প্রথম পাতা

চীনের করোনা ভ্যাকসিন

ঢাকায় ট্রায়াল নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ

২৮ জুলাই ২০২০, মঙ্গলবার, ৯:২২ পূর্বাহ্ন

দেশে চীনের তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের বিষয়টি আটকে আছে সিদ্ধান্তহীনতায়। গত সপ্তাহে করোনার ভ্যাকসিনটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা সংস্থা-আইসিডিডিআর,বি’র তত্ত্বাবধানে এই পরীক্ষা হওয়ার কথা। তবে অনুমোদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল হলে এটি এক ধরনের সুবিধা নিয়ে আসবে। দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন বা স্বল্প মূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়ার সুযোগ হবে। প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হলে সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগ হবে কিনা সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের প্রয়োজন রয়েছে।  
চীনের সিনোভ্যাক রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের অনুমতি পাওয়া আইসিডিডিআর,বি’ এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে ট্রায়াল শুরুর আগে কথা বলা যাবে না। সবকিছু চূড়ান্ত হলেই কেবল গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
গত ১৯শে জুলাই বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) এ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে ট্রায়ালের জন্য অনুমোদন দেয়। সেদিন  প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ডা. মাহমুদ- উজ-জামান  গণমাধ্যমকে  বলেছিলেন, ভ্যাকসিনটির তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল বাংলাদেশে হতে যাচ্ছে।
ডা. মাহমুদ বলেন, আইসিডিডিআর,বি’ একটি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বাংলাদেশে করতে চাচ্ছে। নিয়ম হচ্ছে যেকোনো ট্রায়ালের জন্য নীতিগত অনুমোদন দেয় বিএমআরসি। তারা আমাদের কাছে এই ট্রায়ালের অনুমতি চেয়েছিল, আমরা এটা যাচাই বাছাইয়ের পর রিভিউ করে অনুমোদন দিয়েছি। ভ্যাকসিনটি দেশের সাতটি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ট্রায়াল হবে।
চীনের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক  মানবজমিনকে  বলেন, উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। বিষয়টি আলোচনা পর্যায়ে আছে। রাষ্ট্রীয়
পলিসির ব্যাপার। বেশকিছু দেশ ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। এরমধ্যে ইংল্যান্ড, চীন, ভারত ও আমেরিকা রয়েছে। ভ্যাকসিনের প্রস্তাবনা এসেছিল। এখন সরকারের অনুমোদন লাগবে। তিনি আরো জানান, সরকারের পলিসি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে। কোন্‌টি নিলে সুলভ হবে।
চীনের ভ্যাকসিনের বিষয়ে জাতীয় পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব  মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, চীনের ভ্যাকসিন ও অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন দুটোই ভালো। চীনের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের জন্য অনুমোদন দিয়েছিল বিএমআরসি। সেটা যদি খুব তাড়াতাড়ি শুরু হয় তাহলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে, নয়তো অনেকদিন অপেক্ষা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, যেহেতু আমাদের এখানে ট্রায়াল হবে তাই ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান ও বিএমআরসি’র ন্যাশনাল রিসার্চ ইথিকস কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, ইথিকাল সাউন্ড হওয়ায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এখন এর বেশি বলার নেই।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুলতানা সাহারা বানু এ বিষয়ে মানবজমিনকে বলেন, আমাদের এখানে ট্রায়াল হলে অবশ্যই সুবিধা পাবো। তবে পুরো বিষয়টি এখন রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status