খেলা

আরচারি দিয়ে বন্ধ তালা খুলছে ক্রীড়াঙ্গনের

স্পোর্টস রিপোর্টার

১৩ জুলাই ২০২০, সোমবার, ৮:১৭ পূর্বাহ্ন

মহামারি করোনার ভয় দূরে সরিয়ে বন্ধ ক্রীড়াঙ্গনের দুয়ার খোলার দায়িত্ব নিয়েছে বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমতি মিললে এই মাসেই ট্রেনিং ক্যাম্প চালু করতে চায় তারা। তাদের পাশাপাশি শুটিং ফেডারেশনও ট্রেনিং শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছে। অনুমতি মিললে তারাও ক্যাম্প করতে প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে।
কয়েকটি ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে ঈদের পর খেলাধুলা শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। তবে আরচারি ফেডারেশন ঈদের জন্য অপেক্ষা করতে চায় না। বিশ্ব আরচারি অঙ্গনের কথা উল্লেখ করে ফেডারেশন সম্পাদক কাজী রাজিব উদ্দিন চপল বলেন, করোনার ভয়ে কেউ বসে নেই। ইউরোপে আগেই ট্রেনিং শুরু হয়েছে। তা ছাড়া ভারত, ভুটান, কোরিয়া, জাপান এমনকি করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনেও ট্রেনিং চলছে। তাহলে আমরা সুযোগ থাকলে করবো না কেন! শারীরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে খেলা যায় এটা। তা ছাড়া সামনে অলিম্পিক গেমস। তার প্রস্তুতির কথা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেছি এবং ব্যাপারটা উনি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।’ মন্ত্রীর সঙ্গে সভায় খেলার পক্ষে আরচারি ছাড়াও দাঁড়িয়েছিলেন শুটিং ফেডারেশনের মহাসচিব ইন্তেখাবুল হামিদ অপু। দুই ফেডারেশনের সাহস দেখে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলও ক্রীড়াঙ্গনের বন্ধ তালা খুলতে ইতিবাচক হয়েছেন। প্রতিমন্ত্রীকে অভয় দিয়ে আরচারি সম্পাদক বলেছেন, ‘টঙ্গীতে আমাদের যে অবকাঠামো আছে, সেখানে ৯৯ শতাংশ সুরক্ষা বজায় রেখে আরচারা ট্রেনিং করতে পারে। কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমাদের জার্মান কোচও মনে করছেন, খুব ভালোভাবে ট্রেনিং চলতে পারে। আশা করি, এ সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিপ্তরের অনুমোদন পেয়ে যাব, এরপরই ট্রেনিং শুরু করে দেব।’ চ্যাম্পিয়ন আরচার তৈরির আঁতুরঘর টঙ্গীর শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়াম, যেখানে অন্য কারো ঢোকার অনুমতি নেই। এখানে নিবিড়ভাবে চলছিল আরচারি ট্রেনিং ক্যাম্প। করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে মার্চে ক্যাম্প বন্ধ হয়ে গেলেও এখন আবার আরচারদের পদচারণায় মুখরিত হবে। প্রিয় ছাত্রদের কাছে পাবেন মার্টিন ফ্রেডরিখ। সাড়ে তিন মাস আগে ক্যাম্প বন্ধ হয়ে গেলেও বাংলাদেশ আরচারির জার্মান কোচ ফেরেননি নিজের দেশে। অপেক্ষায় আছেন ট্রেনিং ক্যাম্প শুরুর। তাই ইতিবাচক খবরটা শুনে মার্টিন দারুণ খুশি, ‘এটা ভালো সিদ্ধান্ত। এত দিন বসে থাকতে হবে ভাবিনি, তাই বাড়িও যাইনি।’
তবে কখন ট্রেনিং শুরু হবে এবং কতজনকে নিয়ে হবে, তা জানেন না কোচ। তিনি মনে করেন, ‘রিকার্ভ পুরুষ ও মহিলা দলগতের ট্রেনিং খুব জরুরি। কারণ পরের আর্চারি বিশ্বকাপে আমাদের অলিম্পিক কোয়ালিফিকেশনের সুযোগ আছে।’ অবশ্য ফেডারেশন সম্পাদক রাজিব উদ্দিন ইতিমধ্যে স্থির করে ফেলেছেন ‘আমাদের ছেলে ও মেয়েদের রিকার্ভ দল প্রস্তুত আছে। এ ১২ জনকে নিয়েই হবে ট্রেনিং, সঙ্গে কোচিং স্টাফরা থাকবেন। একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টও খেলতে যাব রিকার্ভ দলগতে অলিম্পিক কোয়ালিফাই করার জন্য।’ সেটি হলো আগামী জুনে প্যারিসে আরচারি বিশ্বকাপ, যেখানে রিকার্ভ দলগতের বাকি তিনটি কোটা প্লেসের নিষ্পত্তি হবে। আগামী জুলাইয়ে হবে পিছিয়ে যাওয়া টোকিও অলিম্পিক। এখন পর্যন্ত ছেলে ও মেয়েদের রিকার্ভ দলগতে ১১টি করে দলের মধ্যে আটটি করে চূড়ান্ত হয়েছে, বাকি আছে তিনটি কোটা প্লেস। জুুনে প্যারিস বিশ্বকাপে অলিম্পিকে যাওয়ার তিনটি কোটা প্লেসের জন্য কঠিন লড়াই হবে মনে করছেন মার্টিন ফ্রেডরিখ, ‘থিওরিটিক্যালি ছেলে ও মেয়েদের কোটা প্লেস পাওয়ার দুয়ার খোলা আমাদের জন্য, তবে লড়াইটা খুব কঠিন। কারণ আগের চ্যাম্পিয়ন আমেরিকা ছাড়াও কয়েকটি শক্তিশালী দল এখনো অলিম্পিকের টিকিট পায়নি।’ ক্রীড়াঙ্গনের বন্ধ দুয়ার খোলার খবরে আরচারিতে ফিরছে নতুন স্বপ্ন। আরচারিকে দেখে হয়তো বন্ধ তালা খুলতে শুরু করবে অন্যান্য ফেডারেশনও।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status