প্রথম পাতা

কসাইয়ের দাম চড়া লাখে ১৩০০০

শামীমুল হক

৩০ জুলাই ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৯:১৮ পূর্বাহ্ন

আগামী শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির ঈদ। ইতিমধ্যে কোরবানি পশু কেনাবেচা শুরু হয়েছে। চলবে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত। কিন্তু কোরবানির পশু জবাইয়ের পর মানুষ যে সমস্যায় পড়েন তা হলো গরুর চামড়া ছাড়ানো। মাংস কাটা। হাড় টুকরো করা। তখনই প্রয়োজন পড়ে কসাইয়ের। রাজধানী ঢাকায় প্রতি বছরই এ দিনটিতে কসাইয়ের কদর বাড়ে। কোরবানির গরু কাটাছেঁড়া করার জন্য ঈদের আগেই মানুষজন চুক্তিবদ্ধ হয় কসাইয়ের সঙ্গে। সোমবার রাতে নুরে আলম মহালদার নামে এক ব্যবসায়ী ছুটে যান রায়েরবাগ জসিম কসাইয়ের কাছে। সেখানে আগে থেকে আরো বেশক’জন এসেছেন কসাই ঠিক করতে। কোরবানির গরু কেটে একেবারে সাফ করে দিয়ে আসবেন জসিম কসাই ও তার দল। জসিম তাদের বলেন, আমরা প্রতিবছর এ দিনটির জন্য অপেক্ষা করি। আপনারা আমার মাধ্যমে কাজ করালে দিতে হবে প্রতি হাজারে ২০০ টাকা করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ তর্ক-বিতর্কও হয়। শেষ পর্যন্ত জসিম বলেন, হাজারে ১৩০ টাকা হলে আমি রাজি। এর কমে আমি পারবো না। আপনারা অন্য জায়গায় দেখুন। জসিমের হিসাবে গরুর দাম যদি হয় এক লাখ টাকা তাহলে তাকে দিতে হবে ১৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ গরুর দামের উপর হাজারে তাকে ১৩০ টাকা মজুরি দিতে হবে। ৬০ হাজার টাকা হলে তাকে দিতে হবে সাত হাজার ৮০০ টাকা। গরুর দাম যদি হয় দেড় লাখ টাকা তাহলে তাকে দিতে হবে ১৯ হাজার ৫০০ টাকা। রায়েরবাগেরই আরেক কসাই বিল্লাল। তিনি রেট দিয়েছেন হাজারে একশ’ টাকা। বিল্লালের হিসাবে এক লাখ টাকার গরুর জন্য দিতে হবে ১০ হাজার টাকা। বিল্লাল বলেন, আসলে আমরাও তো মানুষ। ঈদের আনন্দ আমাদেরও আছে। মানুষকে এভাবে সাহায্য করে আমরা আনন্দ পাই।
এক সময় মানুষ নিজেদের গরু নিজেরাই মিলে চামড়া ছাড়ানো থেকে শুরু করে সবই করতেন। গ্রামে উঠানে বসে গরুর মাংস কাটতেন আর উল্লাস করতেন। রাজধানীতেও ছিল পঞ্চায়েতের মাধ্যমে গরু কাটার ব্যবস্থা। কোরবানি ঈদের আনন্দই ছিল এ গরু কাটাতে। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী নুরে আলম বলেন, ঢাকাতে একা থাকি। সঙ্গে কেউ নেই। তাই আমাকে কসাইয়ের দ্বারস্থ হতে হয়। তিনি বলেন, গ্রামে লোকজন এমনিতেই সহায়তা করতে এগিয়ে আসে। সবাই মিলে আনন্দ উল্লাস করে পশু জবাই দেই। মাংস কাটি। সেদিন আর ফিরে আসবে না। গাউছিয়া মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী আবদুস সাত্তারও ঠিক করেছেন বিল্লাল কসাইকে। তিনি ৮৫/১, জনতাবাগে বসবাস করেন। সাত্তার বলেন, আসলে একা হওয়ায় কসাইয়ের কাছে ছুটে আসতে হয়। টাকা গেলেও কিছু করার থাকে না আমাদের। জসিম কসাই বলেন, ঈদের দিন আমি আমার দল নিয়ে ১০ থেকে ১২টা গরু কাটাকাটি করি। এতে দেড় লাখ টাকার মতো আয় হয়। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা মানুষ এখন কষ্ট করতে চায় না। তারা চায় টাকা দিয়ে হলেও সব তৈরি পেতে। এ জন্যই আমাদের ডাক পড়ে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status