অনলাইন
দি স্টেটসম্যানের চোখে পিয়াজ কূটনীতি
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, শনিবার, ৮:২৩ পূর্বাহ্ন
তিস্তার পানির মতই পিয়াজ দুই দেশের সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি করল। এবং সেটা এমন একটা মুহূর্তে যখন দক্ষিণ এশীয় দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার সম্পর্কে সুবাতাস বইছিল। অনেকের মতে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কে এখন একটা ক্রিটিক্যাল জাংচার বা বিশেষ সন্ধিক্ষণ তৈরি হয়েছে।
ভারতের ইংরেজি দৈনিক দি স্টেটসম্যানে আজ শনিবার অনিয়ন ডিপ্লোম্যাসি বা পিয়াজ কূটনীতি শীর্ষক প্রতিবেদনে ওই মন্তব্য করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি নোট ভারবালের মাধ্যমে 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করেছে। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে ওই নোট ভারবাল তুলে দেয়া হয়। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিষয়টিকে সহজভাবে নেয়নি। পিয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার আগে বাংলাদেশকে আগাম জানানো হয়নি। তাই তাদের এই ক্ষোভ। তবে এটা যুক্তিপূর্ণ যে, ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রশ্ন হল, বাংলাদেশকে আগাম না জানিয়ে পিয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আর তাতে বাণিজ্য শর্তের লংঘন হয়েছে কি হয়নি?
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে এমন একটা সমঝোতা বিরাজমান ছিল যে, যখনই আমদানি-রপ্তানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার দরকার হবে, তার আগে সংশ্লিষ্ট দেশকে সে বিষয়ে আগাম অবহিত করা হবে ।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এটা খুবই ভালো হতো যদি আকস্মিক এই সিদ্ধান্তটি ঘোষণা করার আগে বাংলাদেশকে অবহিত করা হতো। এটা যুক্তিসঙ্গত যে, ভারতের এটা ব্যাখ্যা করার অবকাশ রয়েছে। কারণ এই সিদ্ধান্তের ফলে অভ্যন্তরীণ পিয়াজ বাণিজ্যের চাহিদা-সরবরাহ চক্রে একটা বিঘ্ন ঘটেছে ।
বাংলাদেশে এক মাসে পিয়াজের চাহিদার পরিমাণ প্রায় দুই লাখ টন। বর্তমানে পিয়াজের মজুদ রয়েছে প্রায় ৫.৬ লাখ টন। এবং ১১ হাজার টন পিয়াজ আমদানি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ভারতীয় পিয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে ঢাকা তার পিয়াজের ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে তুরস্ককে পিয়াজ দিতে বলেছে। ভারতীয় সরকারের এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত ২০১৯ এবং ২০২০ সালে দু'দেশের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছিল, তার পরিপন্থী । সে কারণে দিল্লির দিক থেকে এ বিষয়ে একটা ব্যাখ্যা আবশ্যিক। বিশেষ করে তাকে মনে রাখতে হবে যে প্রতিবেশীদের মধ্যে তার অনেক বন্ধু নেই । ঢাকা তার নোট ভারবালে উল্লেখ করেছে যে, এ ধরনের কোন বিধি-নিষেধ আরোপ করার আগে বাংলাদেশ ভারতের কাছে এই অনুরোধ রেখেছে বিষয়টি যেন ভারত তাদেরকে আগেভাগেই অবহিত করে।
দি স্টেটসম্যানের মন্তব্য প্রতিবেদনে আরো প্রশ্ন তোলা হয়েছে, বাংলাদেশ কি ভারতের একটা ভুল সিদ্ধান্ত ধরে ফেলেছে ? চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দু'দেশের মধ্যকার বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকের কথা বাংলাদেশ এপ্রসঙ্গে ভারতকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। একইসঙ্গে তারা গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে 'ভিভিআইপি ভিজিট' স্মরণ করিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের পিয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শেখ হাসিনা বলেছেন, ' আমি আশা করি যে পিয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধের আকস্মিক সিদ্ধান্ত আপনারা আমাদেরকে আগেই অবহিত করবেন। কারণ আমি আমার বাবুর্চিকে বলব যে, আমার আর কোনো বিকল্প নেই । আমাকে পিয়াজ ছাড়াই আমার খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। তাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভারত যাতে আমাদেরকে অবহিত করে, আমি সেই অনুরোধ রাখব। সব থেকে বড় কথা, আমরা প্রতিবেশী।'এরপর দি স্টেটসম্যান লিখেছে, পশ্চিমবঙ্গের যেখানে বাধ্যবাধকতা রয়েছে তিস্তা নদীর পানি না দিতে। এখন দেখা যাচ্ছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মনে হয়েছে, তার পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশীর কাছে পিয়াজ রপ্তানি করা যাবে না।
স্টেটসম্যান কলামিস্ট উপসংহারে মন্তব্য করেছেন, সর্বশেষ এই সংঘাতের অবসান হওয়া উচিত। সেটা কেবল অন্তত পিয়াজ একটি আবশ্যকীয় পণ্য বলেই নয়, পিয়াজ অবশ্যই বাংলাদেশের জনগণের ভোজন ও খাদ্যাভ্যাসের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ । রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতে পণ্যের দামে ইতিমধ্যেই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং খাদ্য সরবরাহকারী দপ্তরের এই বিষয়টির প্রতি গভীর মনোযোগ দেয়ার দাবি রাখে।
ভারতের ইংরেজি দৈনিক দি স্টেটসম্যানে আজ শনিবার অনিয়ন ডিপ্লোম্যাসি বা পিয়াজ কূটনীতি শীর্ষক প্রতিবেদনে ওই মন্তব্য করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি নোট ভারবালের মাধ্যমে 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করেছে। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে ওই নোট ভারবাল তুলে দেয়া হয়। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিষয়টিকে সহজভাবে নেয়নি। পিয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার আগে বাংলাদেশকে আগাম জানানো হয়নি। তাই তাদের এই ক্ষোভ। তবে এটা যুক্তিপূর্ণ যে, ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রশ্ন হল, বাংলাদেশকে আগাম না জানিয়ে পিয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। আর তাতে বাণিজ্য শর্তের লংঘন হয়েছে কি হয়নি?
