বাংলারজমিন

‘শরীয়তপুরে ইবু হত্যার রহস্য উদঘাটন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

৪ আগস্ট ২০২০, মঙ্গলবার, ৭:৩৩ পূর্বাহ্ন

শরীয়তপুরে আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের মুল পরিকল্পনাকারীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। সম্প্রতি জেলার জাজিরা উপজেলার পদ্মাসেতু এলাকায় ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক রিয়াজুল ইসলাম ইবু (২৮) কে হত্যা করে মোটর সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় এ চক্রটি। মোটরসাইকেল ছিনতাইর উদ্দ্যেশে ইবুকে গলায় বিদ্যুতের তার পেঁচিয়ে ফাঁস, দিয়ে কিল ঘুষি মেরে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুজ্জামান। মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।  ইবু’র লাশ উদ্ধারের পর তথ্য প্রযুক্তিও বিভিন্ন সোর্স ব্যবহার করে মঙ্গলবার ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানা এলাকা থেকে চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী হৃদয় মৃধাকে আটক করেছে শরীয়তপুর ডিবি পুলিশের একটি দল। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছিনতাইকৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার ও তার আরো দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর হৃদয় ও তার সহযোগীরা ইবু হত্যাকান্ডের  লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। তাদের সাথে কথা বলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখনি সবকিছু প্রকাশ করতে পারছি না। নিহত মোটর সাইলে চালকের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার পাচঁখোলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন খানের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম ইবু। পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ চক্রটি দীর্ঘদিন যাবত শরীয়তপুর মাদারীপুর সহ বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে মোটরসাইকেলে যাত্রী সেজে ভাড়ায় নিয়ে চালকদের আহত বা হত্যা করে মোটর সাইকেল ছিনতাই করে আসছে। এ চক্রের মুল পরিকল্পনাকারী হৃদয় মৃধা গ্রেফতার হওয়ায় চক্রটি সমূলে উৎপাটন এখন সময়য়ের ব্যপার মাত্র। এর পেছনে কারা মদদ দিচ্ছে তাদেরকেও আমরা খুজছি।
পুলিশ ও  নিহত রিয়াজুল ইসলাম ইবু’র পরিবার সূত্র জানায়, গত (২৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রিয়াজুল তার মোটরসাইকেল নিয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দুইজন যাত্রি নিয়ে শিবচর উপজেলার কাঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এরপর তিনি নিখোঁজ হন। রিয়াজুলকে খুঁজে না পেয়ে তার স্ত্রী নিপা আক্তার মাদারীপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডাইয়ারী (জিডি) করেন। মোটরসাইকেল যাত্রি মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাদিরপুর তাহের আকনকান্দি গ্রামের মুজাফ্ফর মৃধার ছেলে হৃদয় মৃধা (২৮) ও মালেক মোল্লার ছেলে সুলতান মোল্লার (২৫) মোবাইল নম্বর সূত্র ধরে তাদের খোঁজ করা হয়। কিন্তু তারা পলাতক থাকায় হৃদয়ের মা কামরুন নাহার বেগম (৪০) ও সুলতান মোল্লার ভাই জসিম মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদারীপুর থানায় নেয়া হয়। কামরুন নাহার ও জসিমের তথ্য মতে জাজিরা উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা তস্তারকান্দি গ্রামের পদ্মা সেতুর ফাঁকা সড়কের পাশের ছনের থেকে গত (৩০ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে (৩১ জুলাই) রিয়াজুলের বাবা আনোয়ার হোসেন খান বাদী হয়ে জাজিরা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় ৩ আগস্ট ভোর রাত ৪টার দিকে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানা এলাকা থেকে হত্যাকান্ডে মুল আসামী হৃদয় মৃধাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চুরি হওয়া মোটরসাইকেল, বিক্রির নগদ ১০ হাজার টাকা, রিয়াজুলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আসামীদের সহযোগি রাজিবের মোটরসাইকেল ও নিহত ইবু মোটর সাইকেল ও মোবাইল ফোনটি একই উপজেলার পাতরাইল দিঘির পাড় এলাকা থেকে একরাম আলী ছেলে শেখ ফরিদ (২৫)ও আলাউদ্দীন জমাদ্দআরের ছেলে ফয়সাল কাছ থেকে উদ্ধার করে দুই জনকে গ্রেফতার করে। এদিকে, রিয়াজুল ইসলাম ইবু’ হত্যা কান্ডের একদিন পরে তার ছেলে সন্তানের জম্ম দিয়েছেন স্ত্রী নিপা আক্তার। শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে ইবু’র ছেলে সন্তানের জন্য এক মাসের প্রয়োজনীয় সকল সামগ্রী উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে। আর এ ছেলে ভবিষ্যতের জন্য কোন প্রয়োজন হলে পরিবারের সদস্যদের শরীযতপুর পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুজ্জানের সাথে যোগযোগ করতে অনুরোধ করেছেন। তিনি এ শিশুটির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল মামুন শিকদার, নড়িয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এস এম মিজানুর রহমান, শরীয়তপুর প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি শেখ খলিলুর রহমান,  শরীয়তপুর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি রোকনুজ্জামান পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক শহিদুজ্জামান খানসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status