অনলাইন

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন

বাংলাদেশে করোনার ভুয়া সার্টিফিকেট বিক্রি এক জমজমাট ব্যবসা

তারিক চয়ন

১৬ জুলাই ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৬:৫০ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশে একটি হাসপাতালের মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, তিনি কোন টেস্ট ছাড়াই প্রবাসী শ্রমিকদের কাছে হাজার হাজার ভুয়া করোনাভাইরাসের সার্টিফিকেট বিক্রি করেছেন। তিনি প্রায় ১০,০০০ ভুয়া সার্টিফিকেট বানিয়েছেন যার বেশিরভাগই ভুয়া। পুলিশ বলছে, মোহাম্মদ শাহেদ নামের ওই ব্যক্তি বোরকা পরে নারী সেজে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও প্রতারণার ৩০টি মামলা ছিল। তিনি দু’বছর জেলও খেটেছিলেন।
এমন হাজার হাজার ভুয়া সার্টিফিকেট বানানোর অভিযোগে আরো দু’জন চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এদের মতো অন্যদের খুঁজে বের করতে বিশেষ বাহিনী মাঠে নেমেছে।
বাংলাদেশের যেসব শ্রমিক বিদেশে কাজে ফিরতে চাচ্ছেন তাদের কাছে এসব সার্টিফিকেটের রয়েছে বিপুল চাহিদা। সম্প্রতি ইতালি যাওয়া শ্রমিকরা জানান, কাজে যোগ দেবার জন্য তাদের এই সার্টিফিকেট দেখানো প্রয়োজন।
বাংলাদেশের একজন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। অনেক অপরাধী চক্র এভাবে বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের টোপ ফেলে বহু জীবন হুমকির মধ্যে ফেলছে।
বাংলাদেশ এশিয়ার দরিদ্র দেশগুলোর একটি। লাখ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক বিদেশে কাজ করে দেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাঠিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখেন। করোনাকালে অনেক শ্রমিক স্বল্প সময়ের জন্য দেশে ফিরে দেখেন তাদের চাকরি চলে গেছে। তারা এখন কাজে ফেরার জন্য মুখিয়ে আছেন।
বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। ১৬ কোটি মানুষের দেশটিতে ২ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা আক্রান্তের ঢল থাকায় এবং বাংলাদেশে তুলনামূলক কম টেস্ট হওয়ায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, সরকারি ঘোষণার চেয়ে বাস্তবে আক্রান্তের হার অনেক বেশি।

বাংলাদেশ থেকে রোমে যাওয়া কমপক্ষে ৩৭ জন যাত্রীর করোনা পজিটিভ হওয়ায় ইতালির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্তো স্পেরাঞ্জা বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়া সব ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। গেল সপ্তাহে রোম এবং মিলান বিমানবন্দরে পৌঁছা ১৬৮ বাংলাদেশীকে ইতালি ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, সম্প্রতি ইতালি যাওয়া প্রায় ১৬০০ বাংলাদেশি ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে যান নি। তবে অনেকে সেখানে গিয়ে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন মানেন নি। তাদেরই কয়েকজনের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে থাকতে পারে।
মিলানের একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করা বাংলাদেশি শ্রমিক তাহির হোসেন বলেন, 'ইতালির পত্রিকাগুলো বাংলাদেশি কমিউনিটিতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে লাগাতার রিপোর্ট করে যাচ্ছে। তাদের সন্দেহের চোখ সাধারণ শ্রমিকদের দিকে। ইতালির লোকজনও আমাদের দিকে এমনভাবে তাকাচ্ছে যেন আমরা সবাই করোনা আক্রান্ত।'
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status