বিশ্বজমিন

ক্যারি লামের বিরুদ্ধে মার্কিন অবরোধ

মানবজমিন ডেস্ক

৮ আগস্ট ২০২০, শনিবার, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন

গণতন্ত্রপন্থিদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালানোর কারণে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম, বর্তমান ও সাবেক পুলিশ প্রধান, শীর্ষ আরো কমপক্ষে ৮ জনের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের দাবি, হংকংয়ে রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে খর্ব করায় এসব ব্যক্তির ভূমিকা আছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এই অবরোধ আরোপ করেছেন এক নির্বাহী আদেশের অধীনে। গত মাসে হংকংয়ের ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে চীনের গৃহীত পদক্ষেপে তাদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্য ওই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি। আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে তার এমন পদক্ষেপকে নাটকীয় হিসেবে দেখা হয়। নতুন অবরোধ দেয়া হয়েছে ক্যারি লাম, হংকংয়ের পুলিশ কমিশনার ক্রিস তাং, তার পূর্বসূরি স্টিফেন লো, হংকংয়ের নিরাপত্তা বিষয়ক সচিব জন লি কা-চিউ, এবং আইন বিষয়ক সচিব তেরেসা চেংয়ের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া অবরোধ দেয়া হয়েছে হংকংয়ে চীনের শীর্ষ কর্মকর্তা লুও হুইনিং, হংকং ও ম্যাকাউ বিষয়ক বেইজিং অফিসের পরিচালক সিয়া বাউলংয়ের বিরুদ্ধে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বলেছে, চীনের চাপিয়ে দেয়া কুখ্যাত জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক আইন হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনকে খর্ব করেছে। এর ফলে চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ নয় এমন মনে হলেই তাকে বা তাদেরকে সেন্সরশিপের আওতায় আনা হবে। হংকংয়ে স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দমন করতে বেইজিংয়ের নীতিকে বাস্তবায়নের জন্য সরাসরি দায়ী প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম। আলাদা এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে তাদের কাছে একটি পরিষ্কার বার্তা যাবে। তা হলো, হংকং কর্তৃপক্ষের গৃহীত ব্যবস্থা অগ্রহণযোগ্য। চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) অথবা তাদের দোসরদের হাতে হংকংয়ের মানুষ নৃশংস নিষ্পেষণের শিকার যখন হবে, তখন আমরা এই গৃহীত পদক্ষেপের পাশে দাঁড়াতে পারি না। অবরোধ দেয়া ব্যক্তিদের যেসব সম্পদ আছে যুক্তরাষ্ট্রে তা বাজেয়াপ্ত হবে। একই সঙ্গে তাদের সঙ্গে কেউ ব্যবসা বা কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না।
উল্লেখ্য, প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র-চীন উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে সম্পর্কের যে অবনতি হয়েছে তা কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ। শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এ সপ্তাহে ট্রাম্প যে নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন তার ঘোর বিরোধিতা করে তারা। এই অবরোধের অধীনে চীনা মালিকানাধীন উইচ্যাট এবং টিকটকের সঙ্গে কোনো লেনদেন করতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। হংকংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা আইন নামে যে আইন চাপিয়ে দিয়েছে বেইজিং তাতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি হংকংয়ের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছেন। তবে গত সপ্তাহে হংকংয়ের ক্যারি লাম আগামী ৬ই সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন এক বছর স্থগিত করার ঘোষণা দেন। তার এ ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র ভীষণ ক্ষেপেছে তার ওপর। এই নির্বাচনে বিরোধী পক্ষ ব্যাপক জয় পেতো বলে ধারণা করা হয়। কারণ, বেইজিংয়ের চাপিয়ে দেয়া আইনের ফলে হংকংবাসী ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভ থেকে তারা বিরোধী পক্ষকে ভোট দিতেন বলেই মনে করা হয়। এতে বিপদে পড়ে যেতেন ক্যারি লাম। তাই করোনা ভাইরাস সংক্রমণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তিনি নির্বাচন এক বছর পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status