শেষের পাতা
আল্লামা শফীর জানাজায় লাখো মানুষের ঢল
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম ও হাটহাজারী প্রতিনিধি
২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, রবিবার, ৯:৪০ পূর্বাহ্ন
দীর্ঘদিনের কর্মস্থল হাটহাজারী মাদ্রাসায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম, হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী। শনিবার বাদ জোহর হাটহাজারী দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় আল্লামা শফীর জানাজা। এতে কয়েক লাখ মানুষ অংশ নেন। যাদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র্যাব ছাড়াও হাটহাজারীতে মোতায়েন চার প্লাটুন বিজিবি সদস্যকে হিমশিম খেতে হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলম। তিনি জানান, জানাজার সারি হাটহাজারী মাদ্রাসার মাঠ ছাড়িয়ে ঈদগা ময়দান, বাসস্টেশন, জিরো পয়েন্ট মোড়, হাটহাজারী সরকারি কলেজ গেইট সড়ক, ফায়ার সার্ভিস মোড়, বাজার সড়ক, হাসপাতাল গেটসহ চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি মহাসড়ক পর্যন্ত নেমে আসে। এ ছাড়া আশেপাশের সবগুলো ভবনের ছাদ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে মানুষ জানাজায় শরিক হন। এতে ১০ লাখেরও অধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশ-বিদেশের ও জেলার শীর্ষ আলেমরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ জানাজায় অংশ নেন। জানাজায় ইমামতি করেন মরহুমের বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ। চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনের এমপি সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপিও জানাজায় অংশ নেন। জানাজা শেষে হাটহাজারী মাদ্রাসা ক্যামপাসের অভ্যন্তরে বায়তুল আতিক জামে মসজিদের সামনের কবরস্থানে দাফন করা হয় আল্লামা শফীকে। এর আগে আল্লামা শফীর লাশ শেষবারের মতো দেখতে লাখো মানুষের ঢল নামে মাদ্রাসা এলাকায়। এ সময় লাখো ভক্তের বুকফাটা কান্নায় মাদ্রাসা মাঠে তৈরি হয় শোকের আবহ। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরীও আল্লামা শফীর মরদেহের পাশে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বাবুনগরী বলেন, হযরত আমাদের ওস্তাদ। তার মৃত্যুতে আমরা এতিম হয়েছি। তিনি বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ। তিনি শুধু পরিবারের মুরুব্বি ছিলেন তাই-ই নয়, আমাদের সকলের মুরুব্বি ছিলেন। তার মৃত্যুতে মুসলিম উম্মাহর অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তবে আমরা যদি উনার তরিকা অনুযায়ী চলি তাহলে এই ক্ষতি আমরা পূরণ করতে পারবো। আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন। তার পরিবারকে ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দিন। এর আগে শনিবার সকাল ৯টায় শফী হুজুরের মরদেহবাহী গাড়ি মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এসে পৌঁছায়। এরপর তার লাশ দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এ সময় সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ সময় জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হাটহাজারী বাসস্টেশন থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অবশ্য শুক্রবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন শফী হুজুরের লাখো ভক্ত অনুসারী। বরেণ্য এ আলেমের মরদেহ পৌঁছানোর আগেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা প্রাঙ্গণসহ পুরো হাটহাজারী এলাকা। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হাটহাজারীসহ চট্টগ্রামের পটিয়া, রাঙ্গুনিয়া ও ফটিকছড়ি উপজেলায় বাড়ানো হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা। মোতায়েন করা হয় র্যাব ও পুলিশ। নামানো হয় ১০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য। যাদের সহায়তায় মাঠে ছিলেন সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও। উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুর থেকে চট্টগ্রামের আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে মুহতামিম পদ থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ান দেশের প্রবীণ কওমি আলেম আল্লামা আহমদ শফী।
এরপর মাদ্রাসার শূরা কমিটি তাকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আল্লামা শফী। বৃহসপতিবার রাত ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি এম্বুলেন্সে করে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা আল্লামা শফীকে শুক্রবার বিকালে এয়ার এম্বুলেন্সে ঢাকায় আজগর আলী হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন। ১০৫ বছর বয়সী আল্লামা শফী ৩৪ বছর হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি কওমিদের শীর্ষ সংগঠন হেফাজতের আমীর ও কওমি মাদ্রাসা বোর্ড-বেফাকের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। এরমধ্যে গত কয়েক বছর ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতায় দেশে-বিদেশে একাধিকবার চিকিৎসা নিয়েছেন।
এরপর মাদ্রাসার শূরা কমিটি তাকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আল্লামা শফী। বৃহসপতিবার রাত ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি এম্বুলেন্সে করে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা আল্লামা শফীকে শুক্রবার বিকালে এয়ার এম্বুলেন্সে ঢাকায় আজগর আলী হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন। ১০৫ বছর বয়সী আল্লামা শফী ৩৪ বছর হাটহাজারী মাদ্রাসার মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি কওমিদের শীর্ষ সংগঠন হেফাজতের আমীর ও কওমি মাদ্রাসা বোর্ড-বেফাকের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। এরমধ্যে গত কয়েক বছর ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত দুর্বলতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতায় দেশে-বিদেশে একাধিকবার চিকিৎসা নিয়েছেন।