শেষের পাতা
জেকেজি হেলথ কেয়ার প্রতারণা
সাবরিনা-আরিফের বিরুদ্ধে চার্জশিট
স্টাফ রিপোর্টার
৬ আগস্ট ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:৫২ পূর্বাহ্ন
করোনাভাইরাসের টেস্ট প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের ডা. সাবরিনা চৌধুরী ও সিইও আরিফ চৌধুরীসহ আটজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি)। গতকাল দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক লিয়াকত আলী ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট দেন। চার্জশিটে সাবরিনা ও আরিফকে মূল হোতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া বাকি আটজনকে প্রতারণার সহযোগী বলা হয়েছে। বাকিরা হলেন, জেকেজির হুমায়ুন কবীর হিমু, তার স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারী, জেকেজির কো-অর্ডিনেটর ও আরিফের ভগ্নিপতি আবু সাইদ চৌধুরী, তার স্ত্রী জেবুন্নেসা রিমা ও বিপ্লব দাস ওরফে আলমান।
মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) পশ্চিমের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) গোলাম মোস্তফা রাসেল মানবজমিনকে বলেন, ৪২০ ধারায় যে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছিল সেটি প্রমাণিত হয়েছে। ৪৬০ ধারায় জাল সার্টিফিকেট দেয়ার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। তদন্ত করে আমরা জাল সার্টিফিকেট পেয়েছি ৩৪টি। এছাড়া ১ হাজার ৯৮৫টি রিপোর্টে গরমিল পেয়েছি। যে রিপোর্টগুলো ল্যাবের সঙ্গে মেলেনি। এছাড়া ৪০৬ ধারায় বেআইনিভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। ডিবির এই তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, জালিয়াতির এ ঘটনায় আমরা দ্রুততম সময়ে চার্জশিট জমা দিয়েছি। নিবিড় তদন্তে নানা তথ্য-প্রমাণ পেয়েছি। যা আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রত্যেক আসামির কার কি অপরাধ তা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আশা করছি আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত হবে।
মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম মানবজমিনকে বলেন, সাবরিনা ও আরিফের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছিল সেগুলো আমাদের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা আটজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছি। এরমধ্যে সাবরিনা ও আরিফ মূল হোতা। বাকিরা তাদের প্রতারণার কাজে সহযোগিতা করেছে। তারা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এসব অপকর্ম করেছে। চার্জশিটে জেকেজির চেয়ারম্যান পদবিতে সাবরিনার সম্পৃক্ততা নিয়ে তিনি বলেন, কাগজে-কলমে চেয়ারম্যান হিসেবে তার সম্পৃক্ততা মেলেনি। কোথাও সে উপদেষ্টা আবার কোথাও নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। সাবরিনার কাছ থেকে যে কার্ড পেয়েছি চার্জশিটে আমরা সেটাই উল্লেখ করেছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জেকেজির হয়ে সে যে প্রতারণামূলক প্রচারণা চালিয়েছে সেগুলোও চার্জশিটে উঠে এসেছে। চার্জশিটে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে কি লেখা হয়েছে জানতে চাইলে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার কথাই উল্লেখ করেছি। তাদের যোগসাজশে প্রতারণা করার সাহস পেয়েছে। লাইসেন্স ছাড়াই কাজ পেতে সক্ষম হয়েছে। সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজশের বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা বা সুপারিশ করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরাতো আদালতকে সুপারিশ করতে পারি না। তবে কনসার্ন চাইলে আমরা ডিএমপি কমিশনার হয়ে কার কি ভূমিকা ছিল এসব বিষয়ে জানাবো।
প্রসঙ্গত, লাইসেন্স ছাড়াই জেকেজি হেলথ কেয়ার করোনার নমুনা সংগ্রহের অনুমতি পায়। একটি মাত্র বুথের অনুমতি নিয়ে অবৈধভাবে তারা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ পৃথক ছয়টি স্থানে ৪৪টি বুথ স্থাপন করে নমুনা সংগ্রহ করে। গড়ে তারা প্রতিদিন ৫০০/৬০০ নমুনা সংগ্রহ করতো। কোনোরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই নিজেদের ইচ্ছামতো রেজাল্ট বসিয়ে তারা মানুষকে জাল সনদ দিত। বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের কথা থাকলেও তারা প্রতিটা নমুনা পরীক্ষার জন্য ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত নিত। এভাবে তারা সারা দেশ থেকে ২৭ হাজার নমুনার বিপরীতে প্রায় আট কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি তেজগাঁও থানায় প্রতারণা মামলা করেন। এর ভিত্তিতে গত ২৩শে জুন জেকেজির দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে গুলশানের জেকেজির ১৬ তলার অফিস থেকে