দেশ বিদেশ

আমাদের সতর্ক থাকতে হবে: ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার

১২ আগস্ট ২০২০, বুধবার, ৯:০৪ পূর্বাহ্ন

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সুযোগ পেলেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আঘাত হানে নানা কৌশলে। তাদের অপচেষ্টা এখনো চলছে, তারা এখনো সক্রিয়। বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হয়েছে বলে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। থাকতে হবে সচেতন। তিনি বলেন, ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর এ দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কি নির্যাতন নেমে এসেছিল তা আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে। যে নির্যাতন একাত্তরে পাক হানাদারদের নির্যাতনকেই মনে করিয়ে দেয়। শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলো। গতকাল হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্মাষ্টমী পালন উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য আজ উৎসবের দিন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন। ধর্মের নামে আজকাল কিছু বিভ্রান্ত মানুষের অপকর্ম আমাদের ব্যথিত করে। শেখ হাসিনা সরকার কথায় এবং কাজে একথা বিশ্বাস করে। আর তাই অসাম্প্রদায়িক চেতনা দিয়েই আমরা গড়ে তুলতে চাই এদেশের সমৃদ্ধির সোপান। ওবায়দুল কাদের বলেন, হাজার বছর ধরে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা এদেশে পারস্পরিক সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে বসবাস ও ধর্ম চর্চা করে আসছে। সমকালীন বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন বাংলাদেশ। এখানে মসজিদ এবং পূজাম-প পাশাপাশি, এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। বিপদে-আপদে সহযোগী আর সহমর্মী হয়। আবহমানকাল থেকেই এ চর্চা হয়ে আসছে এই বদ্বীপ জনপদে। তিনি বলেন, ধার্মিক মানেই পরমতসহিষ্ণুতা, কথায় এবং আচরণে বিন¤্র এবং উদার। ধর্মানুশীলন মানুষের মনের জানালা খুলে দেয়। জগৎকে চেনার সুযোগ করে দেয়। অথচ ধর্মের নামে আজকাল কিছু বিভ্রান্ত মানুষের অপকর্ম আমাদের ব্যথিত করে। তিনি বলেন, অসহিষ্ণুতা এবং সাম্প্রদায়িকতার স্থান পৃথিবীর কোনো ধর্মেই নেই, ধর্মের নামে যারা অধর্ম চর্চা করে, ধর্মকে স্বার্থসিদ্ধির সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে চায় এসব তাদের হাতিয়ার। যারা সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ কিংবা উগ্রতা চর্চা করে প্রকৃতপক্ষে তারা ধর্মের মূল শিক্ষাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নে যেমনি প্রয়োজন অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা, তেমনি প্রয়োজন প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কোনো দেশই প্রতিবেশীর সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক রেখে এগুতে পারে না। এ বাস্তবতায়, বাংলাদেশ-ভারত তথা শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি সরকারের সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। দু’দেশের সম্পর্ক একাত্তরের রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ। বর্তমানে এ বন্ধুত্ব ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো বোঝাপড়া থাকলে অনেক অমীমাংসিত ইস্যু সহজে সমাধান সম্ভব, যার প্রমাণ বাংলাদেশ ও ভারত। দীর্ঘদিনের সীমান্ত সমস্যা, শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময় সমাধান দু’দেশের পারস্পরিক আস্থাকে বাড়িয়ে তুলেছে। বাংলাদেশের সমুদ্র জয়ের মামলায় ভারত আপিল না করে বন্ধুসুলভ যে আচরণ করেছে তা সম্পর্কের সূত্রকে করেছে আরো সুদৃঢ়। আস্থা ও বিশ্বাসের যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়েছে তার মাধ্যমে তিস্তা সমস্যা ও অন্যান্য নদীর পানি বণ্টনের আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের নাগরিক হিসেবে সকলের সমান সুযোগ এবং অধিকার রয়েছে। আপনারা নিজেদের মাইনোরিটি ভাববেন না। এ শব্দটি আপনাদের মানসিকভাবে পিছিয়ে রাখবে। আপনারা দেশের উন্নয়নে কাজ করছেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। নাগরিক হিসেবে একজন মুসলমানের রাষ্ট্রের প্রতি যে অধিকার আপনার সমান অধিকার। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের অংশগ্রহণ রয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার কথায় এবং কাজে বিশ্বাস করে। আর তাই অসাম্প্রদায়িক চেতনা দিয়েই আমরা গড়ে তুলতে চাই এদেশের সমৃদ্ধির সোপান। মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্নভাবে অশুভ চক্র একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এদেশের হাজার বছরের ঐতিহ্যে আঘাত হানার অপচেষ্টা করে। আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই শেখ হাসিনা যতদিন আছেন আপনাদের কোনো ভয় নেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশে যারা হত্যা ষড়যন্ত্রের রাজনীতির সূচনা করেছে ও লালন করেছে, সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষকে বড় করে তুলেছে তারাই হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের জীবন এবং সম্পদের ওপর বার বার আঘাত হেনেছে। আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পরম বন্ধু হিসেবে পাশে থেকেছে। উন্নয়ন, মানবিকতা ও সম্প্রীতির শত্রু সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিষবৃক্ষকে উপড়ে ফেলতে আসুন, শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি। ঢাকেশ্বরী প্রান্তে অনুুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার। আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিশোর রঞ্জন মজুমদার।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status