কলকাতা কথকতা

কলকাতা কথকতা

করোনা টেস্ট নিয়ে দুর্নীতি, প্রাণ গেল ব্যাংক কর্মীর, গ্রেপ্তার তিন

জয়ন্ত চক্রবর্তী, কলকাতা

৩ আগস্ট ২০২০, সোমবার, ৯:৫৯ পূর্বাহ্ন

কালান্তক করোনা যেখানে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ নিচ্ছে, সেখানেই আবার এই করোনাকে কেন্দ্র করে দুর্নীতির বাস্তুঘুঘুরা বাসা বেঁধেছে। এই রকমই মর্মান্তুদ একটি কাহিনী উদ্ঘাটিত হয়েছে কলকাতা পুলিশের তদন্তে। তবে, প্রতারণার জালটি আবিষ্কৃত হওয়ার আগেই প্রতারণার শিকার কলকাতার নাকতলার বাসিন্দা এক পঞ্চান্ন বয়স্ক ব্যাংক কর্মীর প্রাণ গেছে। বাঘের ঘরে ঘোঘের বাসার মতোই এই প্রতারণার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে চুক্তি ভিত্তিতে নিয়েজিত সরকারের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এস এস কে এম এর একজন ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট বিশ্বজিৎ সিকদার, তার ভাই আর জি কর হাসপাতালের ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইন্দ্রজিৎ সিকদার এবং অনিত পায়রা নামের এক যুবক। ধৃতেরা নকল করোনা টেস্ট করে নকল রিপোর্ট দিতো। নাকতলার এই ব্যাংক কর্মী করোনা পজিটিভ হওয়া সত্ত্বেও এই প্রতারণা চক্রের নেগেটিভ রিপোর্ট এর ফলে চিকিৎসা বিলম্বিত হয় এবং অবশেষে ব্যাংক কর্মী মারা যান।
নাকতলার এই ব্যাংক কর্মী কুড়ি জুলাই অসুস্থ হন। রীতিমতো পি পি ই পরে এসে তাঁর সোয়াব টেস্ট করে অনিত পায়রা বিশ্বজিত এর নির্দেশ মতো। সাতাশ জুলাই ব্যাংক কর্মীর মেয়ের হোয়াটস্যাপ এ করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। আই সি এম আর এর করোনা রেজিস্ট্রেশন ফর্ম এর মতো এই ফর্ম এ তেরোটির জায়গায় নটি ডিজিট ছিল। নেগেটিভি শব্দটিও পেন এ লেখা ছিল। এই রিপোর্ট পাওয়ার পর পরিবার যখন একটু স্বস্তিতে তখনই সাতাশ জুলাই তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। প্রবল স্বাসকষ্ট শুরু হয়। ব্যাংক কর্মীকে এরপর একটি নার্সিং হোমে নিয়ে গেলে তার করোনা পজিটিভ ঘোষণা করা হয়। বহু হাসপাতালে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ব্যাংক কর্মীকে বাঙুর হাসপাতালের করোনা সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁরা জানান ব্যাংক কর্মী প্রথম থেকেই করোনা পজিটিভ এবং নেগেটিভ রিপোর্টটি ভুয়ো। আধ ঘন্টারমধ্যে ব্যাংক কর্মীর মৃত্যু হয়। এরপরই নেতাজীনগর থানায় এফ আই আর করেন ব্যাংক কর্মীর স্ত্রী। তদন্তে উঠে আসে প্রতারণার এই মর্মান্তিক কাহিনী। পেশেন্ট প্রতি দুহাজার টাকা নিয়ে বিশ্বজিৎ সিকদার এই রিপোর্ট দিতো। রিপোর্ট এ পজিটিভকে নেগেটিভ, নেগেটিভকে পজিটিভ লিখে দেয়া হত। এভাবেই মানুষের জীবন নিয়ে ছেলে খেলা করা হয়েছে। ব্যাংক কর্মীর মেয়ে বলেছে - দোষীদের চূড়ান্ত সাজা চাই যাতে আর কোনও মেয়ে এভাবে তার বাবাকে না হারায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status