বাংলারজমিন

ব্রি’র গবেষণা প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয়ের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, শনিবার, ৮:৩০ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি’র) খামার যন্ত্রপাতি গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এই প্রকল্পের বিভিন্ন বিভাগে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ এবং ব্যয়ের অভিযোগ প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। অভিজ্ঞজনদের মতে, সঠিক তদন্তে বেরিয়ে আসতে পারে প্রকৃত চিত্র।
জানা গেছে, প্রায় ৪৪ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি ২০১৯ সালে অনুমোদন লাভ করে। বর্তমানে প্রকল্পে উদ্ভাবন ও উন্নয়নের জন্য যন্ত্রগুলো হচ্ছে- হেড ফিড মিনি কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার বাইন্ডার, কমপ্যাক্ট রাইস মিল, স্ট্র রোপ তৈরি মেশিন। এই প্রকল্পে অন্তত ১০ জন বিজ্ঞানী যুক্ত থাকার কথা থাকলেও প্রভাব খাটিয়ে মূলত দুজন বিজ্ঞানীকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। ব্রি’র মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. দুরুল হুদা এ প্রকল্পটির উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করলেও তাকে বাদ দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে প্রকল্প পরিচালক করা হয়েছে দুরুল হুদার জুনিয়র ব্রি’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. একেএম সাইফুলকে। যদিও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে মহাপরিচালকের দাবি, প্রকল্প পরিচালক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি।
ব্রি’র এক বিজ্ঞানী পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রকল্পে হোল ফিড মিনি কম্বাইন হারভেস্টার উদ্ভাবন/উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই কোটি টাকা। যা ব্রি ইতিমধ্যে উদ্ভাবন করে ফেলেছে। এটির আধুনিকায়ন ও উন্নয়ন করতে সর্বোচ্চ ব্যয় হবে ১৫-২০ লাখ টাকা। হেড ফিড মিনি কম্বাইন হারভেস্টার উদ্ভাবন/উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। এটি জাপান থেকে আমদানি করলে সর্বোচ্চ ব্যয় হবে প্রায় ২২ লাখ টাকা। রিপার বাইন্ডার উদ্ভাবন/উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। এটি আমদানি করলে ব্যয় হবে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। ম্যানুয়াল রাইস ট্রান্সপ্লান্টার উদ্ভাবন/উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। এটি আমদানি করলে অথবা নিজেরাই তৈরি করলে ব্যয় হবে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। এ যন্ত্রটি ইতিমধ্যে ব্রি উদ্ভাবন করে ফেলেছে। পাওয়ার উইডার উদ্ভাবন/উন্নয়নের জন্য ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়ছে। এটি উন্নয়ন করলে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হবে।
রাইস প্ল্যান্টার কাম সার প্রয়োগ যন্ত্রটি উদ্ভাবন ও উন্নয়ন করতে ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আর এটি ব্রি ইতিমধ্যে উদ্ভাবন করে ফেলেছে। যার ব্যয় হয়েছে প্রায় আট লাখ টাকা। প্রকল্পে কমপ্যাক্ট রাইস মিল উদ্ভাবন/ উন্নয়নের জন্য ব্যয় ধরেছে ৫০ লাখ টাকা। এটি ৬-৭ লাখ টাকা ব্যয় করে উন্নয়ন করলে ব্যবহার করা যাবে।
এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কোনো ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না উল্লেখ করে এসব বিষয়ে প্রতিষ্ঠান মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, সকল নিয়ম মেনেই প্রকল্পের কাজগুলো করা হচ্ছে। অন্যান্য দেশের যন্ত্রপাতি আমাদের দেশের উপযোগী হবে না। আধুনিক, টেকসই, সহজলভ্য ও কৃষক উপযোগী যন্ত্রপাতি তৈরি করতে বছর বছর ধরে গবেষণার প্রয়োজন অর্থ খরচ করার বিকল্প নেই। ক্রয় করার যন্ত্রপাতির সঙ্গে গবেষণা কার্যক্রমের তুলনা করা যায় না। আমাদের দেশে খাদ্য উৎপাদনের যেমন স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হচ্ছে তেমনি যুগোপযোগী মানসম্মত নিজস্ব কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি করতে প্রতিনিয়ত গবেষণা চলছে। এই গবেষণা কাজে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই ব্যয় করা হচ্ছে। অতিরিক্ত অর্থব্যয় অর্থ অপচয়ের প্রশ্নই ওঠে না।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status