজন। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণের পুরো চিত্র বুঝতে এন্টিবডি টেস্ট শুরু করা জরুরি। সেরোসার্ভিলেন্স ছাড়াও প্লাজমা থেরাপির জন্য রক্তদাতার শরীরের এন্টিবডির পরিমাণ জানা দরকার। যার শরীরে অনেক এন্টিবডি আছে, তার প্লাজমা আক্রান্ত রোগীকে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এজন্য আমরা চাই এন্টিবডি টেস্টও চালু হোক। তবে এন্টিবডি টেস্ট এন্টিজেন টেস্টের মতো এখনই এত জরুরি নয় বলে মনে করেন তিনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বলেন, দেশে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন এলে এন্টিবডি টেস্ট লাগবে। ভ্যাকসিন কে আগে পাবে তা ঠিক করতে এন্টিবডির মাত্রা দেখতে হবে। এ বিষয়ে জাতীয় কমিটির পরামর্শ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন না দিলে আমরা তা করতে পারবো না। আমরা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status