এক্সক্লুসিভ

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

১৩ জুলাই ২০২০, সোমবার, ৮:১৩ পূর্বাহ্ন

গাইবান্ধায় ৩০ গ্রাম প্লাবিত
সিদ্দিক আলম দয়াল, গাইবান্ধা থেকে: চারদিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, তিস্তা ও করতোয়া সব ক’টি নদীর পানি দ্রুত আবারো বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ২৭ সে.মি. এবং তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে ১ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঘাঘট, কাটাখালি, বাঙালি ও করোতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় নদ-নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পাবে এবং জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হবে বলে জানানো হয়েছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি দ্বিতীয় দফায় আবার অবনতি হয়েছে। সাঘাটা, ফুলছড়ি, সুন্দরগঞ্জ ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের বসতবাড়ি আবারো পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে এবং ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া বাড়িঘর ছেড়ে গবাদিপশু নিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। আকস্মিক বন্যার তীব্র স্রোতে গাইবান্ধা শহর রক্ষা বাঁধসহ ফুলছড়ি ও সাঘাটা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।

জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমা অতিক্রমের ফলে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত নিম্নাঞ্চল ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া, খাটিয়ামারী, ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা ও যমুনা নদীবেষ্টিত সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, পালপাড়া, চিনিরপটল, চকপাড়া, পবনতাইড়, থৈকরপাড়া, বাশহাটা, মুন্সিরহাট, গোবিন্দি, নলছিয়াসহ বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিপুর, কাপাসিয়া, তারাপুর, বেলকা, হরিপুর ও শ্রীপুর গ্রামে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।  জেলার সুন্দরগঞ্জ সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ফজলুপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জালাল বলেন, পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বন্যা আতঙ্ক বেড়েছে। চরের মানুষ সব সময় নৌ ডাকাতের আতঙ্কে ভুগছে। তিনি পুলিশের নৌ টহল জোরদারের দাবি জানান।

তাহিরপুরে ত্রাণের জন্য আকুতি
এম.এ রাজ্জাক, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বন্যার পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। গত ৪ দিন থেকে অতি বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়ে হাওর পাড়ের লোকজন এখন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ত্রাণের জন্য হাহাকার করছেন হাওর পাড়ের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, বন্যার পরিস্থিতির মধ্যে উপজেলা প্রশাসন থেকে মাঝেমধ্যে শুকনো খাবার দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। আর উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে, পর্যায়ক্রমে তারা হাওর পাড়ের গ্রামের লোকজনের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় তাহিরপুরে ২৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যাদুকাটা নদীর পানি বিপদসীমার ১২৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলার যাদুকাটা, রক্তি ও পাটলাই নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বন্যার পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৩১টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৯৮টি পরিবারের ৩৯২ জন নারী-পুরুষ আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ১৬ হাজার ২৭০টি। উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ও অসহায়দের জন্য প্রথম দফায় ৭ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং এর পাশাপশি শুকনো খাবার হাওর এলাকার বিভিন্ন গ্রামে বিতরণ করা হচ্ছে। রোববার সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বাজার, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট ও প্রতিটি গ্রামের বসতঘরে পানি প্রবেশ করে মারাত্মক দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। হাওরের নিচু এলাকার মানুষ গরু, ছাগল, হাস মুরগি, ধান চাল নিয়ে উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিচ্ছেন। উপজেলা সদরের সঙ্গে আন্তঃসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। গ্রামের মানুষ ছোট ছোট নৌকা অথবা কলার ভোড়া বাজারের ভিতরে নিয়ে এসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করছেন। যাদুকাটা নদী তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রামের বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে, যেকোনো সময় নদী ভাঙনের কবলে ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় গ্রামবাসী। এছাড়া উপজেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভিতরে পানি প্রবেশ করায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ জানান, শনিবার ও রোববার উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নে জরুরি ভিত্তিতে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শুকনো খাবার সরবরাহ করেছেন। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান জানান, আগামী ২/১ দিন তাহিরপুরে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। যদি ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে তাহলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হবে বলেও জানান তিনি।

ছাতকে ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : ছাতকে বন্যা পরিস্থিতির ফের অবনতি ঘটেছে। প্রায় দু’সপ্তাহর ব্যবধানে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আবারো প্লাবিত হয়েছে গোটা উপজেলা। পানিবন্দি হয়ে উপজেলার ৪ লক্ষাধিক মানুষ। শহরের প্রধান সড়কসহ অলিগলি বানের পানি প্রবেশ করেছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও মৎস্য খামার। বহু কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি উঠে গেছে। উপজেলা পরিষদ ও পৌর কার্যালয়ের আঙিনায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বন্যার পানি প্রবেশ করায় শহরের অধিকাংশ দোকান ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠািন বন্ধ রয়েছে। শহরের ওপর দিয়ে চলাচল করছে ছোট ছোট নৌকা। সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারী বর্ষণের কারণে পৌর শহরসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নই বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ইসলামপুর, নোয়ারাই, কালারুকা ইউনিয়ন ও ছাতক পৌরসভার প্রায় সব এলাকাই প্লাবিত। বন্যাকবলিত মানুষ এখন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ছাতক-গোন্দিগঞ্জ-সিলেট, ছাতক-সুনামগঞ্জ, ছাতক-জাউয়া, ছাতক-দোয়ারা সড়কের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। শনিবার রাত থেকে উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরসহ দেশের সকল অঞ্চলের সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এখানে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে প্রায় ১৪০ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে সুরমা নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার প্রায় ১৭০ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চেলা নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ১৮০ সেন্টিমিটার এবং পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ১৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর বিভিন্ন ঘাট দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ফেরি পারাপার চলছে। ইতিমধ্যে উপজেলা সদরের সঙ্গে ১৩টি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যার্তদের জন্য সরকারিভাবে তিনটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা দুর্গত মানুষদের নোয়ারাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাতিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্র আশ্রয় নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ গোলাম কবির তিনটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা কথা বলে জানান, বন্যাদুর্গতদের জন্য আরো ক’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্রের হিসেবে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মেডিকেল টিম গঠনসহ সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

