বিশ্বজমিন

ব্যাংকক পোস্টকে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত

রোহিঙ্গা প্রত্যার্পণে থাইল্যান্ডের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ

মানবজমিন ডেস্ক

১৫ আগস্ট ২০২০, শনিবার, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন

রোহিঙ্গা প্রত্যার্পণে থাইল্যান্ডের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে পড়ার পর বাংলাদেশ এ পরিকল্পনায় গতি আনতে চাইছে। থাইল্যান্ডের ব্যাংকক পোস্টকে সোমবার দেয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেছেন থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত নাজমুল কাউনাইন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা সংক্রমণ ঘটলে সেখানে এক গুরুতর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে তিনি সতর্ক করেন। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতা থেকে জীবন বাঁচাতে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তারপর তিন বছর পেরিয়ে গেছে। এরপর রোহিঙ্গাদের ফেরানোর উদ্যোগ নেয়া হলেও কার্যত তা হয়ে ওঠেনি। প্রাথমিক উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। সর্বশেষ করোনা সংক্রমণের ফলে সেই উদ্যোগ আরো থমকে যায়। বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতিনিধি পর্যায়ের সফর বিঘিœত হয়েছে। ১০ লাখেরও বেশি শরণার্থী রয়েছেন কক্সবাজার শরণার্থী ক্যাম্পের ভিতর। সেখানে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদি সেখানে সংক্রমণ ঘটে, তাহলে তা হবে খুব মারাত্মক। রোহিঙ্গাদেরকে খাদ্য ও নিরাপত্তা সহ সব রকম সহায়তা দিয়েছে বাংলদেশ সরকার। তবে তাদেরকে ফেরত পাঠানোর বিষয় এখনও সমাধান করা হয়নি। নারী পাচার, শিশুদের ওপর নির্যাতন ও মাদক সংক্রান্ত সমস্যার মতো নেতিবাচক পরিণতি সেখানে বিদ্যমান। নাজমুল কাউনাইন থাইল্যান্ড সহ  আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান এই ইস্যুটিকে জোরালোভাবে তুলে ধরতে যে, এখনও একটি ‘সিঙ্গেল গ্রুপ রোহিঙ্গা’ মিয়ানমারে ফেরত যায়নি। এক্ষেত্রে অংশীদারদেরকে অবশ্যই আস্থা সৃষ্টি করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে মৌলিক অধিকার।
রোহিঙ্গারা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত থাকায় এর আগের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। এই মাসটি হচ্ছে রোহিঙ্গাদের গণহারে বাংলাদেশে আসার তৃতীয় বর্ষপূর্তি। ২০১৭ সালের ২৫ শে আগস্ট এই ধারা শুরু হয়েছিল। পরে এ নিয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে শুনানি হয়। সেখানে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। কিন্তু এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এর নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তান ভেঙে দু’টুকরো হয়। পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা অর্জন করে হয় বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল থাইল্যান্ড। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ১৯৭২ সালে। এ বিষয়ে নাজমুল কাউনাইন বলেন, মানুষ যতটা মনে করে তার চেয়েও বেশি ঘনিষ্ঠ বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড। কারণ, এ দুটি দেশই ধর্ম ও ভাষার দিক দিয়ে অভিন্ন ঐতিহাসিক ভিত্তি শেয়ার করে। বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের বাংলাদেশে অনেক স্থানে বৌদ্ধ সভ্যতার ঐতিহাসিক প্রমাণ রয়েছে। থাই ও বাংলা বর্ণমালার সঙ্গে সংস্কৃতের সম্পর্ক রয়েছে। তাই আমাদের পুরনো সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিমানে ভ্রমণ আমাদের জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ককে আরো সমৃদ্ধ করেছে। প্রতি বছর থাইল্যান্ডে যান কমপক্ষে এক লাখ বাংলাদেশি। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ সফরে আসেন মাত্র ৫০০০ থাই নাগরিক। তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ফলে থাইল্যান্ড থেকে আটকে পড়া প্রায় ২০০ নাগরিককে ফেরানোর জন্য ৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে দূতাবাস। থাইল্যান্ডে রয়েছেন কমপক্ষে দুই হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী।
বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বর্ষ পালিত হচ্ছে এ বছর। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তাকে সপরিবারে হত্যা করে কিছু বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা। তবে রক্ষা পান তার দুই কন্যা। তার মধ্যে বড় মেয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ছোটমেয়ে বসবাস করছেন বৃটেনে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status