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে এমন একটা সমঝোতা বিরাজমান ছিল যে, যখনই আমদানি-রপ্তানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার দরকার হবে, তার আগে সংশ্লিষ্ট দেশকে সে বিষয়ে আগাম অবহিত করা হবে ।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এটা খুবই ভালো হতো যদি আকস্মিক এই সিদ্ধান্তটি ঘোষণা করার আগে বাংলাদেশকে অবহিত করা হতো। এটা যুক্তিসঙ্গত যে, ভারতের এটা ব্যাখ্যা করার অবকাশ রয়েছে। কারণ এই সিদ্ধান্তের ফলে অভ্যন্তরীণ পিয়াজ বাণিজ্যের চাহিদা-সরবরাহ চক্রে একটা বিঘ্ন ঘটেছে ।
বাংলাদেশে এক মাসে পিয়াজের চাহিদার পরিমাণ প্রায় দুই লাখ টন। বর্তমানে পিয়াজের মজুদ রয়েছে প্রায় ৫.৬ লাখ টন। এবং ১১ হাজার টন পিয়াজ আমদানি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ভারতীয় পিয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে ঢাকা তার পিয়াজের ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে তুরস্ককে পিয়াজ দিতে বলেছে। ভারতীয় সরকারের এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত ২০১৯ এবং ২০২০ সালে দু'দেশের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছিল, তার পরিপন্থী । সে কারণে দিল্লির দিক থেকে এ বিষয়ে একটা ব্যাখ্যা আবশ্যিক। বিশেষ করে তাকে মনে রাখতে হবে যে প্রতিবেশীদের মধ্যে তার অনেক বন্ধু নেই । ঢাকা তার নোট ভারবালে উল্লেখ করেছে যে, এ ধরনের কোন বিধি-নিষেধ আরোপ করার আগে বাংলাদেশ ভারতের কাছে এই অনুরোধ রেখেছে বিষয়টি যেন ভারত তাদেরকে আগেভাগেই অবহিত করে।
দি স্টেটসম্যানের মন্তব্য প্রতিবেদনে আরো প্রশ্ন তোলা হয়েছে, বাংলাদেশ কি ভারতের একটা ভুল সিদ্ধান্ত ধরে ফেলেছে ? চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দু'দেশের মধ্যকার বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকের কথা বাংলাদেশ এপ্রসঙ্গে ভারতকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। একইসঙ্গে তারা গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে 'ভিভিআইপি ভিজিট' স্মরণ করিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের পিয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শেখ হাসিনা বলেছেন, ' আমি আশা করি যে পিয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধের আকস্মিক সিদ্ধান্ত আপনারা আমাদেরকে আগেই অবহিত করবেন। কারণ আমি আমার বাবুর্চিকে বলব যে, আমার আর কোনো বিকল্প নেই । আমাকে পিয়াজ ছাড়াই আমার খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। তাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভারত যাতে আমাদেরকে অবহিত করে, আমি সেই অনুরোধ রাখব। সব থেকে বড় কথা, আমরা প্রতিবেশী।'এরপর দি স্টেটসম্যান লিখেছে, পশ্চিমবঙ্গের যেখানে বাধ্যবাধকতা রয়েছে তিস্তা নদীর পানি না দিতে। এখন দেখা যাচ্ছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মনে হয়েছে, তার পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশীর কাছে পিয়াজ রপ্তানি করা যাবে না।
স্টেটসম্যান কলামিস্ট উপসংহারে মন্তব্য করেছেন, সর্বশেষ এই সংঘাতের অবসান হওয়া উচিত। সেটা কেবল অন্তত পিয়াজ একটি আবশ্যকীয় পণ্য বলেই নয়, পিয়াজ অবশ্যই বাংলাদেশের জনগণের ভোজন ও খাদ্যাভ্যাসের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ । রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতে পণ্যের দামে ইতিমধ্যেই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং খাদ্য সরবরাহকারী দপ্তরের এই বিষয়টির প্রতি গভীর মনোযোগ দেয়ার দাবি রাখে।