শেষের পাতা

ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ফ্রিডম অ্যাওয়ার্ড পেলেন ড. শহিদুল আলম

কূটনৈতিক রিপোর্টার

১৫ জুলাই ২০২০, বুধবার, ৯:০৮ পূর্বাহ্ন

সাহসী সাংবাদিকতার জন্য বাংলাদেশ, ইরান, নাইজেরিয়া ও রাশিয়ার চার সাংবাদিককে ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ফ্রিডম অ্যাওয়ার্ড-২০২০ এ ভূষিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে এই পুরস্কার পেয়েছেন ফটোসাংবাদিক শহিদুল আলম। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে দ্য কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে)     পুরস্কারজয়ী এই চার সাংবাদিকের নাম ঘোষণা করে। সিপিজে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রিপোর্ট করতে গিয়ে এই চারজনই গ্রেপ্তার হয়েছেন কিংবা ফৌজদারি মামলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। শহিদুল আলম ছাড়া পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- ইরানের মোহাম্মদ মোসায়েদ, নাইজেরিয়ার দাপো ওলোরুনিওমি এবং রাশিয়ার সভেৎলানা প্রোকোপেভা। সাংবাদিক শহিদুল আলমের আন্তর্জাতিক অর্জন বা প্রাপ্তিতে আরেকটি পুরস্কার যুক্ত হওয়ার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, সিপিজে’র এই পুরস্কার শুধু আমার নয়, যারাই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন এটি তাদের সবার। সিপিজে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তাদের পুরস্কৃত করে, এটি অত্যন্ত আনন্দের। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে যখন নিপীড়ন করে আর সিপিজে তার প্রতিবাদ করে না, তখন সেটি মনে কষ্ট দেয়, খারাপ লাগে। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফটোসাংবাদিক ড. শহিদুল আলম দেশে-বিদেশে এক আলোচিত নাম। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় বলিষ্ঠ ওই কণ্ঠস্বর ২০১৮ সালের প্রেস্টিজিয়াস টাইম ম্যাগাজিন কর্তৃক বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হন।
২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে আল-জাজিরায় একটি সাক্ষাৎকার প্রদানের কারণে খড়গ নেমে আসে এই বিশ্ববরেণ্য লেখক ও ফটোসাংবাদিকের ওপর। তিন মাসের বেশি সময় কারাবন্দি থাকার পর বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের মুখে তার মুক্তি হয়।
যাদের কথা বলার কথা তারা চুপ থাকছেন, সেটাই চিন্তার বিষয়:
সাহসী সাংবাদিকতার জন্য সিপিজে কর্তৃক ইন্টারনশ্যাল প্রেস ফ্রিডম অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম গতকাল মানবজমিনকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমি যেটা করেছি সেটা যে কোনো সাংবাদিকের করার কথা। সেটা অস্বাভাবিক কিছু না। বরং এটা এই সময়ে যে কেউ কেউ করছে না সেটা বেশি দুশ্চিন্তার বিষয়। এই সময়ে অনেকের যাদের কথা বলার কথা তারা চুপ থাকছেন সেটা আমার জন্য আরো বেশি চিন্তার।
শহিদুল আলম বলেন, এই পুরস্কার বাংলাদেশি হিসেবে আমি পেয়েছি যেটা দেশের জন্য গর্বের। কিন্তু আমি মনে করি এটা আমার ব্যক্তিগত না। এতোগুলো মানুষ যারা আন্দোলন করেছে, যারা ছিলো বলে এ কাজগুলো করা সম্ভব হয়েছে এবং যাদের কারণে আমি এখন জামিনে হলেও বাইরে আছি, আমি মনে করি এটা আমাদের সকলের অর্জন। তবে একটি বিষয় আমি এর সঙ্গে বলতে চাই সিপিজে’র মতো প্রতিষ্ঠান পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে যারা সাহসী কাজ করছে সেটাকে সম্মান দেয়। পুরস্কৃত করে। বাংলাদেশেও যে আন্দোলন হয়েছে সেটাকেও তারা এক অর্থে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং যুক্তরাজ্যে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের মতো ব্যক্তি যারা তাদের ক্ষেত্রে তাদের চোখের সামনে অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে তাদের ক্ষেত্রে দেয় না সেটাও আমাদের মনে রাখা দরকার। শহিদুল আলম বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে সরকার একেবারে নিপীড়নমূলক আইনে পরিণত করেছে। পরিণত করাও বলবো না সেই উদ্দেশ্যই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বানানো। এবং এই ক্রান্তিলগ্নে যেখানে বাকস্বাধীনতার সবচাইতে বেশি প্রয়োজন, যেখানে আমাদের এর থেকে পরিত্রাণ পেতে তথ্য জানাটা সবচাইতে বেশি জরুরি। সেখানে যারা তথ্য দিতে চেষ্টা করেছে তাদেরকে নিপীড়ন করা এবং যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলছে তাদেরকে চুপ করানোর জন্য এ  জিনিসগুলো করছে। কাজলসহ যত সাংবাদিকের ওপর নিপীড়ন করা হচ্ছে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই আমি খুব দৃঢ়ভাবে প্রতিবাদ জানাই। এবং এই সুযোগে যদি তাদের এই পরিস্থিতির ওপর চোখটা পড়ে আমি তাতে খুশি হবো।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status