প্রথম পাতা

করোনায় মৃত্যু ৫০০০ ছাড়ালো

৫০.৪৭ ভাগই ষাটোর্ধ্ব

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, বুধবার, ৯:৩১ পূর্বাহ্ন

করোনার কারণে প্রতিদিনই মৃত্যুর মিছিল লম্বা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরো ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে সরকারি হিসাবে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫ হাজার ৭ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় দেশে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। করোনায় দেশে সবচেয়ে বেশি  জুলাই মাসে ১ হাজার ২৬৪ জন মারা গেছেন। সারা দেশে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষের বয়স ষাটোর্ধ্ব। সবচেয়ে কম মৃত্যু হয়েছে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে। করোনা সংক্রমণ শুরুর ১৯৯ দিন এবং মৃত্যুর ১৮৯ দিনের মাথায় করোনা রোগী মারা যাওয়ার এই পরিসংখ্যান দাঁড়ালো। এ হিসাবের বাইরেও গত ২০শে আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের দেয়া হিসাব মতে, করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ইতিমধ্যে দেশে ২ হাজার ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে ওয়ার্ল্ডমিটারের হিসাব মতে, বিশ্বে করোনার মৃত্যুর দিকে বাংলাদেশের অবস্থান ২৯তম আর সংক্রমণে ১৫তম। মৃত্যু ও সংক্রমণে বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সংক্রমণে ভারত দ্বিতীয় ও মৃত্যুতে তৃতীয় এবং ব্রাজিল মৃত্যুর দিকে দ্বিতীয় ও সংক্রমণে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনা সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য থেকে জানা যায়, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরো ১ হাজার ৫৫৭ জন। এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৫২ হাজার ১৭৮ জন শনাক্ত হলেন। এতে আরো জানানো হয়,  দেশে ১০২টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১৪ হাজার ২৪৪টি। পরীক্ষা করা হয় ১৪ হাজার ১৬৪টি। এখন পর্যন্ত ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৪৮৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭৩ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ ২ লাখ ৬০ হাজার ৭৯০ জন। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং এখন পর্যন্ত ১৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ করোনা শনাক্ত হয়েছেন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং মারা গেছেন ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ এবং ১১ জন নারী। এ পর্যন্ত পুরুষ মারা গেছেন ৩ হাজার ৮৯০ জন (৭৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ) এবং নারী ১ হাজার ১১৭ জন (২২ দশমিক ৩১ শতাংশ)।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের উপরে ১৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন এবং শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন। একদিনে বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৮, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪, রাজশাহী বিভাগে ১, খুলনা বিভাগে ৩, সিলেটে ১ এবং রংপুরে ১। ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জনের সবাই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ২৬১ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ হাজার ৩৩০ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩৩৩ জন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৬৩ হাজার ২২৪ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৭৯ হাজার ৫৫৪ জনকে। প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ১ হাজার ১৬ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৫১৭ জন। সর্বমোট ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫৮৯ জন। মোট কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৫ লাখ ২৫ হাজার ৯৯২ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৬ হাজার ৪০৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রান্ত ফোনকল এসেছে ৪৯ হাজার ৫৭৮টি এবং এ পর্যন্ত মোট ফোনকলের সংখ্যা ২ কোটি ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৩টি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, করোনায় দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ৭ জন। এর মধ্যে  চলতি সেপ্টেম্বর মাসে (২২ দিনে) মারা গেছেন ৭২৬ জন,  আগস্টে ১ হাজার ১৭০ জন, জুলাই মাসে ১ হাজার ২৬৪ জন,  জুনে ১ হাজার ১৯৭ জন, মে মাসে ৪৮২ জন, এপ্রিলে ১৬৩ জন এবং মার্চ মাসে মারা গেছেন ৫ জন। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে গত ৩০শে জুন।
সারা দেশে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষের বয়স ষাটোর্ধ্ব (২ হাজার ৫২৭ জন)। অর্থাৎ ৫০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। সবচেয়ে কম মৃত্যু হয়েছে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে। এদের সংখ্যা মাত্র ২৩ জন অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট মৃতের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী ৪২ জন (শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ), ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ১১৭ জন (২ দশমিক ৩৪ শতাংশ), ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ২৯১ জন (৫ দশমিক ৮১ শতাংশ), ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ৬৪৮ জন (১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ) এবং ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ১ হাজার ৩৫৯ জন (২৭ দশমিক ১৪ শতাংশ)।

বিভাগ অনুযায়ী, এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে ২ হাজার ৪৬৭ জন (৪৯ দশমিক ২৭ শতাংশ), চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৩৯ জন (২০ দশমিক ৭৫ শতাংশ), রাজশাহী বিভাগে ৩৩২ জন (৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ), খুলনায় ৪২০ জন (৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ), বরিশালে ১৮৫ জন (৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ), সিলেট বিভাগে ২২২ জন (৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ), রংপুর বিভাগে ২৩৫ জন (৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ) এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০৭ জন (২ দশমিক ১৪ শতাংশ)।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনা রোগী প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ই মার্চ। আর প্রথম করোনা রোগী মারা যায় ১৮ই মার্চ। বিশ্বে গত বছরের ৩১শে ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে করোনা রোগী প্রথম শনাক্ত হয়। এরপর ভাইরাসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং মহামারি রূপ নেয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status