আতঙ্কে চরাঞ্চলবাসী
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: বাড়ছে পানি সঙ্গে আতঙ্ক বাড়ছে চলাঞ্চলবাসীর। করোনার ভয় সঙ্গে বন্যার ভয় তার উপর এখন যোগ হতে শুরু করেছে নৌ-ডাকাতের ভয়। ভয়ে ভিত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন কুড়িগ্রামের চিলমারীর চলাঞ্চলবাসী। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নৌ-ডাকাতের আতঙ্ক আর গরু মহিষ চুরির ভয় বাড়তে শুরু করেছে। দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। দল বেঁধে পাহারা দেয়ায় প্রস্তুতি।

জানা গেছে, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও চলাঞ্চলবাসী গরু, মহিষ, ছাগল পালন করে থাকেন এবং তা বিক্রি করে সংসারের ব্যায় ভার বহন করেন। বাড়িঘর মেরামতসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করেন। এই গরু, মহিষ, ছাগলসহ বিভিন্ন গৃহপালিত পশুপাখি পালন করেই চলে বেশির ভাগ চরাঞ্চলবাসীর সংসার। সারা বছরের তাদের আয়ের উৎস্য। কিন্তু প্রতি বছর ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের আতঙ্ক বাড়ে এইসব গরু, মহিষ নিয়ে কখন হানা দেয় নৌ-ডাকাত দল। আর ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাদের কষ্টের সম্পদ। নিঃস্ব করে দেয় তাদের। প্রতি বছর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা ডাকাত দল নেমে পড়ে ব্রহ্মপুত্র নদে। আর সুযোগে থাকে বিভিন্ন চরে হানা দিয়ে চলাঞ্চলবাসীর কষ্টের সম্বল গরু, মহিষ ছিনিয়ে নেয়ার জন্য। বড় চর এলাকার মাহফুজার বলেন প্রতি বছর নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে আমাদেরও ভয় বাড়ে, বাড়ে আতঙ্ক কখন কোন এলাকায় ডাকাতের হানা পড়ে আর কষ্টের সম্পদ গরু, মহিষ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অষ্টমীরচর, চিলমারী, নয়ারহাট ইউনিয়নের বেশকিছু চরাঞ্চলের মানুষের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সারাটি বছর খুব কষ্ট করে আমরা গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া পালন করি এবং উপযুক্ত পশুগুলো কোরবানি ঈদে ভালো দামে বিক্রি করে ভালো লাভ বা মুনাফা অর্জনের জন্য কিন্তু ভয় বাড়ে এইসব পশু নিয়ে যখন ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়তে শুরু করে। কারন পানি বাড়লে ডাকাত দল খুব সহজে কিনারায় নৌকা লাগিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে গরু, ছাগল, মহিষ যাই পায় তা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে নদীবন্দর থানার ওসির সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমরা সব সময় প্রস্তুত আশা করছি এবারে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে না। একই কথা বলেন ঢুষমারা থানার ওসি। পরে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্‌ের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান এ ধরনের কোনো দুর্ঘটনা যেন ঘটতে না পারে সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে।

জগন্নাথপুরে পানিবন্দি ৪০ গ্রামের মানুষ
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের নিম্নাঞ্চলে ফের বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। গত দু’দিনের অব্যাহত ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের ভুরাখালি, দাসনাগাঁও হরিণাকান্দি, গাদিয়ালা, বেরী, পৌর এলাকার যাত্রাপাশা, শেরপুর, পশ্চিম ভবানীপুর, কলকলিয়া ইউনিয়নের শ্রীধরপাশা, জগদ্বীশপুর, কামারখাল, গলাখাই, নোয়াগাঁও, কান্দারগাঁও, পাড়ারগাঁও, নাদামপুর, হিজলা, মজিদপুর, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের রানীনগর, বাগময়না রৌয়াইল গ্রামসহ কমপক্ষে ৪০টি গ্রামের লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে বন্যায় গৃহহীন হয়ে পড়া শতাধিক পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে এবং আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যায় তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। গত সোমবার কলকলিয়া ইউনিয়নে বন্যাদুর্গত দুই শতাধিক পরিবারের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে চাল বিতরণ করা হয়েছে বলে কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাসিম জানিয়েছেন। চেয়ারম্যান আব্দুল হাসিম জানান, সাম্প্রতিককালে বন্যায় ইউনিয়নের ১২শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগ পড়েছিলেন। গত কয়েকদিনের পরিস্থিতি উন্নতি হলেও দ্বিতীয় দফায় বন্যায় ৮শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এরমধ্যে ৩৫টি পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। গতকাল দুই শতাধিক দুর্গত পরিবারের মধ্যে চাল বিতরণ করেছি আমরা। রানীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম রানা জানান, বন্যায় ইউনিয়নের চার গ্রামের ৬ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

এরমধ্যে চার শতাধিক বসতঘরে পানি উঠেছে।
দাসনাগাঁও গ্রামের ইউপি সদস্য রনধীর কান্ত দাস নান্টু বলেন, বন্যায় গৃহহীন হয়ে পড়েছেন ৫০টি পরিবার। তাদের উঁচু এলাকায় আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুই দফা বন্যায় দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ। জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজুল আলম মাসুম জানান, বন্যা পরিস্থিত আমরা সর্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দুর্গতের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status