অনলাইন

জেলে ফুরফুরে মেজাজে ওসি প্রদীপ!

রাসেল চৌধুরী, কক্সবাজার থেকে

৮ আগস্ট ২০২০, শনিবার, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন

জেলে ভাল আছেন ওসি প্রদীপ কুমার। শুক্রবার পুরোদিন বেশ হাসিখুশি ছিলেন। কুমারের মতোই ফুরফুরে মেজাজে দিন পার করেছেন তিনি। জেলকর্মীদের জানিয়েছেন, এইগুলো সব বোগাস! সব তামাশা। তিনি কোন অন্যায় করেননি। তার কিছুই হবে না। তিনি জেলকর্মীদের সঙ্গে হাসিখুশি কথা বলেছেন। তাদের কাছে শুধু একা থাকার সুবিধা চেয়েছেন। বলেছেন, আমার রুমে আমি একা থাকতে চাই। আমার সঙ্গে আর কাউকে দেবেন না।

জেল সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন এক প্রশ্নের জবাবে জানান, জেলে একা থাকার সুযোগ আছে। তাছাড়া তারা রিমান্ডের আসামী। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সবাইকে আলাদা করে রাখা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তাদের রিমান্ডের জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়নি।

প্রদীপের হাতে নির্যাতিত ও জেলে অন্তরীণ সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান ও ওসি প্রদীপের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়- এমন একটি সংবাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি ওই সংবাদ সঠিক নয় বলে জানান। বলেন, দু’জন দুই জায়গায় থাকেন। একজনের সঙ্গে আরেকজনের দেখা সাক্ষাতের কোন সুযোগ নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জেলকর্মী জানান, ওসি প্রদীপ কুমার দাশের হাসিমাখা চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় জেলে আছেন। শুনানির দিন আদালত ভবনেও হাসিখুশি ছিলেন ওসি প্রদীপ। একজন আইনজীবী জানিয়েছেন, আদালত ভবনে ওসি প্রদীপ যতক্ষণ ছিলেন, হাসি-ঠাট্টা করে সময় পার করেছেন।

গত ৩১শে জুলাই খুন হওয়া মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের বড়বোন ও মো. শামসুজ্জামানের সহধর্মিণী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস (৪২) বাদী হয়ে প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলীসহ ৯ জনকে আসামী করে টেকনাফ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৫ই আগস্ট সকালে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

গত ৬ই আগস্ট টেকনাফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (আদালত নম্বর-৩) এর বিজ্ঞ বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহা. হেলাল উদ্দিনের আদালতে ৭ আসামী সারেন্ডার করে জামিন চাইলে তা নামঞ্জুর করে সকলকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। পরে একই আদালতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) এর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আসামী প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়াকত আলী ও নন্দলাল রক্ষিতকে ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর ও বাকী ৫ আসামীকে ২ দিন জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার আদেশ দেন।

শুক্রবার এক আদেশে সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহারকৃত ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীকে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এবং জেলে যাওয়া অবশিষ্ট ৫ জনকে পুলিশ সুপার বরখাস্ত করেছেন।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) জানান, টেকনাফ থানার মামলা নম্বর : ৯/২০২০, যার সিআর মামলা নম্বর : ৯৪/২০২০ ইংরেজি (টেকনাফ) মামলায় ৭ আসামীর জামিন আবেদন নাকচ হয়ে জেলে যাওয়ার পর প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলী ইন্সপেক্টর হওয়ায় তাদেরকে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এবং বাকী ৫ জন যথাক্রমে এসআই নন্দলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়াকে তাৎক্ষণিক চাকুরী থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status