বাংলারজমিন

পুরনো মসজিদের পাশেই ‘মডেল মসজিদ’ নির্মাণ নিয়ে নানা প্রশ্ন

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে

২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার, ৮:১১ পূর্বাহ্ন

বিশ বছরের পুরনো মসজিদ আছে। অথচ ওই পুরনো মসজিদের মাত্র ৫০ গজের মধ্যে আরেকটি ‘মডেল মসজিদ’ নির্মাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি কুচক্রী মহল। মনোহরগঞ্জের দিশাবন্দ গ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ প্রকল্পের এ মসজিদ নির্মাণ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র  নির্মাণের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পের অংশ হিসেবে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে গত ২০১৯ সালের ১১ই নভেম্বর সম্পত্তি অধিগ্রহণের জন্য সম্পত্তির মালিক মো. আব্দুল মান্নান, গোলাম ফারুক ও নুরু মিয়াকে নোটিশ প্রদান করে অবহিত করা হয়। পরে সম্পত্তির মালিকগণ কুমিল্লা জেলা প্রশাসককে লিখিত আপত্তি জানান। এই সম্পত্তি তাদের তিন ভাইয়ের বসতবাড়ির জন্য নির্ধারিত। এমনকি মনোহরগঞ্জে বাড়ি করার মতো তাদের আর কোন সম্পত্তি নেই। ইতিপূর্বেও এই সম্পত্তিতে উপজেলা পশুসম্পদ অধিদপ্তর স্থাপনের জন্য ২০১৫ সালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক অধিগ্রহণ করার জন্য নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশ প্রাপ্তির পর ভূমির উল্লিখিত মালিকগণ জেলা প্রশাসক বরাবর আপত্তি পেশ করেন । তাদের আর্জি ও  আপত্তি শোনার পর সার্বিক দিক বিবেচনা করে বসতবাড়ির জন্য নির্ধারিত ভূমি হিসাবে মানবিক বিবেচনায় জেলা প্রশাসক গত ২০১৫ সালের ৯ই এপ্রিল অবমুক্ত করার আদেশ দেন। এল এ ১৫/২০১৪-২০১৫ কেসের সম্পত্তিতে স্কুল বসতঘর ও অন্যান্য স্থাপনাসহ বহু মূল্যবান গাছ লাগানো আছে এবং চতুরপাশে ও সামনে রাস্তার পাশে পাকা দেয়াল করা আছে। ওই সম্পত্তিতে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে মাটি ভরাট করে বসবাসের উপযুক্ত করা হয়েছে।  
অথচ, ওই কুচক্রী মহলের জোর প্রচেষ্টায় ওই সম্পত্তি পুনরায় অধিগ্রহণ করার চিঠি দেয়া হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ প্রকল্পের এ মসজিদ নির্মাণের সৎ উদ্দেশ্য আজ সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এল এ কেসের স্থান সমূহে একই সম্পত্তি আবদুল মান্নান গংদের দখলে ও মালিকানাধীন এক একর (১২০ শতাংশ) যা রাস্তার পাশ থেকে শুরু। আর অধিগ্রহণ করার প্রস্তাব ৪৩ শতাংশ। অথচ অধিগ্রহণ চূড়ান্ত করার পূর্বেই উল্লিখিত সম্পত্তির মাঝখানে লাল নিশান টানানো হয়েছে। ৪৩ শতক জায়গা অধিগ্রহণের অজুহাতে গোটা জমিটাই বসবাসের অযোগ্য করে দেয়ার হীন প্রচেষ্টা চলছে- যা মালিকদেরকে এলাকায় বাস্তুহারা করার শামিল। গত ১০ই আগস্ট পুনরায় অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত ও দখল গ্রহণ করার পত্র প্রেরণ করা হয়। পত্রে আবদুল মান্নান গংদের মালিকানাস্বত্ব লাভ করে থাকলে তার কাগজপত্র ও দলিল প্রর্দশন করে গত ৩রা সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের দপ্তরে উপস্থিত হতে বলেন। তারা উপস্থিত হলেও জেলা অধিগ্রহণ কর্মকর্তার দেখা পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী জানান, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিশেষ প্রকল্পের এ মসজিদ নির্মাণ খুবই ভালো উদ্যোগ। মানুষ মরণশীল কিন্তু তার মহৎ কাজেই তাকে অমর করে রাখে হাজার বছর ধরে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক মানুষ তাদের হীনস্বার্থ হাসিলের জন্য পুরনো মসজিদের ৫০ গজের মধ্যে আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করে প্রধানমন্ত্রীর মহৎ উদ্দেশ্য ও তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শুভাশীষ ঘোষ বলেন, তাদের অভিযোগের শুনানি শেষে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী আমরা মসজিদের জায়গার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status