শেষের পাতা

১১ দফা দাবিতে ইতালিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে বিক্ষোভ

কূটনৈতিক রিপোর্টার

২৯ জুলাই ২০২০, বুধবার, ৯:১৪ পূর্বাহ্ন

ইতালির রাজধানী রোমস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের অনিয়ম-দুর্নীতি এবং দালালচক্রের বিরুদ্ধে চ্যান্সারি গেটে নজিরবিহীন বিক্ষোভ হচ্ছে গত দু’দিন ধরে। ইতালির বাংলাদেশ সমিতির ডাকে ১১ দফা দাবিতে গত ২৭শে জুলাই থেকে ‘অবস্থান কর্মসূচি’র নামে ওই বিক্ষোভ চলছে। রোমের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রদত্ত নির্দেশনা মেনে বিক্ষোভকারীরা তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা দাবিগুলো মেনে নিতে বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের প্রতি আল্টিমেটাম দিয়েছেন। তবে রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান শিকদার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় সায় না দিলেও চার মিনিটের এক ভিডিওতে তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে দু’টি দাবি নাকচ করেছেন। রোমের বাংলাদেশ কমিউনিটির দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিবদমান দু’টি গ্রুপের বিরোধে প্রভাব রয়েছে ওই বিক্ষোভে। সুবিধাভোগী চক্রকে ‘দালাল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে আন্দোলনকারীরা বলছে, যারা প্রায় প্রতিদিন তদবির নিয়ে দূতাবাসে যায় তারাই দালাল। তাদের দৌরাত্ম্যের প্রমাণ সিসিটিভি ফুটেজে রয়েছে। ফুটেজ দেখে তাদের চিহ্নিতকরণ এবং নাম-তালিকা চ্যান্সারি কমপ্লেক্সের গেটে টাঙানোর দাবিও করা হয়েছে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নেতৃত্বাধীন আন্দোলন থেকে। সূত্র মতে, দীর্ঘদিন ধরে রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ রয়েছে। দূতাবাসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে ইতালি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা দীর্ঘদিন ধরে দালালি ও দুর্নীতি করে আসছেন। ওই চক্র বর্তমানে ইতালিতে চলমান বৈধকরণের কাজেও সাধারণ প্রবাসীদের নানাভাবে হয়রানি করছে। নিরপেক্ষ একটি সূত্রের দাবি ওই চক্রের হাতে দূতাবাস কর্মকর্তারাও প্রায় জিম্মি। সূত্র মতে, আন্দোলনকারীদের উল্লেখযোগ্য দাবি হচ্ছে- পাসপোর্ট জটিলতার দ্রুত নিষ্পত্তি। ইতালি সরকার ঘোষিত ক্যাটাগরিক্যালি বৈধতার প্রশ্নে অবৈধদের আবেদনের পূর্বশর্ত হচ্ছে পাসপোর্ট। ১৫ই আগস্ট বৈধতার আবেদনের সময়সীমা শেষ হবে। তাই ১০ই আগস্টের মধ্যে বাংলাদেশি আবেদনকারীদের পাসপোর্ট পেতে হবে। দ্বিতীয়ত, ৮ই জুলাই ইতালির রোম থেকে ফেরত পাঠানো ১২৫ এবং মিলানো থেকে ৪৫ জন বাংলাদেশিকে অবিলম্বে ফিরিয়ে আনা। তৃতীয়ত, দূতাবাসে প্রবাসীদের হয়রানি এবং নির্যাতন বন্ধ। অভিযোগ রয়েছে- দূতাবাসে সেবা পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন করলেও কাউকে পাওয়া যায় না। আন্দোলনকারীরা বলছেন, যেহেতু জরুরি পরিস্থিতি পাসপোর্টসহ বিভিন্ন ডকুমেন্টের জন্য বৈধতা প্রত্যাশীদের দূতাবাসের অ্যাপয়েনমেন্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পেতে হবে, তাই এর সুষ্ঠু সমাধান, অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া টোকেনের মাধ্যমে সেবা প্রদান। এবং সবচেয়ে গুরুতর হচ্ছে, প্রবাসীদের গায়ে না কি দূতাবাসের লোকাল স্টাফরা হাতও তোলে! এটা বন্ধ করা।
তারা এটাও বলছেন, দূতাবাসে কর্মরত দালালদের সহযোগী কর্মচারী এবং প্রবাসীদের হয়রানি ও লাঞ্ছনাকারীদের অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে। রাষ্ট্রদূত তার ভিডিও বার্তায় প্রবাসী হয়রানি বন্ধের অঙ্গীকার করেছেন। তবে দালাল চক্র, লাঞ্ছনার ঢালাও অভিযোগ এবং অ্যাপয়েনমেন্ট সিস্টেমের বদলে টোকেন দেয়ার দাবি নাকচ করে দিয়েছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status