প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফ চৌধুরীসহ আরো ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে প্রতারণার এই কাজে সম্পৃক্ততা আছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন ও আরিফ চৌধুরীর স্ত্রী ডা. সাবরিনা চৌধুরীর। পরে ১২ই জুলাই সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদের মধ্যে হুমায়ুন কবীর হিমু ও তার স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারী আগেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) পশ্চিমের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) গোলাম মোস্তফা রাসেল মানবজমিনকে বলেন, ৪২০ ধারায় যে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছিল সেটি প্রমাণিত হয়েছে। ৪৬০ ধারায় জাল সার্টিফিকেট দেয়ার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। তদন্ত করে আমরা জাল সার্টিফিকেট পেয়েছি ৩৪টি। এছাড়া ১ হাজার ৯৮৫টি রিপোর্টে গরমিল পেয়েছি। যে রিপোর্টগুলো ল্যাবের সঙ্গে মেলেনি। এছাড়া ৪০৬ ধারায় বেআইনিভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। ডিবির এই তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, জালিয়াতির এ ঘটনায় আমরা দ্রুততম সময়ে চার্জশিট জমা দিয়েছি। নিবিড় তদন্তে নানা তথ্য-প্রমাণ পেয়েছি। যা আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রত্যেক আসামির কার কি অপরাধ তা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আশা করছি আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত হবে।
মহানগর গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম মানবজমিনকে বলেন, সাবরিনা ও আরিফের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ উঠেছিল সেগুলো আমাদের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা আটজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছি। এরমধ্যে সাবরিনা ও আরিফ মূল হোতা। বাকিরা তাদের প্রতারণার কাজে সহযোগিতা করেছে। তারা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এসব অপকর্ম করেছে। চার্জশিটে জেকেজির চেয়ারম্যান পদবিতে সাবরিনার সম্পৃক্ততা নিয়ে তিনি বলেন, কাগজে-কলমে চেয়ারম্যান হিসেবে তার সম্পৃক্ততা মেলেনি। কোথাও সে উপদেষ্টা আবার কোথাও নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। সাবরিনার কাছ থেকে যে কার্ড পেয়েছি চার্জশিটে আমরা সেটাই উল্লেখ করেছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জেকেজির হয়ে সে যে প্রতারণামূলক প্রচারণা চালিয়েছে সেগুলোও চার্জশিটে উঠে এসেছে। চার্জশিটে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে কি লেখা হয়েছে জানতে চাইলে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার কথাই উল্লেখ করেছি। তাদের যোগসাজশে প্রতারণা করার সাহস পেয়েছে। লাইসেন্স ছাড়াই কাজ পেতে সক্ষম হয়েছে। সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজশের বিষয়ে কী ধরনের ব্যবস্থা বা সুপারিশ করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরাতো আদালতকে সুপারিশ করতে পারি না। তবে কনসার্ন চাইলে আমরা ডিএমপি কমিশনার হয়ে কার কি ভূমিকা ছিল এসব বিষয়ে জানাবো।
প্রসঙ্গত, লাইসেন্স ছাড়াই জেকেজি হেলথ কেয়ার করোনার নমুনা সংগ্রহের অনুমতি পায়। একটি মাত্র বুথের অনুমতি নিয়ে অবৈধভাবে তারা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ পৃথক ছয়টি স্থানে ৪৪টি বুথ স্থাপন করে নমুনা সংগ্রহ করে। গড়ে তারা প্রতিদিন ৫০০/৬০০ নমুনা সংগ্রহ করতো। কোনোরকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই নিজেদের ইচ্ছামতো রেজাল্ট বসিয়ে তারা মানুষকে জাল সনদ দিত। বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের কথা থাকলেও তারা প্রতিটা নমুনা পরীক্ষার জন্য ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত নিত। এভাবে তারা সারা দেশ থেকে ২৭ হাজার নমুনার বিপরীতে প্রায় আট কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি তেজগাঁও থানায় প্রতারণা মামলা করেন। এর ভিত্তিতে গত ২৩শে জুন জেকেজির দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে গুলশানের জেকেজির ১৬ তলার অফিস থেকে প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফ চৌধুরীসহ আরো ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে প্রতারণার এই কাজে সম্পৃক্ততা আছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন ও আরিফ চৌধুরীর স্ত্রী ডা. সাবরিনা চৌধুরীর। পরে ১২ই জুলাই সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদের মধ্যে হুমায়ুন কবীর হিমু ও তার স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারী আগেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।