বাংলারজমিন

গৃহকর্ত্রীর নির্যাতনে হাসপাতালে গৃহকর্মী

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, শুক্রবার, ৮:২৫ পূর্বাহ্ন

গৃহকর্ত্রীর নির্মম নির্যাতনে মণি আক্তার (১২) নামের এক গৃহকর্মী হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। সে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার খামা গ্রামের আবদুল মোতালিবের মেয়ে। বর্তমানে সে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় একই উপজেলার তালদর্শী গ্রামের মরিয়ম নামের এক নারীকে অভিযুক্ত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন মণির পিতা আবদুল মোতালিব।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৮ মাস আগে পরিবারের লোকজনের অজান্তে পাশের গ্রামের মরিয়ম নামের এক নারী বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মণি আক্তারকে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে আজিমপুরের জবা বেগম নামের এক গৃহকর্ত্রীর বাসায় কাজের জন্য দেয়। পরবর্তীতে লোকমুখে জানতে পেরে মরিয়মের সঙ্গে যোগাযোগ করে মণির পরিবার। মণিকে ওই বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে দেয়ার কথা স্বীকার করে মরিয়ম। গত ২১শে সেপ্টেম্বর মরিয়মের সঙ্গে ওই বাসায় গিয়ে মণিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেয়ে ওই দিনই তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে তার পরিবার। বাড়িতে নিয়ে আসার পর গৃহকর্মী জেবা বেগমের নির্মম নির্যাতনের কথা পরিবারকে খুলে বলে মণি আক্তার। শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় গত সোমবার সন্ধ্যায় চিকিৎসার জন্য মণিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মণি জানায়, ‘পাশের বাড়ির মরিয়ম নামের এক নারীর মাধ্যমে ঢাকার আজিমপুর এলাকার রয়েল মিয়া ও জবা দম্পতির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজে যায়। কিছুদিন যেতেই গৃহকর্ত্রী জবা বেগম কারণে-অকারণে শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে। গত ১৫-২০ দিন ধরে তার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় গৃহকর্ত্রী জবা। কথায় কথায় গরম খুন্তি দিয়ে শরীরে ছ্যাঁকা দিতো। লাঠি দিয়ে হাতে-পায়ে বেদম পেটাতো। দাঁড়িয়ে লাথি দিতো। খাবারের জন্য ভাত দিতো না। দিলেও ৩-৪ দিনের পচা ভাত দিতো। না খেতে পারলে বলতো ‘খেতে হবে না’। ভাত রান্না করে সেটার ফ্যান দিতো-লবণ ছাড়া খাওয়ার জন্য। পানি খেয়েও অনেক দিন থেকেছি। ঘুমানোর জন্য বাথরুমের সামনে জায়গা দিতো। এমন করতে করতে আমি অসুস্থ হয়ে যাই। অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যাই।’
এ ব্যাপারে জানতে মরিয়মের ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি গৃহকর্মী কর্তৃক মণিকে নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেন। তিনি জানান, ওই বাসায় কাজ করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন মণি। পরে তাকে চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধপত্র খাওয়ানো হয়। অসুস্থ অবস্থায় মণিকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেয়ার সময় চিকিৎসার জন্য নগদ সহায়তাও করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন। পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদ হাসান বলেন, খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status