মত-মতান্তর

গরু নিয়ে এ কি তেলেসমাতি?

শামীমুল হক

৩১ জুলাই ২০২০, শুক্রবার, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন

বৃহস্পতিবার বিকালে হঠাৎ রাজধানীর গরুর হাটে ধমকা হাওয়া। মানুষ পাগলের মতো ছুটছে গরুর জন্য। কিন্তু সবকটি হাট প্রায় ফাঁকা। কিছু গরু নিয়ে ব্যাপারীরা বসে থাকলেও দামে আগুন। যে গরু আগের দিন বিক্রি হয়েছে ৮০ হাজার টাকা সেই গরু ডাবল দামে নিতে হয়েছে কাড়াকাড়ি। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা, এরপর রাত, গভীর রাত। মানুষের দীর্ঘ সারি। এক হাট থেকে আরেক হাট। কোথাও নেই গরু। একটি গরুর জন্য পাগল হাজারো মানুষ। ছোট ছোট বাছুর বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা। রাত ১২ টার পর শনির আখড়া বাজারে গিয়ে দেখা গেছে লোকে লোকারন্য। গরু হাতে গোনা কয়েকটা। এ অবস্থা দেখে গরু ব্যবসায়ীদের মাথা খারাপ হয়ে যায়। কত দাম হাঁকাবে তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যায়। মুখে যেমন আসছে তেমন দামই হাঁকছে। গরুর জন্য পাগল মানুষগুলো হাঁকানো দামেই নিচ্ছে। পীরের বাগ থেকে সন্ধ্যায় হাটে আসেন আমজাদ খন্দকার। তার বাজেট এক লাখ বিশ হাজার টাকা। রাত দুটা পর্যন্ত এ দামে গরু কিনতে পারেননি। তিনি বলেন যে গরুর দাম এক লাখ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়, সে গরুর দাম চাইছে তিন লাখ টাকা। একটি গরুর কিনতে শত জনের ভীড়। তার প্রশ্ন কেন এমন হলো? হঠাৎ এত গরু উধাও হয়ে গেল কোথায়? বহু মানুষ গরু কিনতে পারেননি। শুক্রবার সকালে অনেক মানুষ রাজধানীর আশপাশের জেলায় ছুটে যান। সেখানেও চড়া দাম। যারা এ কৌশল নেন তারা শেষ পর্যন্ত গরুর মুখ দেখেছেন। অন্যরা গরু কিনতে পারেননি। কিন্তু কেন এমন হলো? এ নিয়ে সারাদিনই আলোচনা সর্বত্র। আলোচনা হচ্ছে এবার রাজধানীতে গরুর হাট ছিল কম। এছাড়া আগে থেকেই চাউর হয়ে যায় করোনায় অর্থনৈতিক সংকটে কোরবানি দেয়ার মানুষ কমে গেছে। অনলাইনে গরু বিক্রি হয়ে গেছে। এ ভয়ে ব্যাবসায়ীরা হাটে গরু এনেছে কম। এছাড়া করোনা সংক্রমণরোধে একটি গরু থেকে আরেক গরুর দূরত্ব বজায় রেখে বাঁধা হয়। ফলে হাটের আয়তন বড় হয়। কিন্তু গরুর সংখ্যার বিষয়টি কারো নজরে আসেনি। আরও রয়েছে দেশের ৩১ জেলায় বন্যা। এর প্রভাবও বাজারে পড়বে বলে মনে করেছিল সবাই। আলাল নামে সিরাজগঞ্জের এক ব্যাপারী বলেন, প্রতি বছর আমি  ৪০/৫০টি গরু নিয়ে ঢাকার হাটে আসি। এবার মাত্র ১৮টি গরু নিয়ে আসি। আমাদের কাছে খবর ছিল এবার গরু বিক্রি হবে কম। এজন্য এটা করেছি। আলাল বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর হঠাৎ করে হাটে মানুষের ঢল নামে। তা দেখে গরু বিক্রেতারা সজাগ হয়ে যায়। মরা হাট হয়ে উঠে চাঙ্গা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status