শেষের পাতা

ওয়াশিংটনের সঙ্গে জরুরি সংলাপ চায় ঢাকা

মিজানুর রহমান

১১ আগস্ট ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জরুরি আলোচনায় বসতে চায় বাংলাদেশ। দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো পর্যালোচনার সর্বোচ্চ ফোরাম পার্টনারশিপ ডায়ালগের আওতায় সেই আলোচনা হতে পারে। ঢাকার দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরানোর আইনি এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া দ্রুততর করার তাগিদে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি জরুরি হয়ে পড়েছে। আর এজন্য সেপ্টেম্বরের শেষে কিংবা অক্টোবরের শুরুতে সংলাপটি আয়োজনের তোড়জোড় শুরু করেছে ঢাকা। বলা হচ্ছে- বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতি এবং নভেম্বরের পূর্ব-নির্ধারিত মার্কিন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে  মুখোমুখি  বৈঠক সম্ভব না হলেও অন্তত ভার্চুয়ালি আলোচনা হতে পারে কি-না? ঢাকা তা খতিয়ে দেখছে। তবে  ফিজিক্যাল এবং ভার্চুয়াল দু’টি অপশনই  খোলা রাখা হয়েছে। সূত্র এ-ও বলছে, ঢাকা-ওয়াশিংটন পার্টনারশিপ ডায়ালগটি গত এপ্রিলে হওয়ার প্রস্তুতি ছিল। উভয়ের সুবিধাজনক ক্ষণ-তারিখও ঠিক হয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ সবকিছু থামিয়ে দিয়েছে। বাস্তব কারণেই এপ্রিল পরবর্তী এই ক’মাস স্থগিত  হওয়া পার্টনারশিপ ডায়ালগের নতুন ক্ষণ-তারিখের বিষয়ে চিন্তা করা যায়নি। করোনার প্রকোপ খানিকটা কমে আসায় যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের আগেই ঢাকায় অনুষ্ঠেয় সংলাপটি  সেরে নিতে চায় বাংলাদেশ, হোক তা ভার্চুয়ালি। ওই ডায়ালগে বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনি রাশেদ  চৌধুরীকে যত দ্রুত সম্ভব ফেরানো এবং মুজিববর্ষেই তার দণ্ড কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্র সরকার তথা ট্রাম্প প্রশাসনের সরাসরি এবং কার্যকর সহযোগিতা চাইবে ঢাকা।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আইনি লড়াইরত রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে সমপ্রতি চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ট্রাম্পের পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তার জবাবে ওই চিঠি লিখেন বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। সেই চিঠিতে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি পুনরুল্লেখ করেন। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে লেখা চিঠিতে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন এবং তাকে ফেরাতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সহযোগিতা পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন। গত ১৭ই জুন মার্কিন এটর্নি জেনারেল রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদন মঞ্জুর সংক্রান্ত কাগজপত্র চেয়ে পাঠান ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য। ঢাকা মনে করছে, বাংলাদেশ সরকার বিশেষত বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধটি হয়তো ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে ওয়াশিংটন। স্মরণ করা হয়, প্রায় একযুগ ধরে ক্ষমতায় থাকা  শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যখন, যে লেভেলে আলোচনার সুযোগ  পেয়েছে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরতের বিষয়টি  টেবিলে তুলেছে। সামপ্রতিক সময়ের আলোচনায় ইস্যুটি এজেন্ডার টপে থাকছে যা ঢাকার অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
২০১৯ সালে ১০ই জুন ওয়াশিংটনে সর্বশেষ পার্টনারশিপ ডায়ালগ হয়েছিল, যেখানে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রায় সব বিষয়ই আলোচনায় এসেছিল। বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক আর স্টেট ডিপার্টমেন্টের রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ডেভিড  হেলে যৌথ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সপ্তম পার্টনারশিপ ডায়ালগে সিকিউরিটি কো-অপারেশন, রোহিঙ্গা ক্রাইসিস, গভর্নেন্স এবং ইকোনমিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন- মোটা দাগে ওই চার পয়েন্ট ছিল, যার আওতায় আলোচনাটি হয়েছিল। তাছাড়া  প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে বাংলাদেশের অবস্থান প্রশ্নেও কথা হয়েছিল, ওই স্ট্র্যাটেজিতে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। সুশাসন, স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ- অভিন্ন ৩ মূল্যবোধে বিশ্বাসী বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সংলাপে পর্যালোচনা হয়েছিল। প্রস্তাবিত পরবর্তী অষ্টম সংলাপে অতীতের আলোচনার ধারাবাহিকতা থাকবে বলে আভাস দিয়েছে সেগুনবাগিচা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status