বিশ্বজমিন

করোনায় কেন এত বেশি সংখ্যক টিকা নিয়ে গবেষণা?

মানবজমিন ডেস্ক

৩ আগস্ট ২০২০, সোমবার, ৮:১৫ পূর্বাহ্ন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বিশ্বে এখন পরীক্ষামুলকভাবে কমপক্ষে ১৬৫ টি টিকা তৈরির কাজ চলছে। হতে পারে এর চেয়েও বেশি। তবে সেগুলো সবেমাত্র এর প্রাথমিক পর্যায়ে। সর্বশেষ টিকাগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকাভুক্ত নয়। যেসব টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় তালিকাভুক্ত হয়েছে তার সবই প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ে অন্তত গিয়েছে। এর মধ্যে কিছু চলে গিয়েছে চূড়ান্ত দফায়। তারা মানুষের ওপর পরীক্ষামুলকভাবে প্রয়োগ করেছে এই টিকা। তারা এই টিকা বাজারে ছাড়া থেকে সম্ভবত আর মাত্র কয়েক মাস দূরে আছে। রাশিয়ান একটি টিকা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাকি যেসব টিকা আছে, তার পরীক্ষা চলছে পশুর ওপর। এসব টিকা বাজারে আসতে সম্ভবত কয়েক বছর সময় লাগবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, এত টিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে কেন? আমাদের কি এত বিভিন্ন রকম টিকার প্রয়োজন আছে? একটি টিকাই কি যথেষ্ট নয়? প্রথম যে টিকা বাজারে আসবে তা কি অন্যদের প্রতিহত করে দেবে না? তাহলে আমরা কি অঢেল অর্থ ও সম্পদ নষ্ট করছি না? সবার কি একটিই কার্যকর টিকা তৈরিতে সহযোগিতা করা উচিত নয়? একই সঙ্গে এই টিকা সবার উপযোগী এটা নিশ্চিত করা কি উচিত নয়?
প্রাথমিক ধাপই পেরোতে পারছে না বহু ভ্যাকসিন, সাফল্যর হারও কম! তবে কেন এই চেষ্টা?
করোনা রুখতে সব ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা কেন ঝাঁপিয়ে পড়ছে করোনা ভ্যাকসিন প্রস্তুতে সে কারণ অজানা। কারণ এই ভ্যাকসিন তৈরি একটি জটিল প্রক্রিয়া, সময়সাপেক্ষ তো বটেই। এছাড়াও পদে পদে সাফল্য না পাওয়ার রিস্ক রয়েছে। সাফল্য মিলছে খুবই কম। যদি ১০০টি করোনা ভ্যাকসিন তৈরি হয় তাহলে খুব বেশি হলে ২০টি প্রাথমিক ধাপ পেরোতে পারছে। আর মানবদেহে ট্রায়াল অবধি পৌঁছতে পেরেছে এখনও হাতেগোনা কয়েকটি ভ্যাকসিন। যদিও গবেষক মহলের মত চেষ্টা চালিয়ে যেতে তারা বদ্ধপরিকর। সাফল্যের হার কম হলেও হাল ছাড়তে রাজি নন তারা। ভারতের মতো দেশে যেখানে গত কয়েকদিনে হু হু করে বেড়েছে কোভিড-১৯ সেখানে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে এই ভ্যাকসিন।

সত্যিই কি বিশ্বের প্রয়োজন রয়েছে এত ভ্যাকসিনের?
প্রয়োজন তো আছে। কিন্তু এত আয়োজনের আধিক্য অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যায় প্রথম। ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের দেশ কয়েক কোটি টাকার চুক্তি সেরে ফেলেছে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে। আগাম বুকিং করে রেখেছে কয়েক লক্ষ ডোজের। মনে করা হচ্ছে এর ফলে বাকি দেশগুলি বঞ্চিত হবে।
সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই ভারতের মতো দেশগুলি নিজেদের দেশীয় পদ্ধতি ব্যবহার করে ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে। এর মধ্যেই মানবদেহে ট্রায়ালের প্রথম পর্যায়ে আশার আলো দেখেছে ভারত বায়োটেকের প্রস্তুত করা ‘কোভ্যাক্সিন’। এমনকী ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে তাদের তৈরি ভ্যাকসিন যাতে ভারতের হাতে পৌঁছায়।

অর্থের শক্তিতেই তৈরি হচ্ছে ভ্যাকসিন?
ভ্যাকসিন তৈরির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল অর্থ। যেভাবে ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হচ্ছে সেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ না করলে তা উৎপাদন অসম্ভব। সমস্যা একটাই তা হল সাফল্যের হার। তবু তাবড় তাবড় ওষুধ প্রস্তুতকারকরা সেই রিস্ক নিচ্ছে। অনেকেই যৌথভাবে ভ্যাকসিন তৈরি করছে। ভারতের ক্ষেত্রে আইসিএমআরের সঙ্গে যেমন গাঁটছড়া বেঁধেছে ভারত বায়োটেক।
তবে সবশেষে সব দেশই চায় এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরোতে। লকডাউন, মাস্ক, সামাজিক দূরত্ব, কোনও প্রতিরোধেই আটকাচ্ছে না করোনা। অতএব ভ্যাকসিনই যে শেষ কথা এমনটাই মত গবেষক মহলের।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status